চালু হল স্পিডগান : বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালালেই জরিমানা

দেখে মনে হবে পুলিশ কাউকে গুলি করছে। কিন্তু আসলে তা নয়। এটি গাড়ির গতিবেগ ধরার যন্ত্র। নাম স্পিডগান (স্পিড ডিটেক্টর ডিজিটাল মেশিন)। সড়কে গাড়ি সর্বোচ্চ গতিসীমা অতিক্রম করলেই স্পিডগান তা ধরে ফেলে। দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তখন ওই গাড়িকে আটক করেন।

বেপরোয়া গতির কারণে অনেক সময় সড়কে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হয়। তাই গাড়ির বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৫২ কিলোমিটার এলাকায় স্পিড ডিটেক্টর ডিজিটাল মেশিনের (স্পিডগান) ব্যবহার শুরু করেছে হাইওয়ে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে দুটি স্পিডগান (গতি পরিমাপক যন্ত্র) ব্যবহার শুরু করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) সকাল থেকে মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন নরসিংদীর পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল-মামুন।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে স্পিডগানের ব্যবহারপুলিশ সুপার জানান, নরসিংদীর মহাসড়কে দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনতে ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক, ফিটনেস চেকসহ নানা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে পুলিশ। এরই ধারাবাহিকতায় আজ সড়কে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে পরিমাপক যন্ত্র বা স্পিডগানের ব্যবহার শুরু করা হয়েছে। এটিসহ সকল কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হাসান, শফিউর রহমান, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর গোলাম মাওলা, জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমসহ জেলা পুলিশের একাধিক টিম উপস্থিত ছিল।

নরসিংদীর ট্রাফিক ইন্সপেক্টর গোলাম মাওলা তালুকদার বলেন, ‘হাইওয়েতে সর্বোচ্চ গতিসীমা থাকবে ৮০ কিলোমিটার। এর বেশি হলেই স্পিডগানে ধরা পড়বে। সঙ্গে সঙ্গে ওই গাড়ির ছবি প্রিন্ট হয়ে বের হয়ে আসবে। ধরা পড়া গাড়িকে জরিমানা করা হবে। জরিমানা আমাদের মূল উদ্দেশ্য নয়, সচেতন করাটাই মূল। এছাড়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৫২ কিলোমিটার এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে রোড ডিভাইডার দরকার। রোড ডিভাইডার বসালে দুর্ঘটনা কমবে।’

স্পিডগানে ধরা খাওয়া গাড়িকে জরিমানা করা হচ্ছেএর আগে ৮ আগস্ট ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার অংশে স্পিডগান ব্যবহার শুরু করে হাইওয়ে পলিশ। এছাড়া দেশের অন্যান্য মহাসড়কেও স্পিডগান ব্যবহার করা হয়।


স্পিডগান কী


স্পিড ডিটেক্টর ডিজিটাল মেশিন (স্পিডগান) দিয়ে তাৎক্ষণিক গাড়ির গতিবেগ জানা যায়। পুলিশ বুঝতে পারে গাড়িটি নির্ধারিত গতিসীমা অতিক্রম করছে কিনা। গতিসীমা অতিক্রম করলে পুলিশ চেকপোস্টে খবর পৌঁছে যায়। ধরা পড়ে যায় বেপরোয়া গতির যানবাহন।

এদিকে সোমবার (২৭ আগস্ট) সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে শেষে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘হাইওয়েতে সর্বোচ্চ গতিসীমা থাকবে ৮০ কিলোমিটার। এর বেশি নয়। এই কাজের জন্য যন্ত্রপাতি আমদানি ও হাইওয়ে পুলিশকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। দেশের মহাসড়কগুলোর মধ্যে কুমিল্লা, সিরাজগঞ্জ ও গাইবান্ধাসহ পাঁচটি স্থানে চালক ও হেলপারদের জন্য বিশ্রামাগার করা হবে। কোনও গাড়িতে ফ্ল্যাগস্ট্যান্ড, হুটার, স্টিকার ও মনোগ্রাম লাগানো চলবে না। রাজধানীতে গরিবি চেহারার গাড়িগুলোর বডির রং আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরে মধ্যে পরিবর্তন করতে হবে। ইজিবাইক, লেগুনা, নসিমন, করিমন, অটোরিকশার খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানির অনুমতি না দিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধপত্র পাঠানো হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেশের ২২টি মহাসড়কে ইজিবাইক, নসিমন, করিমন ও অটোরিকশা দেখাতে পারবেন না। সেখানে এসব মুক্ত করা হয়েছে।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই বছর ঈদের সময় যে তিনটি বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে, তিনটিই হাইওয়েতে এবং প্রত্যেকটি হাইওয়েতেই ডিভাইডার ছিল। কাজেই সড়কগুলোতে ডিভাইডার দিলেই দুর্ঘটনা কমে যাবে, তা সত্য নয়।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *