স্মৃতি রাখতে মোবাইলে ছবি তুলে রাখার হুকুম কী?

সুওয়াল

আমার প্রশ্ন হল, স্মৃতি রক্ষার্থে মোবাইলের ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলা (জীব, জড় বস্তুর) জায়েজ হবে নাকি?

জাওয়াব

জড়বস্তুর ছবি তোলা ও আঁকায় শরয়ী কোন বিধিনিষেধ নেই।

তবে প্রাণীর ছবি আঁকা ও তোলা কোন ভাল কাজ নয়। এতে কোন সন্দেহ নেই। কিছু ছবি আছে, যা পরিষ্কার হারাম ও নাজায়েজ। যেমন ছবি আঁকা, যাদের দেখা জায়েজ নয় তাদের ছবি তোলা।

কিন্তু বর্তমান ডিজিটাল ক্যামেরায় ছবি তোলা, কম্পিউটার ও মোবাইল মেমোরিতে সংরক্ষিত ছবির ব্যাপারে কিছুটা মতভেদ আছে। অনেক বিশেষজ্ঞের মতেই এটি হারাম। তবে কিছু কিছু বিশেষজ্ঞের মতে তা জায়েজ।

কিন্তু এটিও যে অনুত্তম এতে কারো কোন দ্বিমত নেই।

স্মৃতি রাখা এটা কোন জরুরী বিষয় নয়। এটি কেবলই অপ্রয়োজনীয় একটি আবেগ।

তা’ই অহেতুক ডিজিটাল ক্যামেরায়ও ছবি তোলা থেকে বিরত থাকা উচিত।

عن سعيد بن أبي الحسن قال : كنت عند ابن عباس رضي الله عنهما إذ أتاه رجل فقال يا أبا عباس إني إنسان إنما معيشتي من صنعة يدي وإني أصنع هذه التصاوير . فقال ابن عباس لا أحدثك إلا ما سمعت رسول الله صلى الله عليه و سلم يقول سمعته يقول ( من صور صورة فإن الله معذبه حتى ينفخ فيها الروح وليس بنافخ فيها أبدا ) . فربا الرجل ربوة شديدة واصفر وجهه فقال ويحك إن أبيت إلا أن تصنع فعليك بهذا الشجر كل شيء ليس فيه روح

হযরত সাঈদ বিন আবিল হাসান রহঃ বলেন, আমি একদা হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রা: এর কাছে ছিলাম। তখন তাঁর কাছে এক ব্যক্তি এলো। লোকটি এসে বলল-‘হে ইবনে আব্বাস! আমার উপার্জনের নির্ভরতা আমার হাতের সৃষ্টির উপর, আমি ছবি আঁকি’। হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রা: বললেন-‘আমি তোমার কাছে সেই কথা বর্ণনা করছি, যা আমি রাসূল সা: কে বলতে শুনেছি, আমি রাসূল সা: কে এটা বলতে শুনেছি যে, যেই ব্যক্তি ছবি বানায়, তাকে আল্লাহ তায়ালা শাস্তি দিতে থাকবেন যতক্ষণ না সে উক্ত ছবিতে প্রাণ দিতে পারে, আর সেই ব্যক্তি কোনদিন তাতে প্রাণ দিতে পারবে না’। একথা শুনে লোকটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। আর তার চেহারা পাংশু হয়ে গেল। তখন হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রা: বললেন-“আরে ভাই! যদি তুমি বানাতেই চাও, তাহলে গাছের ছবি আঁকো। আর প্রত্যেক ঐ বস্তুর ছবি আঁকো, যাতে প্রাণ নেই। {তাহাবী শরীফ, হাদীস নং-৬৪৩৪, সহীহ বুখারী, হাদীস নং-২১১২, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদীস নং-২৫৭৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৩৩৯৪, মু’জামে ইবনে আসাকীর, হাদীস নং-১১, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৫৮৪৮}

عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِى الْحَسَنِ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ فَقَالَ إِنِّى رَجُلٌ أُصَوِّرُ هَذِهِ الصُّوَرَ فَأَفْتِنِى فِيهَا. فَقَالَ لَهُ ادْنُ مِنِّى. فَدَنَا مِنْهُ ثُمَّ قَالَ ادْنُ مِنِّى. فَدَنَا حَتَّى وَضَعَ يَدَهُ عَلَى رَأْسِهِ قَالَ أُنَبِّئُكَ بِمَا سَمِعْتُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- يَقُولُ « كُلُّ مُصَوِّرٍ فِى النَّارِ يَجْعَلُ لَهُ بِكُلِّ صُورَةٍ صَوَّرَهَا نَفْسًا فَتُعَذِّبُهُ فِى جَهَنَّمَ ». وَقَالَ إِنْ كُنْتَ لاَ بُدَّ فَاعِلاً فَاصْنَعِ الشَّجَرَ وَمَا لاَ نَفْسَ لَهُ.

হযরত সাঈদ বিন আবুল হাসান বলেন, এক ব্যক্তি হযরত ইবনে আব্বাস রা: এর কাছে এসে বলল, আমি চিত্রকর। এবং চিত্র অংকন করি। অতএব এ সম্পর্কে আমাকে শরীয়তের বিধান বলে দিন। ইবনে আব্বাস রা: বলেন, আমার কাছে আস। সে ব্যক্তি তাঁর কাছে গেল। তিনি পুনরায় বললেন, আমার কাছে আস। সে ব্যক্তি তার এত কাছে গেল যে, ইবনে আব্বাস রা তাঁর হাত ঐ ব্যক্তির মাথার উপর রাখলেন, এবং বললেন, আমি তোমাকে এ সম্পর্কে এমন একটি হাদীস শোনাচ্ছি, যা আমি রাসূল সা: এর কাছে শুনেছি। আমি রাসূল সা: কে বলতে শুনেছি যে, “সকল চিত্রকরই দোযখে যাবে। আর প্রত্যেক চিত্রের পরিবর্তে জীবিত এক ব্যক্তিকে বানানো হবে, যা দোযখে তাকে শাস্তি দেবে”। ইবনে আব্বাস রা: বলেন, যদি তোমাকে এরূপ করতেই হয়, তাহলে গাছ-পালা বা এমন বস্তুর ছবি তৈরি কর যা প্রাণী নয়। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫৬৬২}

فى تفسير آيات الأحكام-فإطلاق الإباحة في التصوير الفوتوغرافي ، وأنه ليس بتصوير وإنما هو حبس للظلّ ، مما لا ينبغي أن يقال ، بل يقتصر فيه على حد الضرورة ، (تفسير آيات الأحكام-2/300

وفى فتاوى الشيخ عبد الرزاق عفيفي-اما التصوير الشمسى لذوات الأرواح فهو محرم وممنوع لان فيه مضاهان لخلق الله ولان فاعله من اظلم الناس ولانه يمنع من دخول ملائكة الرحمة والبركة الى المكان الذي تكون به هذه الصور ولان تصوير ذوات الأرواح من المعظمين كالأمراء والعلماء ونحوهم هو ذريعة وسبب ووسيلة للشرك (فتاوى الشيخ عبد الرزاق عقيفى-1/305

والله اعلم بالصواب
ফতওয়া প্রদান
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *