চট্টগ্রাম দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার চলমান অস্থিরতার সুষ্ঠু সমাধানের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের কর্মসূচী হিসেবে বাকি দাবিগুলো না মানা পর্যন্ত ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে তারা।
আজ বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বাদ জোহর থেকে দারুল উলূম হাটহাজারীর ছাত্ররা মাদরাসা ময়দানে পাঁচ দফা দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। ইতোমধ্যে পাঁচ দফা দাবির অন্যতম দুটি দাবি মেনে নেয়া হয়েছে। নানা অনিয়ম ও ছাত্রদের হয়রানির দায়ে মাদরাসা শিক্ষক আনাস মাদানীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া ছাত্রদের প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ সুবিধা প্রদান ও সকল প্রকার হয়রানি বন্ধ করা হবে বলেও জানানো হয়েছে। বাকি দাবি গুলো মেনে নেয়ার জন্য সময় চেয়েছে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। আগামী শনিবার সকল শুরা সদস্যদের উপস্থিতিতে বাকি দাবিগুলো মেনে নেয়ার আশ্বাস দেন তারা। আজ বাদ এশা হাটহাজারী মাদরাসার শুরা বৈঠক থেকে এসব জানানো হয়।
আজকের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মাদরাসার পরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফী, মেখল মাদরাসার পরিচালক ও অন্যতম শুরা সদস্য আল্লামা নুমান ফয়েজী, শুরা সদস্য মাওলানা সালাউদ্দীন নানুপুরী, হাটহাজারী মাদরাসা শিক্ষক মাওলানা আহমদ দিদাত, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী প্রমুখ।
বাকি তিনটি দাবি মেনে না নেয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো না মানা পর্যন্ত ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে তারা। বাকি তিনটি দাবি হলো, এক. শায়খুল হাদিস আল্লামা আহমদ শফী অক্ষম হওয়ায় মহাপরিচালকের পদ থেকে সম্মানজনকভাবে অব্যাহতি দিয়ে উপদেষ্টা বানাতে হবে। দুই. উস্তাদদের পূর্ণ অধিকার ও নিয়োগ-বিয়োগকে শুরার নিকট পূর্ণ ন্যস্ত করতে হবে। তিন. বিগত শুরার হক্কানী আলেমদেরকে পুনর্বহাল ও বিতর্কিত সদস্যদের পদচ্যুত করতে হবে।
এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে কওমী ঐতিহ্য সংরক্ষণ পরিষদ। সংগঠনটির সভাপতি মাওলানা মুসা বিন ইযহার বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের সমর্থনে এক ফেসবুক বার্তায় বলেন, হাটহাজারী মাদরাসাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন যাবত পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ স্বরূপ ছাত্রদের আন্দোলন যদি যৌক্তিক হয় তাহলে এ আন্দোলনের সঙ্গে চট্টগ্রামসহ সারাদেশের ওলামায়ে কেরাম ও তৌহিদি জনতার সমর্থন থাকা উচিত। আমরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সমর্থন জানাচ্ছি।
ফেসবুক বার্তায় তিনি আরও বলেন, কোনও অবস্থাতেই ছাত্রদের আন্দোলনে সরকারের হস্তক্ষেপ কাম্য নয়। তবে মাদরাসার উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসন করার লক্ষ্যে অভিভাবক হিসেবে মাদরাসার আস্থাভাজন ও নিরপেক্ষ মজলিসে শুরার সদস্যদের জরুরী ভিত্তিতে মিলিত হয়ে পরিস্থিতির আশু সমাধানই আমরা কামনা করছি।