মেহেদী হাসান সাকিব । ।
নারী-পুরুষ উভয়ের ওপরই আল্লাহ পর্দার বিধান ফরজ করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘মোমিনদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। আর মোমিন নারীদের বলুন তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে এবং তাদের লজ্জা স্থানের হেফাজত করে।’ (সূরা নুর : ৩১)
‘ভালো থেকো আমার ভালোবাসা তোমার প্রেমিকদের নিয়ে…।’ স্ত্রীর পরকীয়ার বিষয়টি ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মোস্তফা মোরশেদ আকাশ আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। নির্মম হলেও এটি আমাদের সমাজ বাস্তবতার দৃশ্যপট। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মহামারি আকার ধারণ করছে পরকীয়া নামক মহাব্যাধি।
পরকীয়ার কারণে অনেক সংসারে জ্বলছে আগুন। সেই আগুনে পুড়ে নিঃশেষ হচ্ছে অনেক ঘর। স্বামীর হাতে খুন হচ্ছে স্ত্রী। স্ত্রীর হাতে খুন হচ্ছে স্বামী। এই ব্যাধির কারণে অতীতে তুলনায় বহুগুণে বেড়ে যাচ্ছে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা।
যেসব কারণে এ ভয়াবহ ব্যাধি ছড়িয়ে পড়ছে মানব সমাজে, তার মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের দূরত্বে অবস্থান, একে অপরকে সময় না দেওয়া, ভারতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসন, তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ ব্যবহার, ধর্মীয় ও নৈতিকতা বিমুখ শিক্ষা ব্যবস্থা, বিবাহের সময় দ্বীনদার পাত্রপাত্রী নির্বাচন না করা ইত্যাদি।
অতীতের তুলনায় আমাদের শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা বাড়লেও পরকীয়ার মতো সামাজিক ব্যাধিগুলো বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুণ। এছাড়া পরকীয়া নামক মহামারি মানব সমাজে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে, পর্দাপ্রথা লঙ্ঘন। আমরা অনেকেই হয়তো ভাবি যে, শুধু নারীরাই পর্দার বিধান পালন করবে।
কিন্তু না, নারী-পুরুষ উভয়ের ওপরই আল্লাহ পর্দার বিধান ফরজ করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘মোমিনদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। আর মোমিন নারীদের বলুন তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে এবং তাদের লজ্জা স্থানের হেফাজত করে।’ (সূরা নুর : ৩১)।
অন্যত্র আল্লাহ বলেন, ‘ব্যভিচারিণী ও ব্যভিচারী তাদের প্রত্যেককে ১০০ বেত্রাঘাত করবে।’ (সূরা নুর : ২)। এই আয়াতদ্বয়ের ব্যাখায় ব্যভিচারের প্রারম্ভিক শাস্তির কথা বলা হয়েছে, যা ইসলামে অস্থায়ীভাবে নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু যখন সূরা নুরের এ আয়াত অবতীর্ণ হলো, তখন নবী (সা.) বললেন ‘আল্লাহ যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সে অনুযায়ী ব্যভিচারী পুরুষ ও নারীর স্থায়ী শাস্তি নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তা তোমরা আমার কাছ থেকে শিখে নাও। আর তা হলো, অবিবাহিত পুরুষ ও নারীর জন্য ১০০ বেত্রাঘাত ও বিবাহিত পুরুষের জন্য পাথর ছুড়ে মেরে ফেলা।’ (মুসলিম : দ-বিধি অধ্যায়)।
পরকীয়া রোধে আল্লাহর এ আইন বাস্তবায়ন সময়ের দাবি। যতক্ষণ না সমাজ-রাষ্ট্রে এটি পরিপূর্ণরূপে বাস্তবায়ন সম্ভব, ততক্ষণ পর্যন্ত এ মহাবিষ থেকে জাতিকে মুক্ত করা যাবে না।