মোবাইল ফোন সম্পর্কিত জরুরী মাসআলা – ১

মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া


মোবাইল ফোন বর্তমান সময়ের একটি নতুন আবিষ্কার। এর কিছু ভালো দিক যেমন আছে তেমনি ক্ষতির দিকও রয়েছে। আর দশটা প্রয়োজনীয় জিনিসের মতো এরও প্রয়োজন মাফিক ব্যবহার আপত্তিকর নয়, কিন্তু এখন যেভাবে তা ব্যবহৃত হচ্ছে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

মোবাইলের প্রয়োজনীয় দিকগুলোর তুলনায় এর যে ব্যাপক আর্থিক ও নৈতিক ক্ষতির দিক অভিজ্ঞতায় এসে গেছে, বিশেষত এলম চর্চায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য এর যে ক্ষতিকর প্রভাব, তার তালিকা মোটেই ছোটো-খাটো নয়। তবে বাস্তবতা এই যে, মোবাইলের ব্যবহার অত্যন্ত ব্যাপক হয়ে গিয়েছে। এ প্রসঙ্গে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নও আসছে। এজন্য এসব প্রশ্ন একত্র করে শরীয়তের দলীল ও নীতিমালার আলোকে তার জওয়াব প্রস্ত্তত করা এবং পাঠকবৃন্দের খেদমতে তা পেশ করা একটি প্রয়োজনীয় বিষয় বলে মনে হয়েছে। এ অনুভূতি থেকেই বর্তমান প্রবন্ধটি তৈরি হল। এ প্রসঙ্গে দু’টি বিষয়ে পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। তা হচ্ছে :

১-  বেশ কিছু মাসায়িলে হাদীস, তাফসীর ও ফিকহের বিভিন্ন গ্রন্থের উদ্ধৃতি সংযুক্ত হয়েছে। এগুলো মূলত কুরআন, হাদীস ও ফিকহে ইসলামীর ওইসব নীতিমালার উদ্ধৃতি, যার আলোকে এই সমাধানগুলো পেশ করা হয়েছে। কেননা, উল্লেখিত প্রাচীন উদ্ধৃতিগুলোতে স্পষ্টভাবে মোবাইল ফোনের উল্লেখ যে থাকবে না তা তো বলাই বাহুল্য।

২- কিছু মাসায়িল এমনও আছে, যেগুলো অনেকের কাছেই স্পষ্ট বলে মনে হবে। তারপরও ওই মাসআলাগুলো এজন্য উল্লেখ করা হয়েছে যে, এসব বিষয়েও বিভিন্ন সময় প্রশ্ন এসেছে। আর সকল বিষয় সবার সমানভাবে জানা থাকবে-এটাও অপরিহার্য নয়।

এই সংক্ষিপ্ত ভূমিকার পর ওই মাসয়িলগুলো বিশেষ কোনো বিন্যাস ছাড়াই পেশ করছি। আলোচনা সহজ করার উদ্দেশ্যে প্রশ্নোত্তরের আঙ্গিকটিই বহাল রাখা হয়েছে।

১. ভিডিও ক্যামেরাযুক্ত মোবাইল ক্রয় বিক্রয়

প্রশ্ন :

‘মোবাইল’ ফোনেরই আধুনিক সংস্করণ। কিন্তু এ আবিষ্কার শুধু কথোপকথন পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখেনি বরং মোবাইলের সাথে আজকাল গচ৩-৪, ক্যামেরা এবং ভিডিও, ইন্টারনেটসহ সবধরনের সুবিধা রয়েছে। মোবাইলের এ সুবিধাগুলো আজকাল ভাল-খারাপ উভয় ক্ষেত্রেই ব্যবহার হতে দেখা যায়। তাই প্রশ্ন দাঁড়ায় এ সকল সুবিধাযুক্ত মোবাইল ক্রয়-বিক্রয় জায়েয কি না?

উত্তর :

ক্রয়-বিক্রয় জায়েয। তবে অবৈধ কোনো কাজে তা ব্যবহার করা জায়েয নয়। -আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৯১, আল-বাহরুররায়েক ৮/২০২, জাওয়াহিরুল ফিকহ ২/৪৪৬, বুহুস ফী কাযায়া ফিকহিয়্যাহ ১/৩৫৯

 ২ সিম হস্তান্তর

প্রশ্ন :

সিম ক্রয়ের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন করা জরুরি। এখন কোনো ব্যক্তি নিজ ব্যবহারের উদ্দেশ্যে সিম ক্রয় করে কোম্পানীর অনুমোদন এবং পুনঃ রেজিস্ট্রেশন ছাড়া অন্য ব্যক্তির কাছে সিম বিক্রি করা বৈধ কি না?

উত্তর :

বৈধ।

৩. চোরাই সেট ক্রয়-বিক্রয়

প্রশ্ন :

মোবাইলের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার কারণে মোবাইল চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনাও বেড়েছে। অনেকের মোবাইল হারিয়েও যায়। প্রশ্ন হল, এ ধরনের সেট ক্রয়-বিক্রয়ের হুকুম কী?

উত্তর :

ছিনতাইকৃত বা চোরাই সেট জেনে শুনে ক্রয় করা জায়েয নেই। কেউ ক্রয় করলেও এ সেট ক্রেতার জন্য ব্যবহার করা বৈধ হবে না। বরং মালিক জানা থাকলে মূল মালিকের নিকট পৌঁছে দেওয়া জরুরি। এক্ষেত্রে ক্রেতাবিক্রেতা থেকে মূল্য ফেরত নিতে পারবে। মালিকের সন্ধান পাওয়া না গেলে যার থেকে কিনেছে তাকে দিয়ে মূল্য ফেরত নিতে পারবে। আর কারো কাছ থেকে হারিয়ে যাওয়া সেট হস্তগত হলে কী করতে হবে তা তো সবারই জানা আছে। এর ক্রয়-বিক্রয় জায়েয হওয়ার প্রশ্নই আসে না। -আল-মুহীতুল বুরহানী ৭/৫৯, বাদায়েউস সানায়ে ৬/৪৫, খানিয়া ৩/৪১৮, ফাতহুল কাদীর ৫/১৬৯

৪ ডাউন লোডিং ব্যবসা

প্রশ্ন :

মোবাইলে রিংটোন, মিউজিক, গান, ভিডিও-ছবি ইত্যাদি ডাউন লোড করার প্রবণতা বেড়েছে। এজন্য অনেক সার্ভিসিং সেন্টারে পৃথক ব্যবস্থাপনা থাকে। জানতে চাই ডাউন লোড করে বিনিময় নেওয়া এবং এ ব্যবসা করা জায়েয কি না?

উত্তর :

মিউজিক সংবলিত গান, প্রচলিত অশ্লীল ছবির ভিডিও ফিল্ম, অবৈধ চিত্র ইত্যাদির ডাউনলোড ব্যবসা নাজায়েয। কারণ এতে নিজের তো গুনাহ হয়ই, উপরন্তু অন্যের নিকট গুনাহের উপকরণ সরবরাহ করা হয়। তাই এ ধরনের ডাউনলোড থেকে উপার্জিত অর্থ হালাল হবে না। হাঁ, কোনো বৈধ চিত্র, মিউজিক ছাড়া রিংটোন, বাদ্যহীন গজল ইত্যাদি ডাউনলোড করা জায়েয এবং এ থেকে অর্জিত টাকাও হালাল।

-সহীহ বুখারী ১/২৯৮, জামে তিরমিযী ১/২৪১, সহীহ মুসলিম ২১৯, শরহে নববী ২/২৯, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৫৫, আল-বাহরুররায়েক ৮/১৯

৫ স্ক্র্যাচকার্ডের নির্ধারিত মূল্য থেকে কম/বেশীতে ক্রয়-বিক্রয়

প্রশ্ন :

স্ক্র্যাচকার্ডের গায়ের মূল্যের (ঋধপব ঠধষঁব) এর চেয়ে কম-বেশীতে বেচা-কেনা করা জায়েয আছে কি না? যেমন ১০০ টাকার কার্ড অনেক দোকানে কোনো কোনো সময় দুই তিন টাকা বেশী নেয়। আবার কোন কোন মোবাইল কার্ডে ৪/৫ টাকা কমও রাখে। এখন ১০০ টাকার পরিবর্তে কম-বেশী করে লেনদেন করা কি জায়েয, এটি কি সুদ নয়?

উত্তর :

স্ক্র্যাচকার্ডের গায়ের মূল্য একটি নির্ধারিত পরিমাণ টেলিযোগাযোগ সুবিধা তথা আউটগোয়িং সেবা প্রতিনিধিত্ব করে। অন্যান্য সেবার মত এটিও বিক্রিয়যোগ্য সেবা। সুতরাং কার্ডের (ঋধপব ঠধষঁব) গায়ের দাম যেহেতু টাকা নয় তাই কম-বেশীতে বিক্রি করা সুদ নয়। ১০০ টাকার কার্ড কম-বেশীতে ক্রয়-বিক্রয়কে সুদ মনে করা ভুল। তবে এখানে আরেকটি বিষয় আছে, তা হল, কোম্পানী থেকে পণ্যের বা সেবার মূল্য নির্ধারিত করে দিলে ঐ নির্ধারিত মূল্যেই বিক্রি করা নিয়ম। কমবেশি করা ঠিক নয়। কেননা এতে বাজারের স্বাভাবিকতা বাঁধাগ্রস্ত হয়।

-ফাতহুল কাদীর ৬/১৫৯; তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ১/৪০০

৬ ফ্লেক্সিলোড ব্যবসা ও গ্রাহক থেকে ফ্লেক্সিকৃত অর্থের বেশী গ্রহণ করা

প্রশ্ন :

ঋষবীর খড়ধফ (ফ্লেক্সিলোড) করতে অধিকাংশ দোকানে অতিরিক্ত টাকা নেয় না। যত টাকার ফ্লেক্সি করা হয় তত টাকা নেয়। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে গ্রাহক থেকে ২/৪ টাকা বেশি রাখে। এটা জায়েয কি না? এখানেও অতিরিক্ত নেওয়াকে কেউ কেউ সুদ মনে করে। এছাড়া দোকানীকে কোম্পানি ফ্লেক্সির উপর ১০% কমিশন দিয়ে থাকে। যেমন- ৯০০০ টাকা ফ্লেক্সি বাবদ জমা দিলে তার নামে ১০,০০০/- টাকার ফ্লেক্সি সুবিধা দেওয়া হয়। এটাকেও কেউ কেউ ৯০০০/-এর পরিবর্তে ১০,০০০/- টাকার লেনদেন মনে করে। বিস্তারিত জানতে চাই।

উত্তর :

ফ্লেক্সিলোডে যত টাকার ফ্লেক্সি করা হচ্ছে এর চেয়ে কম-বেশীতে লেনদেন করার হুকুম কার্ডের মতই। এতেও সুদ নেই। নির্ধারিত অংকের ফ্লেক্সি অর্থাৎ ঐ পরিমাণ টেলি যোগাযোগ আউটগোয়িং সেবা, যা বিক্রয়যোগ্য। তাই এটা নির্ধারিত মূল্যের বেশীতে লেনদেন করা সুদ নয়। কিন্তু কোম্পানির পক্ষ থেকে লোডকারী তথা দোকানীকে যেহেতু কমিশন দেওয়া হয় এবং গ্রাহক থেকে এবাবদ অতিরিক্ত কোনো টাকা নেওয়া কোম্পানি কর্তৃক নিষিদ্ধ তাই নির্ধারিত মূল্যের বেশী নেওয়া ঠিত হবে না। একইভাবে ফ্লেক্সিকারী দোকানীকে দেওয়া কমিশন তার জন্য বৈধ। এখানেও সুদের কিছুই নেই। বরং এ কারবারের ব্যাখ্যা হল, ১০ হাজার টাকার সেবা কোম্পানি তার ডিলারদের নিকট নয় হাজার টাকায় বিক্রি করছে। -প্রাগুক্ত

দোকানগুলোর ফোন ব্যবসা

৭ কল-মিনিটের হিসাব কীভাবে হবে

প্রশ্ন :

সিটিসেল মোবাইলের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলেরই জানা যে, সিটিসেলের মিনিট গণনা শুরু হয় ডায়ালের পর থেকেই। এখন ৭-৮ টা রিং হওয়ার পর অপর প্রান্ত থেকে রিসিভ করলে রিসিভ করার আগেই প্রায় এক মিনিট চলে যায়। অনেক ব্যবসায়ীকেই দোকানে সিটিসেল ফোন রাখতে দেখা যায়। তারা এই এক মিনিটের বাড়তি সুবিধা ভোগ করে। অর্থাৎ এই অগ্রীম ১ মিনিটেরও বিল রাখে। জানতে চাই, রিসিভের আগের সময়ের বিল নেওয়া জায়েয কি না? এক্ষেত্রে কী করণীয়?

উত্তর :

গ্রাহক থেকে কল রিসিভ হওয়ার আগের সময়ের বিল নেওয়া জায়েয হবে না। কারণ এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের সাথে চুক্তি হল, রিসিভের পর থেকে যত মিনিটের কথা হবে তার বিল নিবে। সুতরাং রিসিভের আগের মিনিটের বিল নেওয়া জায়েয হবে না। এজন্য সিটিসেল মোবাইল দিয়ে বৈধভাবে ব্যবসা করতে চাইলে হয়ত পৃথক মিনিটমাইন্ডার রাখতে হবে যা দ্বারা রিসিভ করার সময় থেকে মিনিটের হিসাব করা হবে। এছাড়া কল ডিউরিশন অপশন থেকেও শেষ কলের সময় জেনে নেওয়া যেতে পারে। আর এখন সিটিসেল অপারেটরের পক্ষ থেকেই কল শেষে কলের মোট সময় সরবরাহের ব্যবস্থা আছে। তাই সে অনুপাতেও বিল নেওয়া সহজ।

৮ পরবর্তী মিনিটের ১-২ সেকেন্ড হলেও পুরো মিনিটের বিল নেওয়া

প্রশ্ন :

সাধারণত ফোন দোকানীরা দ্বিতীয় বা তৃতীয় মিনিট শুরু হলেই এমনকি সেকেন্ড পরিমাণ কথা হলেও পরবর্তী পুরো মিনিটের বিল করে। মোবাইল কোম্পানী থেকে পাল্স সুবিধা থাকলেও তার হিসাব করে না। এটা জায়েয কিনা? এক্ষেত্রে করণীয় কী?

উত্তর :

ফোন ব্যবসায়ীর জন্য কোম্পানি কর্তৃক ঘোষিত পাল্স সুবিধা গ্রাহকদের দেওয়া জরুরি নয়। বরং পালস হিসাব না করতে চাইলে গ্রাহককে পূর্ব থেকেই অবহিত করবে যে, এখানে পরবর্তী মিনিটের এক সেকেন্ড হলেও পুরো মিনিটের বিল নেওয়া হয়। প্রয়োজনে গ্রাহকের দৃষ্টি পড়ে এভাবে দোকানের কোথাও লিখে রাখা যেতে পারে। তবে এব্যাপারে পরামর্শ হল, পরবর্তী মিনিটের ২/৩ সেকেন্ড হয়ে কথা শেষ হয়ে গেলে পুরো মিনিটের বিল না নিয়ে আধা মিনিটের বিল নেওয়া যেতে পারে। এ প্রস্তাবের ওপর আমল উভয় পক্ষের জন্য ভাল।

৯ ভুল নাম্বারে গেলে এর বিল কার জিম্মায়

প্রশ্ন :

ফোন দোকানে ভুল নাম্বারে গেলেও গ্রাহক থেকে বিল আদায় করা হয়ে থাকে। আগে টিএন্ডটির এ্যানালগ লাইনে সঠিক নাম্বারে রিং করলেও ভুল নাম্বারে চলে যেত। এজন্য ফোন দোকানগুলোতে এ নিয়ম চলে আসছে যে, ভুল নাম্বারে গেলেও বিল দিতে হবে। সেই এ্যানালগ নাম্বার এখন আর নেই। মোবাইল করার পর ভুল নাম্বারে ডায়াল হলে এর বিল কে দিবে? এ বিল কি গ্রাহক দিতে বাধ্য?

উত্তর :

মোবাইলে যে নাম্বারে রিং করা হবে সে নাম্বারেই যাবে। সঠিক নাম্বারে রিং করার পরও ভুল নাম্বারে যাওয়ার অবকাশ নেই। তাই ভুল নাম্বারে চলে গেলে বুঝতে হবে নিশ্চয় ভুল নাম্বারে ডায়াল করা হয়েছে। এখন দেখতে হবে এ ভুল কার। দোকানী ভুলে একটির পরিবর্তে অন্যটি টিপেছে, নাকি গ্রাহক নাম্বার দিতে ভুল করেছে? গ্রাহকের ভুল হলেই কেবল এর ক্ষতিপূরণ তার ওপর আসবে। আর দোকানীর ভুল হলে সেই ভুলের ক্ষতি তারই। এ ক্ষেত্রে গ্রাহক থেকে কিছুই নেওয়া যাবে না।

১০ কল রিসিভের জন্য বিনিময় নেওয়া

প্রশ্ন :

গ্রামেগঞ্জে অনেকের হাতে মোবাইল থাকে না। অনেকের হাতে থাকলেও টিএন্ডটি ইনকামিং নেই। তাই বিদেশ থেকে কিংবা অন্য কোথাও থেকে দোকানীর মোবাইলে কল আসলে তার কিছু খরচ না হলেও সে গ্রাহক থেকে কিছু টাকা নিয়ে থাকে। এটাকা নেওয়া কি জায়েয?

উত্তর :

হাঁ, এ বাবদ বিনিময় নেওয়া জায়েয। বিল না কাটলেও তার সেট ও লাইন ব্যবহার হচ্ছে। সময় ব্যয় হচ্ছে। তাই সে এর ন্যায্য বিনিময় নিতেই পারে। দোকানী এ সেবা ফ্রি দিতে বাধ্য নয়।


পর্ব ১https://adarshanari.com/article/masael/9457/
পর্ব ২https://adarshanari.com/article-series/9461/
পর্ব ৩ https://adarshanari.com/article-series/9461/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *