অবিবাহিত মেয়েদের জন্য অমূল্য ১২টি নসিহত

আল্লাহ পাক মেয়েদেরকে আদর ও স্নেহে থাকার জন্য দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। একটি মেয়ের লালনপালনের দায়িত্ব তার বাবা, ভাই, স্বামী বা ছেলের উপর থাকে। দুনিয়া সকলের জন্য পরীক্ষাকেন্দ্র। বিয়ের আগের সময়টুকু মেয়েদের জন্য অনেক সহজ হলেও, বিয়ের পর থেকে তার জন্য প্রকৃত পরীক্ষা শুরু হয়। স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে মেয়েদের জীবন এক বড় পরীক্ষা। এখানে কয়েকটি হাদিস বর্ণনা করে মেয়েদের জন্য করণীয় বিষয়গুলো শেষে উল্লেখ করবো, ইনশাআল্লাহ।

একবার আলী রদিয়াল্লহু আনহু ও ফাতিমা রদিয়াল্লহু আনহা নবীজী সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে দেখা করতে আসেন এবং এসে দেখেন যে নবীজী সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাকী বসে কাঁদছেন। আলী রদিয়াল্লহু আনহু বললেন, ইয়া রসূলুল্লাহ! আমার পিতামাতা আপনার জন্য কুরবান হোক, আপনি কাদছেন কেনো? নবীজী সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন জানালেন যে, মিরাজের রাত্রিতে আমি আমার উম্মতের নারীদেরকে জাহান্নামের ভয়ানক আজাবে গ্রেফতার দেখতে পেয়েছি। তারপর নবীজী নারীদের শাস্তির বর্ণনা করলেন, লম্বা হাদিস। ফাতিমা রদিয়াল্লহু আনহা তাদের গোনাহ সম্পর্কে জানতে চাইলে নবীজী বলেন, তারা হলো ১) ঐ নারী যে মাথার চুল খুলে বেপর্দা হয়ে ঘর থেকে বের হয়, ২) ঐ নারী যে তার স্বামীকে কটুকথার মাধ্যমে কষ্ট দেয় এবং স্বামীকে সম্মান করেনা, ৩) ঐ নারী যে বিবাহিত হয়েও পর পুরুষের সাথে সম্পর্ক রাখে, ৪) ঐ নারী যে অপবিত্র হওয়ার পর পবিত্রতা অর্জনে অলসতা করে এবং নামাজ কাজা করে ফেলে (জাহান্নামে এদের চেহারা শুকরের মতো ও শরীর গাধার মতো হবে), ৫) ঐ নারী যে মিথ্যা কথা বলে এবং গীবত করে(জাহান্নামে এদের মুখ দিয়ে আগুন প্রবেশ করিয়ে পায়খানার রাস্তা দিয়ে বের করা হবে এবং একজন ফেরেশতা তাকে প্রহার করতে থাকবে) এবং ৬) ঐ নারী যে অন্যের সুখ দেখে হিংসা করে এবং উপকার করে খোঁটা দেয়। (এদের চেহারা কুকুরের মতো হবে)

অন্য এক হাদিসে নবীজী সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ ফরমান, আমি জান্নাতের দিকে তাকালাম, সেখানে অধিকাংশ গরীব লোকদের দেখতে পেলাম। আমি জাহান্নামের দিকে তাকালাম, সেখানে অধিকাংশ মেয়েদের দেখতে পেলাম।

অন্য এক হাদিসে নবীজী সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ ফরমান, আমাকে জাহান্নাম দেখানো হয়েছে, এর থেকে ভয়ানক কিছু আমি কখনো দেখিনি এবং সেখানে অধিকাংশ মানুষ মেয়েরা ছিলো। সাহাবীগণ এর কারণ জানতে চাইলে নবীজী এরশাদ ফরমান, কারণ তারা অকৃতজ্ঞ। সাহাবীদের মধ্য থেকে একজন জিজ্ঞাসা করলেন, তারা কি আল্লাহর প্রতি অকৃতজ্ঞ? নবীজী এরশাদ ফরমান, তারা তাদের স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞ। তুমি তার সাথে সারা জীবন ভালো ব্যবহার করে চলেছো, তারপর একদিন যদি তার মতের বিরুদ্ধে কিছু করো, তাহলে সে বলবে, আমি কোনোদিন তোমার কাছ থেকে ভালো কিছু পাইনি।

কেউ কেউ মনে করতে পারে অবিবাহিত মেয়েদের নিয়ে লিখতে গিয়ে বিবাহিত মেয়েদের নিয়ে লিখছি। আসলে যে কোনো ক্লাস তার পরবর্তী ক্লাসের জন্য তৈয়ারির সময়। অবিবাহিত মেয়েদের নিজেকে এমনভাবে তৈরি করা উচিত যেন সে তার বিবাহিত জীবনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারে।

১) সর্বপ্রথম নিজেকে পর্দায় আবদ্ধ করতে হবে। নিজের সৌন্দর্যকে ঢেকে রাখতে হবে। পুরুষরা মেয়েদের কাঙ্গাল। একটি মেয়ে বেপর্দা হলে রাস্তার সকল পুরুষ তার দিকে তাকাবে এবং কেউ কেউ মেয়েটিকে নিয়ে খারাপ চিন্তাও করে বসবে। এতে এই পুরুষগুলো যেমন গোনাহগার হয়, মেয়েটিও গোনাহগার হয়। পর্দা মানে হলো তাকে সম্পূর্ণ কালো বোরকা, কোনোরূপ নক্সাবিহীন, চোখসহ সমস্ত মুখমণ্ডল ঢাকা, হাতমুজা ও পামুজা সহ এবং মেয়েরা অবশ্যই একাকী ঘর থেকে বের হবে না।
পর্দা কোন মেয়েকে বঞ্চিত করে রাখা নয়, মেয়েরা মূল্যবান বলেই পর্দা করতে হবে।

এই ব্যাপারে বিখ্যাত বক্সার মুহাম্মাদ আলী তার মেয়েকে কিছু কথা বলেছিল যা তার মেয়ে উল্লেখ করে এভাবেঃ
My father took a good look at us. Then he sat me down on his lap and said something that I will never forget. He looked me straight in the eyes and said, “Hana, everything that God made valuable in the world is covered and hard to get to. Where do you find diamonds? Deep down in the ground, covered and protected. Where do you find pearls? Deep down at the bottom of the ocean, covered up and protected in a beautiful shell. ”

He looked at me with serious eyes. “Your body is sacred. You’re far more precious than diamonds and pearls, and you should be covered too.”

অর্থঃ (উল্লেখ্য যে এই কথোপকথনের সময় মেয়ে তার বান্ধবীর সাথে পাশ্চাত্য পোশাক পরিহিত ছিল) আমার বাবা আমাদের দিকে খুব ভালোভাবে তাকালেন। তারপর আমাকে তার কোলে বসিয়ে এমন কিছু কথা বললেন যা আমি কখনো ভুলবো না। তিনি আমার চোখের দিকে সরাসরি তাকিয়ে বললেন, হেনা, আল্লাহ পাক যাকিছু দুনিয়াতে মূল্যবান বানিয়েছেন তা সবকিছুই ঢাকা থাকে এবং সহজে তা অর্জন করা সম্ভব নয়। বলতো হিরা কোথায় পাওয়া যায়? মাটির গভীরে, ঢাকা এবং সুরক্ষিত থাকে। বলতো মুক্তা কোথায় পাওয়া যায়? সাগরের গভীরে ঝিনুক অভ্যন্তরে ঢাকা ও সুরক্ষিত থাকে।
তারপর তিনি আমার দিকে খুব মনোযোগ দিয়ে তাকিয়ে বললেন, তোমার শরীরটা খুব পবিত্র, যা হিরা বা মুক্তা থেকেও অনেক বেশি মূল্যবান। তাই নিজেকে ঢেকে রাখো।

২) স্কুল, কলেজ ও ইউনিভার্সিটিতে পড়াশুনা করে মেয়েরা দ্বীনহারা হয়ে বড় হয়। বেপর্দা হয়। নারী স্বাধীনতার নামে মেয়েদেরকে স্বামীদ্রোহী বানানো হয়। ঘরের পবিত্র জীবনের পরিবর্তে বাইরের পণ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এক স্বামীর আদরে থাকার পরিবর্তে বাইরে হাজার পুরুষের জন্য মজা দেয়ার বস্তুতে পরিণত হয়। কখনো বাসের কন্ডাক্টর হাত ধরে বাসে তুলে মজা পায়, বাসের ভিড়ে পুরুষ যাত্রীরা ইচ্ছা করে ধাক্কা দিয়ে মজা পায়, কিংবা বর্তমানে ছাত্র-ছাত্রীরা প্রেম করার নামে পাশ্চাত্য সভ্যতা বা হিন্দি সিনেমার অনুকরণ করে জিনা করতে শুরু করেছে। আর এইসব প্রেম যেহেতু স্থায়ী সম্পর্ক নয়, তাই অনেক ক্ষেত্রেই মেয়েরা নিজেদের স্বতিত্ব হারিয়ে বসে এবং পরবর্তীতে স্বামীকে ধোকা দেয়। আমার এক জুনিয়র ভাই সম্ভ্রান্ত ঘরের এক মেয়েকে বিয়ে করে ঘরে তুলে নেয়। মাস খানেক না যেতেই অন্য এক ছেলের সাথে তার স্ত্রীর সহবাসের ভিডিও নাকি ইউটিউবে দেখতে পায় এবং সাথে সাথে বিয়ে ভেঙ্গে যায়। এই ঘটনা নিশ্চয়ই বাংলাদেশে এই একটি নয়। স্কুল, কলেজ ও ইউনিভার্সিটির পড়াশুনার নামে ছেলেমেয়েদের অবাধ মেলামেশা ছেলেমেয়েদের জীবনকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। তাই অন্তত ইউনিভার্সিটি লাইফ শুরু হওয়ার আগেই মেয়েদের বিয়ে হয়ে যাওয়া উচিৎ। এইসব ফালতু সার্টিফিকেট আখিরাতে কোনো কাজে আসবে না। দেশের লক্ষ লক্ষ ছাত্রীরা যদি কলেজ ইউনিভার্সিটির পড়াশুনা ত্যাগ করে ঘরে বসে যেতো এবং বিয়ে করে সংসার শুরু করে দিতো, তাহলে সমাজে জিনা, ব্যভিচার ও ধর্ষণের গোনাহ প্রায় বন্ধই হয়ে যেতো। আমি আমার বুয়েট ও বিদেশী সার্টিফিকেটের মোহ ত্যাগ করেও যথেষ্ট সম্মানের সহিত বেচে আছি, আলহামদুলিল্লাহ।

৩) গোনাহ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার খুব চেষ্টা করা চাই। কে আছে যে আজ এখন থেকে নিয়ত করবে যে, এই মূহুর্ত থেকে আমি আর কোনোদিন গান শুনবো না? আল্লাহ পাক জান্নাতে নিজের পর্দা সরিয়ে তাকে সূরা আর-রহমান তিলাওয়াত করে শুনাবেন। নবীজী সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে সূরা ইয়াসিন তিলাওয়াত করে শুনাবেন। এর থেকে বড় পাওয়া আর কি হতে পারে? আর গানের তাল বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি করে। তাই সকলে, বিশেষ করে আমার ছাত্রীরা নিয়ত করো, আজকের পর থেকে আর কোনোদিন গান শুনবে না।

৪) টিভি দেখা বন্ধ করো। আজকে থেকেই নাটক সিনেমা থেকে তাওবা করে ফেলো। অনেকে বলতে পারে, তাহলে সময় কাটাবো কি করে? আমি টিভি দেখি না, গান শুনি না, আড্ডা দেই না। কিন্তু এতো বেশি ব্যস্ত থাকি পড়াশুনা নিয়ে যে অনেকেই আমাকে ফেইসবুকে ম্যাসেজ পাঠিয়ে অভিযোগ করতে থাকে আমি কেনো রিপ্লাই দিচ্ছি না। তাই ইসলাম নিয়ে পড়াশুনা শুরু করো, এতে সময় কেটে যাবে, এলেম হাসিল হবে এবং দ্বীন শিখা হবে। তবে কে কি পড়বে, তা অবশ্যই একজন উস্তাদের সাথে পরামর্শ করে নিতে হবে।

৫) ফেইসবুক, হোয়াটস আপ, ইমো বা এধরণের সাইটগুলো পরিহার করা চাই। অনেক সময় বিদেশে থাকলে বা আত্মীয়স্বজনরা বিদেশে থাকলে নিতান্ত প্রয়োজনে এগুলো ব্যবহার করতে হলেও সেখানে নিজের কোনো ছবি রাখবে না। কোনো ছেলে বন্ধু রাখবে না বা ছেলেদের সাথে চ্যাট করবে না। ছেলেদের সাথে ভিডিও কল করবে না। সেলফি তুলবে না। বান্ধবীদের সাথেও ছবি তুলবে না। হতে পারে বান্ধবীরা ফেইসবুকে সেয়ার করে দিবে। ফেইসবুক একেবারে বর্জন করতে পারলে সবচেয়ে উত্তম। আমি নিজেও চাইছি ফেইসবুক ছেড়ে দিতে। ফেইসবুক থেকে ৫ জন আমার মাদ্রাসায় প্রতি মাসে কিছু হাদিয়া পাঠায়, আবার আমার বইগুলোর একটু প্রচার হচ্ছে। যাইহোক, মক্কা মদিনা থেকে ফিরে এসে ফেইসবুক থেকে আত্মগোপন করার চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ।

৬) ছেলে বন্ধু এবং চাচাতো ফুফাতো মামাতো খালাতো সকল ভাইদের সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন রাখো। ছেলেদের স্পর্শ থেকে বেচে থাকো। যে সকল মেয়েরা ছেলেদের স্পর্শ থেকে বেচে থাকে না, এরা ছেলেদের চোখে মূল্যহীন হয়ে যায়। আমার এক ভাগিনা দোকানদারী করে। হ্যান্ডসাম ছেলে। ওর দোকানে একটি সুন্দরী মেয়ে প্রায়ই আসে, আড্ডা দেয়, মাঝেমাঝে ভাগিনার সাথে হাতাহাতি হাসাহাসি করতে দেখেছি। আমি ভাগিনারে জিজ্ঞাসা করলাম, কিরে, তুই কি এই মাইয়াটারে বিয়ে করবি? ছেম্রা আমারে জবাব দিলো, মামা, এইগুলা আড্ডা দেওয়ার লাইগা, বিয়া করার লাইগা না।

৭) মেয়েদের হায়েজ থেকে মুক্ত হওয়ার পর পাক-পবিত্র হওয়ার দিকে খুব খেয়াল রাখা চাই। গোসলের মাধ্যমে শরীর পাক হয়। এই গোসলের সময় এমনভাবে কুলি করতে হবে যেন গলার হলক পর্যন্ত পানি পৌছে। নাকে পানি দিয়ে এমনভাবে পরিষ্কার করতে হবে যেন নাকের নরম হাড় পর্যন্ত পানি পৌছে। চুলের গোড়ায় ও শরিরের সমস্ত অংশে পানি পৌছা জরুরী। তাছাড়া মেয়েরা প্রশ্রাব করার পর পানি দিয়ে নিজেকে ধুয়ে নিবে এবং টয়লেট প্যাপার বা কাপড় ব্যবহার করে নিজেকে শুকিয়ে নিবে। প্রতি মাসে শরীরের অবাঞ্চিত লোম উপড়ে ফেলতে হবে, কোনোভাবেই চল্লিশ দিন অতিবাহিত করা যাবে না।

৮) গিবত ও মিথ্যা থেকে তাওবা করে নেও। মেয়েরা-মেয়েরা একসাথে হলে অনেক বেহায়াপনা মূলক কথাবার্তা বলে, বিবাহিত মেয়েরা নিজের স্বামীর দোষত্রুটি অন্য মেয়েদের সাথে আলোচনা করে, এগুলো থেকে তাওবা করা চাই।

৯) অধিকাংশ মেয়েরা দান-সদকার ব্যাপারে খুব বেশী সংকীর্ণমণা হয়ে থাকে। রোহিঙ্গাদের জন্য একবার ফেইসবুকে সবাইকে সাহায্যের জন্য আহবান জানিয়েছিলাম। অনেকের হয়ত মনে আছে। প্রায় তিন লক্ষ টাকার মতো সংগ্রহ হয়েছিলো। মাশাআল্লাহ কয়েকদিন প্রায় ফোন অপারেটর মনে হয়েছিল নিজেকে, অসংখ্য ফোন সারাদেশ থেকে এবং বিদেশ থেকেও। কিন্তু মাত্র একজন বোন ১০০০ টাকা পাঠিয়েছিলেন ও আমার এক বোন ডাক্তারি পড়ে, সে তার বান্ধবীদের মিলে কিছি টাকা পাঠিয়েছিলো। মেয়েরা মাল জমা করতে পছন্দ করে। আর যারা মাল জমা করে তাদের স্থান জাহান্নামের দ্বিতীয় তলা হুতামাহতে হবে। তাই মাল সদকা করার অভ্যাস করা চাই, যা জাহান্নামের আগুনের জন্য প্রতিবন্ধক হবে।

১০) ইসরাইলী রেওয়াতের মদ্ধ্যে যেগুলো শরিয়তের সাথে সাংঘর্ষিক নয় সেগুলো সম্পর্কে হুকুম হলো এগুলো আমরা সত্য বা মিথ্যা কিছুই বলবো না। এরকম একটি রেওয়ায়েত যা কুরআন বা হাদিসে নেই, কিন্তু আমাদের জন্য শিক্ষণীয়। জুলাইখার স্বামী মারা যাওয়ার পর মিশরের বাদশা জুলাইখার সাথে ইউসুফ আলাইহিস সালাম-এর বিয়ে প্রদান করেন এবং পরবর্তীতে তাদের মধ্যে খুব ভালোবাসার সম্পর্ক হয়। তখন জুলাইখাকে ইউসুফ আলাইহিস সালাম পুরোনো দিনের কথা স্মরণ করিয়ে দেন যখন জুলাইখা তার সাথে অবৈধ শারিরিক সম্পর্ক করতে চেয়েছিল এবং বলেন, এটা কি তার থেকে উত্তম নয় যা তুমি চেয়েছিলে? জুলাইখা তখন নিজের ভুল স্বীকার করে ও ক্ষমা প্রার্থনা করে। তাই বিয়ের আগের কোনো সম্পর্কই উত্তম নয়, যা শুধু গোনাহই গোনাহ এবং অবশ্যই বর্জনীয়।

১১) আল্লাহ পাক কালামে পাকে খারাপ পুরুষের সাথে খারাপ মেয়ে, নেক পুরুষের সাথে নেক মেয়ের কথা বলেছেন। তাই নিজের জন্য উত্তম জীবনসঙ্গী পেতে হলে অবশ্যই নিজেকে বিয়ের আগেই সংশোধন করতে হবে। যে নিজে পবিত্রা হবে আল্লাহ পাক তাকে পবিত্র স্বামী দিবেন। ইউসুফ আলাইহিস সালাম পবিত্র ছিলেন, জুলাইখাকে পবিত্রা বানিয়ে আল্লাহ পাক তার সাথে বিয়ে দিয়েছেন। তখন জুলাইখা এতো বেশী ইবাদতগুজার বনে যান যে, ইউসুফ আলাইহিস সালাম একবার আভিমান করে বলেন যে, এর কি কারণ যে তুমি আমাকে আগের মতো ভালোবাসো না?

১২) এক সাহাবিয়া মহিলা নবীজী সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি অভিযোগ করেন যে, পুরুষরা জিহাদ করে, জানাজা নামাজ আদায় করে, সকল নেক কাজে পুরুষরা এগিয়ে আছে। তাহলে আমাদের কি হবে? তখন আল্লাহ পাক নাযিল করেন, নিশ্চয়ই মুসলমান পুরুষ ও মহিলা, ইমানদার পুরুষ ও মহিলা, ইবাদতগুজার পুরুষ ও মহিলা, সত্যবাদী পুরুষ ও মহিলা, সবরকারী পুরুষ ও মহিলা, আল্লাহর ভয়ে বিনয়ী পুরুষ ও মহিলা, দানশীল পুরুষ ও মহিলা, সংযমী পুরুষ ও মহিলা, নিজের লজ্জাস্থানের হেফাজতকারী পুরুষ ও মহিলা, আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণকারী পুরুষ ও মহিলা-দের জন্য আল্লাহ পাকের ওয়াদা হলো যে, আল্লাহ পাক তাদের ক্ষমা করে দিবেন এবং অনেক বড় প্রতিদান দিবেন।
এই দশ জিনিসের উপর নিজেকে উঠানোর চেষ্টা করি, ইনশাআল্লাহ।

লিখেছেন,  মুশতাক আরমান খান

4 thoughts on “অবিবাহিত মেয়েদের জন্য অমূল্য ১২টি নসিহত

  1. মা-শা-আল্লাহ !!! অনেক সুন্দর লেখনী। আমাদের মা, বোন ও মেয়েরা যেনো জানা এবং মানার চেষ্ঠা করেন। এখানে আমাদের পূরুষদের সার্বিক সহযোগিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *