চট্টগ্রাম দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালকের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী।
বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে মাদরাসার মজলিসে শুরার বৈঠকে আল্লামা শফী তার এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। এবং সকল দায়িত্ব শেষে মজলিসে শুরার নিকট অর্পণ করেন। বৈঠক শেষে মজলিসে শুরার একাধিক সদস্য এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
এর আগে গতকাল বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বাদ জোহর থেকে চলমান সঙ্কট নিরসনে দারুল উলূম হাটহাজারীর শিক্ষার্থীরা মাদরাসা ময়দানে পাঁচ দফা দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। দাবিগুলো হলো, এক. মাওলানা আনাস মাদানীকে অনতিবিলম্বে মাদরাসা থেকে বহিষ্কার করতে হবে। দুই. ছাত্রদের প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ সুবিধা প্রদান ও সকল প্রকার হয়রানি বন্ধ করতে হবে। তিন. শায়খুল হাদিস আল্লামা আহমদ শফী অক্ষম হওয়ায় মহাপরিচালকের পদ থেকে সম্মানজনকভাবে অব্যাহতি দিয়ে উপদেষ্টা বানাতে হবে। চার. উস্তাদদের পূর্ণ অধিকার ও নিয়োগ-বিয়োগকে শুরার নিকট পূর্ণ ন্যস্ত করতে হবে। পাঁচ. বিগত শুরার হক্কানী আলেমদেরকে পুনর্বহাল ও বিতর্কিত সদস্যদের পদচ্যুত করতে হবে।
পরে বুধবার রাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে আল্লামা আহমদ শফী, শুরা সদস্য ও মাদরাসার সিনিয়র শিক্ষকরা মাদরাসার বিতর্কিত শিক্ষক আনাস মাদানীকে হাটহাজারী মাদরাসা থেকে অব্যাহতি দেয়াসহ তিনটি সিদ্ধান্ত নেয়। অন্য সিদ্ধান্তগুলো- মাদরাসায় অধ্যয়নরত কোনো ছাত্রকে হয়রানি করা হবে না। অবশিষ্ট সকল প্রকার সমস্যার সমাধান আগামী শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) মজলিসে শুরার বৈঠকের মাধ্যমে করা হবে।
এরপর ছাত্ররা শান্ত হয়ে বিক্ষোভ সাময়িক স্থগিত করে ক্যম্পাসে ফিরে যায় কিন্তু মাদরাসার পরিচালক মাওলানা আহমদ শফী আন্দোলন বানচাল করতে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ঘোষণা দেয়ার জন্য শিক্ষকদের সাথে বৈঠক করছেন এমন সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে আজ আবারো বিক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে। এর প্রেক্ষিতেই আগামী শনিবার শুরা বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও জরুরী ভিত্তিতে আজই শুরা বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার ঘোষণা আসে।
এর প্রেক্ষিতেই আজ ইশার নামাজের পর বৈঠকে বসে মজলিশে শুরা। বৈঠক থেকে বাকি দাবিগুলোও মেনে নেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়।বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র শুরা সদস্য আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, আল্লামা নুমান ফয়েজী, মাওলানা সালাহ উদ্দীন নানুপুরী, মাদরাসার শিক্ষক মুফতী নূর আহমদ ও মাওলানা দিদার প্রমূখ।