ইসলামী অনুষ্ঠানে নামাজের প্রতি গুরুত্বদান আবশ্যক।

মাওলানা হাসান সিদ্দিকী

ইসলামী অনেক অনুষ্ঠান এখন হচ্ছে যা ইতিপূর্বে কল্পনা করা যেত না। বিনোদনের জন্য বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রোগ্রাম হচ্ছে। অপসংস্কৃতির বিপরিতে ইসলামী সংস্কৃতি প্রচার, প্রসার বেশি হওয়া প্রয়োজন। অন্যথায় অপসংস্কৃতির আগ্রাসন যেভাবে সমাজকে গ্রাস করে নিচ্ছে তাতে মানুষের নীতি- নৈতিকতার স্খলন ঘটবে এবং ঘটছে যা ক্ষতিকর। এর মোকাবেলায় ইসলামী সংস্কৃতির কোন বিকল্প নেই।

কিন্তু ইসলামী যে কোন অনুষ্ঠান ইসলামী আদর্শ মেনে চলার মাঝে কামিয়াবি নিহিত। অনুষ্ঠান সুন্দর, সফল করার স্বার্থে ধর্মের কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অবহেলা করা যাবে না। যেহেতু অনুষ্ঠান ইসলামী সেহেতু ইসলামের কোন বিষয়ে কমতি করে সফলতার কথা ভাবা ভুল। অনুচিত কাজ। যা কখনোই ঠিক নয়।

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি নামাজ। কিয়ামতের মাঠে সবার আগে নামাজের হিসাব নেওয়া হবে।
সময়মত নামাজ পড়া ওয়াজিব। জামাতের সাথে নামাজ পড়াও ওয়াজিব। অনুষ্ঠান সফল করার জন্য যদি নামাজের প্রতি অবহেলা প্রকাশ পায় তাহলে তা হবে খুবই দুঃখজনক কথা।

সেদিন বায়তুল মোকাররমের ক্বেরাত মাহফিলে দেখলাম এক দুঃখজনক চিত্র! ফরজ শেষ হতেই দৌঁড়ে অনেকের জায়গা দখলের প্রতিযোগিতা! সুন্নত, বিতির নামাজের কোন খবর নেই। এই দৃশ্য দেখে মানুষ ছি ছি করে। এগুলা কী! ইসলামী অনুষ্ঠানে এসে নামাজের প্রতি উদাসীনতা! কী লাভ তাহলে এই ইসলামী অনুষ্ঠানে এসে! এবং এই অনুষ্ঠানের সার্থকতা কী!

ইসলামী অনুষ্ঠানে এসে যদি অনুষ্ঠানের জন্য নামাজের ক্ষতি হয় তাহলে এমন অনুষ্ঠানে না আসাটাই উচিত। এমন অনেক অনুষ্ঠানের চিত্র কিন্তু আমাদের চোখে পড়ে। যা খুবই দুঃখজনক!

এটা গেল, পাব্লিকের কথা। অনুষ্ঠান আয়োজকদেরও কিন্তু দায়িত্ব আছে। এমন স্থানে অনুষ্ঠান করা যেখানে আশেপাশে বড় মসজিদ আছে। যেখানে সবার স্থান সংকুলান হবে। নামাজের সময় অনুষ্ঠান স্থগিত করা। কোন অবস্থাতেই নামাজের সময় অনুষ্ঠান অব্যাহত না রাখা।

আল্লাহ না করুক, কোন দর্শনার্থী যদি নামাজের সময় অনুষ্ঠান চলার কারণে নামাজ না পড়তে পারে এবং পরবর্তীতেও বাসায় গিয়ে নামাজ না পড়ে তাহলে অনুষ্ঠান কর্তৃপক্ষ কিন্তু এর দায় এড়াতে পারবেন না। এবং এর জন্য আল্লাহর দরবারে জবাবদিহিতা করা লাগতে পারে।

তাই ইসলামী অনুষ্ঠান আয়োজকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলবো, এমন স্থানে অনুষ্ঠান আয়োজন করুন, যার নিকটে নামাজ পড়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা আছে এবং নামাজের সময় অনুষ্ঠান পরিচালনা বন্ধ রাখুন। অনুষ্ঠানের জন্য যেন কারো নামাজে বিঘ্নতা না ঘটে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখুন। নামাজ সবার আগে এরপর যাবতীয় কাজকর্ম। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন। আমীন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *