প্রশ্ন : আসসালামু আলাইকুম। এক মহিলা দুটি সন্তানের মা, তার গর্ভেও রয়েছে আরেক সন্তান। এমতাবস্থায় ঐ মহিলা পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে অন্য এক ছেলের সাথে পালিয়ে যায়। সেখান থেকে স্বামীকে ফোনে জানায় যে, “আমি তোমাকে ডিভোর্স লেটার পাঠাবো”। কিন্তু তা আর পাঠায়নি। কিন্তু এর মাঝে মহিলার পরিবার তাকে নিয়ে এসে আবার প্রথম স্বামীরর হাতে তুলে দেয়। মহিলাও তার কৃতকর্মের উপর অনুতপ্ত হয় এবং প্রথম স্বামীর সঙ্গে থাকতে মনস্থির করে। জানার বিষয় হলো, তাদের পূর্বের বিবাহ কি এখনও বলবৎ আছে? এবং তাদের একসঙ্গে থাকার বিষয়ে শরীয়তের হুকুম কি? নাকি এমন স্ত্রীকে তালাক দিতে হবে?
উত্তর: ওয়া আলাইকুমুস সালাম।
তাদের বিবাহ বলবৎ রয়েছে। স্ত্রী গুনাহের কাজ করার কারণে তার গুনাহ হয়েছে। কিন্তু এতে করে তার বিবাহের সম্পর্ক নষ্ট হয়নি। সুতরাং স্বামী স্ত্রী একসাথে বসবাস করাতো কোন সমস্যা নেই।
যেহেতু স্ত্রী তওবা করেছে, তাই তাকে তালাক না দিয়ে শোধরানোর সুযোগ দেয়াটাই উত্তম হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
فَإِنْ أَطَعْنَكُمْ فَلَا تَبْغُوا عَلَيْهِنَّ سَبِيلًا ۗ
“যদি এতে তারা অনুগত হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না।” –সূরা নিসা-৩৪
হাদিস শরীফে এসেছে,
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: إِنَّ امْرَأَتِي لَا تَمْنَعُ يَدَ لَامِسٍ قَالَ: «غَرِّبْهَا» قَالَ: أَخَافُ أَنْ تَتْبَعَهَا نَفْسِي، قَالَ: «فَاسْتَمْتِعْ بِهَا»
“ইবনু আব্বাস (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে অভিযোগ করলো, আমার স্ত্রী কোনো স্পর্শকারীর হাতকে নিষেধ করে না। তিনি বললেন, তুমি তাকে ত্যাগ করো। সে বললো, আমার আশংকা আমার মন তার পিছনে ছুটবে। তিনি বললেন, (যেহেতু ব্যভিচারের প্রমাণ নেই) তাহলে তুমি তার থেকে উপকার গ্রহণ করো।” -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৪৯, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৩২২৯
উত্তর প্রদান করেছেন- লুৎফুর রহমান ফরায়েজী, পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
আসসালামু আলাইকুম
আমার একটি প্রশ্ন: বর ও কনেপক্ষ উভয়ই সাবলম্বি, বিবাহের ক্ষেত্রে বর পক্ষের মহর আদায় করা ফরজ (অত্যাবশ্যকীয)। কিন্তু কনে যদি সেচ্ছায় মহর মাফ করে দেয় অথবা এ কথা বলে যে, বর যদি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের প্রতিশ্রুতি দেয় তা হলে আমার মহর লাগবেনা বা এই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজই আমার বিবহের মহরের বিনিময়, তা হলে কি মহর আদায় হয়ে যাবে?
জিনিসটা যেহেতু অনেক সেনসিটিভ কাজেই মাফ করে দিলেও সেটা সাধারণত মন থেকে করা হয় না। কাজেই মোহর ধার্য পূর্বক দিয়ে দেয়াটাই উচিৎ। আর একজন পুরুষের জন্যে মোহর আদায় করাটাও একটা বাহাদুরির মত। কাজেই যতই মাফ করে দেয়া হোক, দিয়ে দেয়ার মধ্যেই কল্যাণ নিহিত। এবং এতে স্বামী স্ত্রীর মুহাব্বত ও বৃদ্ধি পায়। নবীজির সুন্নাত তো বটেই।