পূর্ব প্রকাশিতের পর
মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া
১১. ভিওআইপি সংযোগ নিয়ে বিদেশে কম খরচে কথা বলা
প্রশ্ন :
এক ধরনের মেশিন দেশীয় টিএন্ডটি এবং মোবাইলের সাথে সংযোগ করলে সরাসরি বিদেশে অনেক কম খরচে কথা বলা যায়। কিন্তু এটি সরকার অনুমোদিত নয়। কেউ কেউ অবৈধভাবে এর ব্যবহার করে থাকে। এ ব্যবসা জায়েয কি না? এ ধরনের সুবিধাযুক্ত ফোনের গ্রাহকদের ফোন বা মোবাইল ব্যবহার করার কী হুকুম?
উত্তর :
এ ধরনের লাইনে কথা বলা বৈধ হবে না। কারণ, এতে সরকারীভাবে নিষিদ্ধ লাইন ব্যবহার করা হয়। সরকারের আদায়যোগ্য ফি অনাদায় থাকে এবং সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ব্যবসায় সহায়তাও করা হয়। এছাড়া এতে অনেকগুলো টিএন্ডটি চোরা লাইনও থাকে। এমনটি হলে তো এর অবৈধতা আরো প্রকট।
ভিওআইপি ব্যবসায়ীরা এতে কোনো চোরা লাইন ব্যবহার করে থাকলে এ বাবদ উপার্জিত অর্থ হালাল হবে না। তবে চোরা লাইন ব্যবহার না করলে সরকারী নিয়ম ভঙ্গ করে এ কারবার করার জন্য গুনাহ হবে। কিন্তু এ কারণে কারবার থেকে উপার্জিত অর্থ অবৈধ গণ্য হবে না।
১২. মিউজিক, গানের কলির রিং টোন
প্রশ্ন :
মোবাইলের রিং টোন হিসাবে বিভিন্ন ধরনের মিউজিক বা গানের কলি ইত্যাদি ব্যবহার করার হুকুম কী?
উত্তর :
মিউজিক, বাদ্য ইত্যাদি গানের সাথে শোনা তো কবীরা গুনাহ। গান ছাড়া পৃথকভাবে শোনাও গুনাহ। তাই যেকোনো ধরনের বাদ্য, মিউজিক টোন রিংটোন হিসাবে ব্যবহার করাও গুনাহ। তদ্রূপ গানের কলি বা অংশবিশেষও রিংটোন হিসাবে ব্যবহার করা নাজায়েয। প্রকাশ থাকে যে, মিউজিক বা গান রিংটোন হিসাবে ব্যবহার করলে নিজে শোনার গুনাহ তো আছেই, সাথে সাথে যে স্থানে মোবাইলটি ব্যবহার হচ্ছে তার আশপাশের লোকদেরকে বাদ্য, গান শোনানোর গুনাহও হয়। এছাড়া এমন রিংটোন মসজিদে বেজে উঠলে মসজিদের পবিত্রতা ক্ষুণ্ণ করা হয়। তাই রিংটোন হিসাবে এর ব্যবহার নিতান্তই মন্দকাজ ও গুনাহ। সেজন্যই গান বা মিউজিক ছাড়া অন্যান্য শব্দ রিংটোন হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
-সূরা লোকমান-৬, সহীহ বুখারী ২/৮৩৭, জামে তিরমিযী ১/২৪১; সুনানে ইবনে মাজা ৩০০; আলগিনা ফিল-ইসলাম ৮৭; ফাতহুল কাদীর ৬/৪৮২
১৩. ওয়েলকাম টিউন হিসাবে গানের ব্যবহার
প্রশ্ন :
কারো কাছে ডায়াল করার পর তার মোবাইল বা ফোনে রিং হচ্ছে কিনা এটি বুঝানোর জন্য যে টোন বা শব্দ ব্যবহার করা হয় তাকে ওয়েলকাম টিউন বলে। এখন এই টোনের পরিবর্তে গান ডাউন লোড করা যায়। কেউ ডাউন লোড করলে তাকে যে ব্যক্তি কল করবে সে রিং টোনের পরিবর্তে ঐ গান বা ডাউন লোডকৃত আওয়াজ শুনতে পাবে। এতে ডাউন লোডকারীর প্রত্যেক মাসে ২০/৩০ টাকা করে খরচ হয়। এটি জায়েয কি না?
উত্তর :
ওয়েলকাম টিউনে গান বা মিউজিক ডাউন লোড করলে এই নাম্বারের সাথে যোগাযোগকারী সকলকে বাধ্য হয়ে গান বা মিউজিক শুনতে হবে। এতে অন্যকে গান শোনানো তথা গুনাহের কাজে বাধ্য করার গুনাহ হয়। তাই এটিও নাজায়েয। -সূরা লোকমান ৬, সহীহ বুখারী ২/৮৩৭, ফাতহুল কাদীর ৬/৪৮২, প্রাগুক্ত
১৪. ওয়েলকাম টিউন হিসাবে কুরআনে কারীমের তিলাওয়াতের ব্যবহার
প্রশ্ন :
গানের ব্যবহার যেহেতু নাজায়েয তাই অনেকেই এক্ষেত্রে কুরআনে কারীমের তিলাওয়াত, আযান ইত্যাদি ডাউনলোড করে থাকে। ধারণা করা হয় যে, এতে গুনাহ তো হবেই না, বরং আমার সাথে কথা বলার জন্য অপেক্ষমাণ ব্যক্তি কিছু সময় হলেও কুরআনের তিলাওয়াত শুনছে। বাহ্যত এটাকে ভাল মনে করা হয়। আযানের শব্দ বা জিকির শুনছে। এতে শ্রোতাকে সওয়াবের বিষয় শোনানো হচ্ছে। এ দৃষ্টিতে একে অনেকেই ভাল বলে। জানতে চাই ওয়েলকাম টিউন হিসাবে কুরআন, জিকির, আযানের ব্যবহারের হুকুম কী?
উত্তর :
নিঃসন্দেহে প্রশ্নোক্ত উদ্দেশ্যটি ভালো। রিংটোন, মিউজিক বা গান না শুনিয়ে সেইস্থানে কুরআনের তিলাওয়াত বা জিকির, আযান ইত্যাদি শোনানোর ব্যবস্থা করা অবশ্যই একটি প্রশংসনীয় কাজ। কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে এটি ভাল মনে হলেও এক্ষেত্রে এগুলোর ব্যবহারে একাধিক খারাপ দিক রয়েছে। যার একটিই এ থেকে বিরত থাকার জন্য যথেষ্ট। যেমন-
(১) ওয়েলকাম টিউন-এর ব্যবহার হয় যার কাছে কল করা হয়েছে তার সাথে সংযোগ সৃষ্টি হয়েছে কি না এটি বুঝার জন্যই। কারো কাছে কল করার পর রিংটোন পেলে বুঝা যায় যে, তার মোবাইলে রিং হচ্ছে। কল করার পর বিজিটোন আসলে বুঝা যায় সে এখনও অন্যের সাথে কথা বলছে। আবার ফোন বন্ধ থাকলেও এক ধরনের টোন পাওয়া যায়। মোটকথা কাঙ্ক্ষিত ফোনটিতে সংযোগ লাগার জন্য যে সংকেত-টোন রয়েছে সেইস্থানে কুরআনের তিলাওয়াত, আযান ইত্যাদি ফিট করলে এই তিলাওয়াত ও আযানও ফোনকারীকে প্রথমে ঐ টোনের কাজ দিবে। অর্থাৎ ফোনকারী বুঝবে যে, কাঙ্ক্ষিত ফোনটিতে সংযোগ পেয়েছে, রিং হচ্ছে। আচ্ছা, বলুন তো আল্লাহর মহান কালাম কি এই কাজে ব্যবহার করা উচিত? এই কাজে তিলাওয়াতের ব্যবহার কি অপাত্রে কুরআনের ব্যবহার নয়? আযান যা শরীয়তের একটি মহান নিদর্শন ও জিকির, একে এই কাজে ব্যবহার করা কি সমীচীন?
(২) কাঙ্ক্ষিত নাম্বারে কল করার পর রিংটোন হিসাবে ফোনকারীর কানে কুরআনের তিলাওয়াত ভেসে আসছে, হয়ত রিসিভের অপেক্ষার সাথে সাথে তিলাওয়াতও শুনছে। কিন্তু যার নাম্বারে ফোন করা হয়েছে সে তো তিলাওয়াত শুনতে পাচ্ছে না। বিধায় সে এমন সময় রিসিভ করল যখন তিলাওয়াতের কোন শব্দের মাঝে কিংবা এমন স্থানে রিসিভ করা হল যখন থেমে গেলে আয়াতের অর্থই বদলে যায়। তদ্রূপ আযান ডাউনলোড করলে কেউ যদি ‘লা-ইলাহা’ পর্যন্ত উচ্চারিত হওয়ার পর ফোন রিসিভ করে ফেলে তাহলে অর্থ দাঁড়ায়- ‘কোন মাবুদ নেই।’ ফলে অর্থের বিকৃতি ঘটে। এই সমস্যার কারণেও এস্থানে এগুলোর ব্যবহার করা যাবে না।
(৩) এছাড়া বিভিন্ন ব্যস্ততার মধ্যে থেকে ফোনে কথা বলার সময় কানে তিলাওয়াতের ধ্বনি আসলেও তা মনোযোগ সহকারে শোনা হয় না। ফলে তিলাওয়াত শোনার হক আদায় হয় না। তাই ওয়েলকাম টিউন হিসাবে কুরআন-তিলাওয়াত বা আযান কিংবা যিকিরের ব্যবহার করা যাবে না। এর জন্য স্বাভাবিক রিংটোনই উপযোগী।
-আত-তিবয়ান ফী আদাবি হামালাতিল কুরআন- নববী ৪৬, হককুত্তিলাওয়া-হুসাইনী শাইখ উসমান-৪০১, আলমগীরী ৫/৩১৫, রদ্দুল মুহতার ১/৫১৮, আল মুগনী ৪/৪৮২, আলাতে জাদীদাহ কী শরয়ী আহকাম- ১৭১
১৫. রিংটোন হিসাবে ‘সালাম’-এর ব্যবহার
প্রশ্ন :
অনেকে সালাম ডাউনলোড করে তা রিংটোন হিসাবে ব্যবহার করে এটি জায়েয কিনা?
উত্তর :
হাঁ, এ ক্ষেত্রে সালামের ব্যবহার জায়েয। কারণ, শরীয়তে সালাম এর ব্যবহার দু’ভাবে এসেছে। একটি হল অভিবাদন হিসাবে সালামের ব্যবহার। দ্বিতীয়টি হল অনুমতি প্রার্থনামূলক সালাম। অর্থাৎ কারো ঘরে প্রবেশের অনুমতি চাওয়ার জন্য সালাম দেওয়া। মোবাইলের রিংটোন হিসেবে সালামের ব্যবহার এ প্রকারের সাথে কিছু মিল রয়েছে। রিংটোনের জন্য সালামের ব্যবহার না জায়েয নয়।
১৬. আযান, জিকির বা তিলাওয়াত রিংটোন হিসাবে ব্যবহার
প্রশ্ন :
অনেকে রিংটোন হিসাবে ঘণ্টা, বাজনা ইত্যাদির পরিবর্তে আযান, যিকির ও তিলাওয়াতের ব্যবহারকে পছন্দ করে। জানতে চাই এতে শরীয়তের দৃষ্টিতে কোনো খারাপি আছে কি না?
উত্তর :
তিলাওয়াত, যিকির ও তাসবীহ সবকিছুই অতীব মর্যাদাপূর্ণ বিষয়। আযান আল্লাহ তাআলার বড়ত্ব ও তাসবীহ সম্বলিত কিছু বাক্যের সমষ্টি যা শরীয়তের গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক তথা ‘শিআর’। এগুলোর ব্যবহার একমাত্র আল্লাহ তাআলাকে রাজি-খুশি করার উদ্দেশ্যে শরীয়তের নিয়ম অনুযায়ী হতে হবে। শরীয়তে এগুলোর ব্যবহার-ক্ষেত্র সুনির্ধারিত। মোবাইলের রিংটোন হিসাবে এগুলোর প্রয়োগ অপব্যবহারের অন্তর্ভুক্ত। কারণ, মোবাইলে রিং এসেছে, কেউ কথা বলতে চায় এই খবর দেওয়ার জন্য আল্লাহ তাআলার পবিত্র কালাম ওহী, জিকির ও তাসবীহের ব্যবহার যে এগুলোর অপাত্রে ব্যবহার তা বলাই বাহুল্য।
ক্রেতাকে আকৃষ্ট করার জন্য বিক্রেতার জোরে জোরে সুবহানাল্লাহ বলা, তদ্রূপ প্রহরী জাগ্রত আছে একথা বুঝানোর জন্য জোরে জোরে যিকির করাকেই ফিকহবিদগণ অপব্যবহার হিসাবে আখ্যা দিয়েছেন। তাহলে মোবাইলে কল এসেছে এ খবর দেওয়ার জন্য এগুলোর ব্যবহার যে কেমন হবে তা তো বলার অপেক্ষাই রাখে না। উপরন্তু রিংটোন হিসাবে এগুলোর ব্যবহারে আরো অন্যান্য শরয়ী খারাবী রয়েছে যেমন :
(ক) রিং আসলে কুরআনের তিলাওয়াত বেজে উঠছে, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে ব্যস্ততার দরুন তিলাওয়াতের প্রতি ভ্রূক্ষেপ করারই সুযোগ হয় না। তদ্রূপ কে রিং করেছে তা দেখা ও কল রিসিভ করার ব্যস্ততা তো লেগেই থাকে এ কারণেও তিলাওয়াতের আদব রক্ষা করে শ্রবণ করা হয় না।
(খ) রিং আসলে যেহেতু রিসিভের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে এবং এটিই মূল উদ্দেশ্য থাকে তাই আয়াতের যেকোনো স্থানেই তিলাওয়াত চলতে থাক সে দিকে ভ্রূক্ষেপ না করে রিসিভ করে ফেলে। ফলে অনেক ক্ষেত্রে উচ্চারিত অংশের বিবেচনায় আয়াতের অর্থ বিকৃত হয়ে যায়।
(গ) মোবাইল নিয়ে টয়লেট কিংবা বাথরুমে প্রবেশের পর রিং আসলে অপবিত্র স্থানে আল্লাহ তাআলার পবিত্র কালাম, যিকির ও আযান বেজে উঠবে। এতে এগুলোর পবিত্রতা ক্ষুণ্ণ হয়। মোটকথা অনেক কারণেই তিলাওয়াত, আযান ও জিকিরকে রিংটোন হিসাবে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা জরুরী।
-আততিবয়ান ফী আদাবি হামালাতিল কুরআন-ইমাম নববী ৪৬, হক্কুততিলাওয়া- হুসাইনী শাইখ উসমান ৪০১, ফাতাওয়া আলমগীরী ৫/৩১৫, আলমুগনী ৪/৪৮২, রদ্দুল মুহতার ১/৫১৮, ১/৫৪৬, আলাতে জাদীদা, মুফতী মুহাম্মাদ শফী রহ., আলকাফী ১/৩৭৬, আলআশবাহ ৩৫
রেকর্ড/ডাউনলোড
১৭. মোবাইল মেমোরিতে কুরআন তিলাওয়াত ডাউনলোড করা
প্রশ্ন :
মোবাইল মেমোরি বা মেমোরি কার্ডে কুরআন তিলাওয়াত বা কোন যিকির ডাউনলোড করে রাখা জায়েয কিনা?
উত্তর :
মেমোরি কার্ড বা মোবাইল মেমোরিতে তিলাওয়াত ডাউনলোড বা রেকর্ড করা জায়েয। এতে কোনো অসুবিধা নেই। এর হুকুম অন্যান্য রেকর্ডারের মতই। তবে যখন তিলাওয়াত চালানো হবে তখন খুব মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করতে হবে। অন্য কাজে ব্যস্ত থেকে তিলাওয়াতের রেকর্ড ছেড়ে দেওয়া তিলাওয়াতের আদব পরিপন্থী কাজ।
১৮. কুরআন শরীফের সূরা বা পুরো কুরআন মোবাইলে ডাউনলোড করা
প্রশ্ন :
লিখিত কুরআন শরীফ বা তার অংশবিশেষ ডাউনলোড করে মেমোরিতে সংরক্ষণ করা যায়। আজকাল ইন্টারনেট থেকে অল্প খরচে ‘পকেট কুরআন’ নামে পুরো কুরআন শরীফ মোবাইলে ডাউন লোড করা যায়। তদ্রূপ হাদীস শরীফও ডাউন লোড করা যায়। লিখিত কুরআন ডাউনলোড করা এবং মেমোরিতে সংরক্ষণ করা জায়েয কি না?
উত্তর :
হাঁ, লিখিত পূর্ণ কুরআন বা তার অংশ বিশেষ ডাউনলোড করে মেমোরিতে রেখে দেওয়া জায়েয। তবে কখনো তা স্ক্রিনে আনলে এর অসম্মানী না হয় সেদিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে হবে। মেমোরিতে হেফাযত করা অবস্থায় মোবাইল ধরতে ওযুর প্রয়োজন নেই। তেমনিভাবে স্ক্রিনে থাকা অবস্থায়ও মোবাইল বিনা অযুতে ধরা যাবে।
১৯. মোবাইলের স্ক্রিনে ছবি সেভ করে রাখা
প্রশ্ন :
মোবাইলের স্ক্রিনে পুরুষ বা মহিলার ছবি সেভ করে রাখার হুকুম কী?
উত্তর :
স্ক্রিনে ছবি সেভ করে রাখলে ছবির প্রদর্শনী হয় এবং ছবি খুলে রাখা হয়। যা রহমতের ফিরিশতার আগমন থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণ। এছাড়া শরীয়তে ছবির প্রকাশ ও প্রদর্শন নিষেধ করা হয়েছে। অতএব, স্ক্রিনে মানুষ বা কোন প্রাণীর ছবি সেভ করে রাখা থেকে বিরত থাকা জরুরি।
আর স্ক্রিনের ছবিটি যদি কোনো মহিলার হয় তবে গায়রে মাহরামদের জন্য ছবিটি দেখা এবং অন্যদের দেখানোর ভিন্ন গুনাহ হবে। এতে ছবি প্রদর্শনের গুনাহ ছাড়া পর্দা লঙ্ঘনের গুনাহ হয়। তাই এ থেকে বিরত থাকা আরো বেশী জরুরি।
-সহীহ বুখারী ২/৮৮০; সহীহ মুসলিম ২/২০০; আলমাদখাল ইবনুল হাজ ১/২৭৩; বাদায়েউস সানায়ে ১/৩০৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৫৯; আলবাহরুর রায়েক ৬/১৭২
২০. স্ক্রিনে কুরআনে কারীমের আয়াত, যিকির, বা এগুলোর ক্যালিগ্রাফি সেভ করে রাখা
প্রশ্ন :
মোবাইল স্ক্রিনে কুরআনের আয়াত, জিকির বা আল্লাহ তাআলার নাম সেভ করে রাখা হয়। তদ্রূপ কেউ এগুলোর ক্যালিগ্রাফি সেভ করে রাখে। এটি জায়েয কি না?
উত্তর :
মোবাইল স্ক্রিনে আল্লাহ তাআলার নামের ক্যালিগ্রাফি বা লিখিত আয়াত কিংবা অন্য কোন যিকির ইত্যাদি সেভ করে রাখা ঠিক নয়। কারণ, এভাবে ক্ষেত্র বিশেষে এগুলোর সাথে বেয়াদবি হয়ে যাওয়ার আশংকা থাকে। এছাড়া মোবাইল সাধারণত সম্মানের সাথে ব্যবহার করা হয় না। বরং অধিক ব্যবহারের ফলে যত্রতত্র রাখা হয়। অনেক সময় বসার স্থানে, নিচেও থাকে, চার্জের প্রয়োজনেও নিচে রাখতে হয় ইত্যাদি। সুতরাং স্ক্রিনে দৃশ্যমান অবস্থায় রেখে এর যথাযথ আদব রক্ষা করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই এ ধরনের কোন কিছু স্ক্রিন সেভারে রাখা ঠিক হবে না। -ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫০
———————————–
পর্ব ১ – https://adarshanari.com/article/masael/9457/
পর্ব ২ – https://adarshanari.com/article-series/9461/
পর্ব ৩ – https://adarshanari.com/article-series/9461/