মুফতি খাইরুল ইসলাম
শরীয়তের উদ্দেশ্য হল স্বামী-স্ত্রী যেন সুখী দাম্পত্য জীবন যাপন করে। যেহেতু নারী-পুরুষের বৈবাহিক সম্পর্কের উপর গোটা মানবজাতির অস্তিত্ব নির্ভরশীল, তাই সম্ভাব্য যে কোনো উপায়ে এমনকি প্রয়োজনে ব্যক্তিস্বার্থ বিসর্জন দিয়ে হলেও ইসলাম স্বামী স্ত্রীর দাম্পত্য সম্পর্ক ও পারিবারিক বন্ধন রক্ষা করতে উৎসাহ দিয়েছে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কথার কারণে এ বন্ধন ছিন্ন হওয়া ইসলামে কখনো কাম্য নয়। তবে কখনো যদি পরিস্থিতি প্রতিকূল হয়ে পড়ে এবং স্বামী-স্ত্রীর পক্ষে মহান আল্লাহ তা’য়ালার প্রদত্ত সীমার মধ্যে থেকে বিবাহের সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে এবং বিবাহ বহাল রাখার কোনো উপায় না থাকে। তখন স্বামীর প্রতি আল্লাহর নির্দেশ হল যে ‘‘সুন্দরভাবে ছেড়ে দেওয়ার মাধ্যমে’’ বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করে আলাদা হয়ে যাবে। তখন বাস্তবতার অনিবার্য প্রয়োজনে ইসলাম বিবাহ বিচ্ছেদ তথা তালাকের অনুমোদন দিয়েছে। সুতরাং তালাকের বিধান প্রণয়নের মাধ্যমে ইসলাম কারো উপর জুলুম করেনি বরং মানবিক অধিকার সুনিশ্চিত করেছে।
ইসলাম কেবল স্বামীকে তালাকের অধিকার দিয়েছে যাতে তালাক কম সংঘটিত হয়। আর এর পেছনে অবশ্যই রয়েছে হিকমত বা গূঢ়রহস্য, তা মানুষের বোধগম্য নাও হতে পারে। রাসূলুল্লাহ বলেছেন, ‘নারীজাতি সৃষ্টিগতভাবে দুর্বল মেধা সম্পন্ন’। এছাড়া আবেগ তাড়িত হওয়ায় সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারী স্বভাবগত দুর্বল। তাই ঝুঁকিপূর্ণ কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার ভার তার উপর ছেড়ে না দেয়াই যুক্তিযুক্ত। আল্লামা শামী রহ. বলেন “দ্বীন ও বিবেক বুদ্ধির অসম্পূর্ণতা ও কুপ্রবৃত্তির আধিক্যের কারণে স্ত্রীকে তালাক দেয়ার ক্ষমতা অর্পণ না করে স্বামীর হাতে অর্পণ করা শ্রেয় ও অধিক যুক্তিযুক্ত।’’ [ফাতাওয়ায়ে শামীঃ ৪/৪২৯ ]
তবে শরী’আত তালাকের অধিকার স্বামীকে প্রদান করলেও স্ত্রীর উপর জুলুম করেনি, বরং তার আত্মরক্ষার ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করেছে। যেমনঃ-
প্রথমত বিবাহের আকদের সময় তাকে স্বামী থেকে শর্ত করে তালাক গ্রহণের অধিকার দিয়েছে। শরী’আতের পরিভাষায় যাকে ‘তাফয়ীযে তালাক’ বলে।
দ্বিতীয়ত বিবাহের পরে অর্থের বিনিময়ে স্বামী থেকে তালাক গ্রহণের সুযোগ দিয়েছে। শরী’আতের পরিভাষায় যাকে ‘খোলা তালাক’ বলে।
তৃতীয়ত স্বামী যদি তালাকের অধিকার না দিয়ে থাকে অথবা ইসলামসম্মত যৌক্তিক কারনে তালাক চাওয়ার পরেও কোনক্রমেই তালাক না দেয় সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের কোন কেন্দ্রীয় দারুল ইফতায় গিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে হবে।
তারা যদি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সামগ্রিক বিবেচনায় বিচ্ছেদের আদেশ দেন শুধুমাত্র তাহলেই আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচ্ছেদ ঘটানো যাবে। যদি মুফতীদের বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্ত ছাড়া আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়া হয় তাহলে অবস্থাভেদে তা হারাম ও শরীয়তের দৃষ্টিতে অকার্যকর হতে পারে। আল্লাহ না করুন, কারো ক্ষেত্রে যদি এমন হয় (অর্থাৎ শরীয়তের দৃষ্টিতে তালাক না হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ অ|ইনে বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে) তাহলে ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে পরবর্তী বিবাহ শুদ্ধ হবেনা (কারন সে এখনো আগের স্বামীর স্ত্রী) এবং বিবাহ করলেও তা ব্য|ভিচ|র বলে গন্য হবে। [বিন্নুরি ওয়েবসাইট, ফাতোয়া ১৪৪১০৬২০০৩৩০]
কাবিননামায় ‘তাফয়ীযে তালাক’প্রসঙ্গ—
স্বামীর প্রদত্ত অধিকার বলে স্ত্রী নিজের উপর তালাক গ্রহণ করতে পারে। স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে এ অধিকার প্রদান করাকে শরয়ী পরিভাষায় ‘তাফয়ীযে তালাক’ বলে। বিবাহে উভয় পক্ষ পারস্পরিক সম্মতিক্রমে শর্তসাপেক্ষে বা বিনাশর্তে উক্ত চুক্তিনামা লিপিবন্ধ করে রাখতে পারে। আমাদের দেশে সরকারীভাবে মুসলিম পারিবারিক বৈবাহিক হিসাব সংরক্ষণের স্বার্থে কাবিননামার প্রবর্তন করা হয়েছে, যা শরীয়ত পরিপন্থী নয়। তবে এর ব্যবহার পদ্ধতি সহীহ হতে হবে। আমাদের দেশে প্রচলিত পদ্ধতি অনুযায়ী কাবিননামায় তাফয়ীযে তালাকের তিনটি পদ্ধতি হতে পারে।
১.বিবাহের পূর্বে কাবিননামা লেখানো। এ পদ্ধতি গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য শর্ত হলো, বিবাহের সাথে সমন্ধ করা। যেমন বলা ‘আমি অমুকের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর কাবিননামায় প্রদত্ত কোনো শর্তের খেলাফ করলে, যে কোনো সময় সে নিজের উপর তালাক গ্রহণ করে বৈবাহিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করতে পারবে। যদি বিবাহের সাথে সম্বন্ধ না করা হয়, তাহলে উক্ত কাবিননামা কোনো কাজে আসবে না ।
আল্লামা আলাউদ্দীন হাসকাফি রহ. বলেন ‘‘তালাক সহীহ হওয়ার শর্ত হলো মালিকানা থাকা। যেমন স্বামী স্ত্রীকে বলা, যদি তুমি যাও তাহলে তুমি তালাক। অথবা বিবাহের সাথে সম্বন্ধ করা যেমন বলা আমি যদি তোমাকে বিবাহ করি তাহলে তুমি তালাক।’’ [দুররুল মুখতার ৪/৫৯৩]
অতএব যদি কোনো বেগানা মহিলাকে বিবাহের সাথে সম্বন্ধ না করে বলে, যদি যায়েদের সাথে দেখা করো- তাহলে তুমি তালাক। তাহলে উক্তিটি বাতিল বলে গণ্য হবে। [আহসানুল ফাতাওয়া ৫/১৭৮, আল হিলাতুন নাজেযাহ-৩৮]
২. বিবাহের সময় মুখে বলে দেয়া। তবে এক্ষেত্রে নিয়ম হলো- যদি বিবাহের প্রস্তাব প্রথমে মেয়ের পক্ষ থেকে হয় এবং বিবাহের জন্য তাফবীযের শর্ত দেয় আর স্বামী মেনে নেয়, তখন উল্লিখিত ‘তাফবীযের’ শর্ত পাওয়া গেলে স্ত্রীর নিজের উপর তালাক গ্রহণ করে বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষমতা থাকবে। আর যদি স্বামীর পক্ষ থেকে প্রথমে প্রস্তাব হয় এবং মেয়েপক্ষ ‘তাফবীযে তালাকের’ শর্তের সাথে কবুল করে, তাহলে বিবাহ সঠিক হয়ে গেলেও শর্ত বাতিল বলে গণ্য হবে। তাই সেক্ষেত্রে স্ত্রীর জন্য তালাক গ্রহণের অধিকার থাকবে না।
আল্লামা শামী রহ. বলেছেন,“তালাক গ্রহণ করার ক্ষমতা স্ত্রীর কাছে থাকার শর্তে বিবাহ করলে তা সহীহ হয়ে যাবে। (এটা সেক্ষেত্রে) যখন স্ত্রী প্রথমে বলবে ‘আমি তোমার সাথে এ শর্তে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলাম যে, যখন ইচ্ছা আমি নিজের উপর তালাক গ্রহণ করতে পারবো।’ অতঃপর স্বামী বললো, আমি কবুল করলাম। তাহলে তালাকের ক্ষমতা অর্জিত হবে। আর যদি প্রথমে স্বামী বিবাহের প্রস্তাব দেয় আর স্ত্রী তালাক গ্রহণের শর্ত দিয়ে তা কবুল করে, তাহলে তালাকের ক্ষমতা অর্জিত হবে না।’’ ফাতাওয়ায়ে শামী ৪/৫৭৩, আহসানুল ফাতাওয়া ৫/১৭৮]
৩.বিবাহের পর কাবিননামা লেখানো। এক্ষেত্রে উভয় পক্ষের সম্মতিতে গৃহীত শর্ত পাওয়া গেলে স্ত্রীর জন্য নিজের উপর তালাক গ্রহণের ক্ষমতা থাকবে। তবে এক্ষেত্রে তালাক গ্রহনের সময় তাকে বলতে হবে ‘আমি নিজের উপরে তাফয়ীযে তালাক গ্রহন করলাম। (তালাক গ্রহনের অধিকার পাওয়া অবস্থায়) সে যদি এই কথা না বলে স্বামীকে হাজারবারও বলে যে, ‘তোমাকে/আপনাকে তালাক দিলাম’ তাহলে তালাক হবেনা। বরং বৈবাহিক সম্পর্ক পূর্বের ন্যায় বহাল থাকবে। [হাটহাজারী ফতোয়া বিভাগ থেকে প্রকাশিত দারসুল ফিকহ গ্রন্থ ১/২৭১, আল হিলাতুন নাজেযাহ ৪০-৪২]
বর্তমানে ‘প্রচলিত নিকাহনামায়’ স্বাক্ষরের বিধান—
এ ব্যাপারে আমাদের প্রথমেই জেনে রাখা দরকার যে, স্ত্রীকে তালাকের অধিকার দেওয়া স্বামীর ইচ্ছার উপর নির্ভর করে। স্বামী চাইলে তালাকের অধিকার স্ত্রীকে দিতে পারে আবার চাইলে নাও দিতে পারে। শরীয়তের পক্ষ্য থেকে অধিকার দেওয়ার ব্যাপারে স্বামীকে উৎসাহও দেওয়া হয়নি আবার নিষেধও করা হয়নি। তবে স্বামী যদি কোনো কারণে স্ত্রীকে তালাকের অধিকার দিয়ে দেয় তাহলে স্ত্রী তালাকের অধিকারী হয়ে যাবে।
আর স্বামী যদি তালাকের অধিকার দিতে না চান কিন্তু পারিবারিক চাপের কারণে কখনো তাকে তালাকের অধিকার দিতে হয়, তাহলে ‘এক তালাকে রজয়ীর’ অধিকার লিখে দিবে আরো কতিপয় শর্তসহ যেমন ‘যদি স্বামী কর্তৃক স্ত্রীর উপর শারিরীক বা মানসিক নির্যাতন করা হয় বা স্বামী নিরুদ্দেশ হয়ে যায়, কিংবা স্ত্রীর ভরণপোষণ না দেয়, এবং এ বিষয়টি স্বামী পক্ষের তিনজন মুরুব্বী এবং স্ত্রী পক্ষের তিনজন মুরুব্বী সত্যায়ন করে, তাহলে স্ত্রী নিজের উপর এক তালাক পতিত করার অধিকার পাবে।’এরকমভাবে লিখে স্ত্রীকে এক তালাকের অধিকার প্রদান করবে। তিন তালাক কখনোই নয়। [বিন্নুরি ফতোয়া 144012200506]
সুতারাং কেউ যদি তার স্ত্রীকে আকদের সময় এভাবে অধিকার দেয় এবং প্রচলিত নিকাহনামায় লিখিত শর্তগুলো পরবর্তীতে বাস্তবে পাওয়া যায় তাহলে স্ত্রী নিজের উপর তালাক পতিত করার ক্ষমতা রাখবে। তবে শর্ত হলো, স্বামী সে সকল শর্ত মেনে নিয়ে নিকাহনামা পড়ে বা শুনে স্বাক্ষর করতে হবে। অনুরূপভাবে নিকাহনামার শর্তগুলো মেনে নিয়ে স্বাক্ষর করলেও তা প্রযোজ্য হয়ে যাবে, শর্তগুলো পড়ুক বা না পড়ুক।
• যদি স্বামী ‘কাবিননামা’ পূরণ করার পূর্বেই স্বাক্ষর করে এবং কাজী সাহেব শর্তগুলো লিখে দেয়, তাহলেও স্বামী শর্ত মেনে নিয়েছে বলে সাব্যস্ত হবে। কেননা বর্তমান সমাজের প্রচলন অনুযায়ী নিকাহ রেজিস্টারদের নিষেধ না করা হলে তারা ১৮ নং ধারায় স্ত্রীকে তালাক গ্রহণের ক্ষমতা দেয়ার কথা লিখে দিয়ে থাকে। তাই উক্ত সময়ে স্বামী নিষেধ না করে কাবিননামায় ঘরগুলো খালি রেখে দস্তখত করলে সাব্যস্ত হবে যে, সে প্রচলন অনুযায়ী তালাক গ্রহণের ক্ষমতা প্রদান করেছে।
আল্লামা শামী রহ. বলেন, “আর যদি স্বামী লেখককে বলে তুমি আমার স্ত্রী ‘তালাক’ কথাটি লেখো, তা তালাকের স্বীকারোক্তি বলে গণ্য হবে। যদিও সে নিজে তালাকনামা না লিখে। আর যদি লেখকের মাধ্যমে তার স্ত্রীর তালাকনামা লেখায় বা তালাকনামা লেখার পর স্বামীর সামনে পড়ে এবং সে তা গ্রহণান্তে সিল-স্বাক্ষর করত তাতে ঠিকানা লিখে স্ত্রীর কাছে পাঠায় তাহলে তা স্ত্রীর নিকটে পৌঁছামাত্র সে তালাকপ্রাপ্তা বলে গণ্য হবে, যদি স্বামী উক্ত তালাকনামাকে তার পক্ষ থেকে প্রেরিত বলে স্বীকার করে।
[ফাতাওয়ায়ে শামী ৪/৪৫৬,ফাতাওয়ায়ে কাসেমিয়া ১৬/১৮৫, ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া ৯/৩২৫,আল মুহিতুল বুরহানী ৩/২৩৯ ফাতাওয়ায়ে আলমগীরি ১/৩৭৯, হাটহাজারী ফতোয়া বিভাগ থেকে প্রকাশিত দরসুল ফিকহ গ্রন্থ ১/২৭১ থেকে]
বর্তমানে সরকারি কাবিনের ১৮ নং কলামে তাফবীজে তালাকের কথা উল্লেখ থাকাবস্থায় বিবাহের পর স্বামী জেনে বা না জেনে উভয় অবস্থাতে দস্তখত করে থাকলে কাবিননামায় উল্লিখিত শর্তসাপেক্ষে স্ত্রী নিজ নফসের ওপর তালাক প্রয়োগের অধিকারিণী হবে। তবে যদি কাবিননামার শুধু ১৮ নং ধারা খালি থাকাবস্থায় স্বাক্ষর করে থাকে তাহলে স্ত্রী তালাক গ্রহণের ক্ষমতা পাবে না। [ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত ৭/২৪৩, আদ-দুররুল মুখতার ৩/৩১৫]
এরকমভাবে যদি স্বামী কাবিনে স্বাক্ষর করার পর ১৮ নং ধারা তার অজান্তে পূরণ করা হয় অথবা উক্ত কলামের কোনো শর্ত ভঙ্গ না হয় তাহলে স্ত্রী কোনো প্রকার তালাকের অধিকারী হবে না এবং তালাক গ্রহণ করাও শুদ্ধ হবে না। [ফাতহুল কাদীর ৩/৪২৭, বাহরুর রায়েক ৩/৫৫২]
স্বামীপ্রদত্ত ক্ষমতাবলে স্ত্রী নিজ নফসের ওপর তালাক গ্রহণের অধিকার রাখে, তবে কত তালাক পতিত হবে, তা বিবেচিত হবে তালাকের ক্ষমতা প্রদানকালে স্বামীর নিয়্যাতের ওপর। যদি ক্ষমতা প্রদানকালে স্বামী তিন তালাকের নিয়্যাত করে থাকে, অথবা লিখে দিয়ে থাকে তবে তাই পতিত হবে। এ অবস্থায় পুনরায় বিবাহ করা যাবে না। আর যদি এক তালাকের নিয়্যাত করে থাকে বা লিখে দিয়ে থাকে, তবে এক তালাকে রজঈ পতিত হবে। রাজআতের সময় শেষ হওয়ার আগে স্ত্রী হিসেবে ফিরিয়ে নেওয়াই যথেষ্ট, নতুন বিবাহ লাগবে না। [ফাতহুল কাদির ৩/৪২৭]
আর যদি কোনো সংখ্যা উল্লেখ না করে তালাকের ক্ষমতা অর্পণ করে তাহলে স্ত্রী এক তালাকে রজঈর মালিক হবে। আর সংখ্যা উল্লেখ করে থাকলে সে অনুযায়ী তালাকের মালিক হবে। [ফাতাওয়ায়ে আলমগীরি ১/৩৮৯, ফাতাওয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ ১০/৩৮]
যদি স্বামী নিজ স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা অর্পণ করার সময় এমন শব্দ উচ্ছারণ করে বা লিখে থাকে, যা দ্বারা সব সময়ই তালাক দেওয়ার ক্ষমতা বুঝা যায়, তাহলে স্ত্রী যেকোনো সময় তালাকের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে অন্যথায় মজলিশ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে। [আদ-দুররুল মুখতার ৩/৩১৫]
স্ত্রীকে শর্ত সাপেক্ষে তালাকের ক্ষমতা দেওয়ার পর তা ফিরিয়ে নেওয়ার অধিকার স্বামীর থাকে না বিধায় স্ত্রী শর্ত পাওয়ার পর নিজ নফসের ওপর তালাক গ্রহণ করলে স্বামী তা মেনে না নিলে বা তালাকের ইচ্ছা না করলেও তালাক হয়ে যাবে। [ফাতাওয়ায়ে আলমগীরি ১/৩৮৭, ফাতাওয়ায়ে কাসেমিয়া ৫/২২৮]
তবে এখনো যারা বিয়ে করেননি তাদের ক্ষেত্রে পরামর্শ হল বিয়ের আগে অবশ্যই নির্ভরযোগ্য কোনো মুফতি সাহেবের সাথে ‘কাবিননামা’র ব্যাপারে জেনে নিবেন। আর বিবাহিত জীবনে কেউ যদি এই ‘তাফবীযে তালাকের’ সম্মুখীন হয়ে থাকেন তাহলে আপনারা সরাসরি নিকটস্থ কেন্দ্রীয় ফতোয়া বিভাগে স্বামী-স্ত্রী উভয়ে কাবিননামা এবং তালাকনামা সহ যোগাযোগ করে ফতোয়া জেনে নিবেন। জাযাকুমুল্লাহ