ইসলামই শান্তির ঠিকানা

জান্নাতুল ফিরদাউস নাঈমা


পরকালের প্রতি বিশ্বাস হলো বিশুদ্ধ আমলের রূহ। গুনাহ ও অপরাধের অন্তরায়। পৃথিবীর যাবতীয় শান্তি-শৃংখলা পরকালের বিশ্বাসের উপরই নির্ভরশীল। আন্তরিকভাবে বিশ্বাস স্থাপনকে ঈমান আর অন্তরসহ সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কর্মের মাধ্যমে অনুগত হওয়াকে ইসলাম বলা হয়। শরীয়তে ঈমানবিহীন ইসলাম এবং ইসলামবিহীন ঈমানের কোনো অনুমোদন নেই। তাই একটি ব্যতীত অপরটি গ্রহণযোগ্য নয়। ঈমানের আন্তরিক বিশ্বাস ততক্ষণ পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত বিশ্বাসের মৌখিক স্বীকৃতির সঙ্গে কর্মের আনুগত্য যোগ না হবে।
বর্তমান বিশ্বে বস্তুবাদী সভ্যতার এ চূড়ান্ত পর্যায়ে অপরাধ দমনের শত চেষ্টা তদবীরের পরও অপরাধ প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। তার কারণ হলো, মানবসভ্যতার দু’টো প্রধান দিক থাকে। প্রথমটি বস্তুগত, দ্বিতীয়টি সাংস্কৃতিক। প্রথমটি অভিজ্ঞতায় অর্জিত বা বস্তুগত পরীক্ষায় প্রাপ্ত। যথাÑপ্রযুক্তির উন্নয়ন, শিল্প-কারখানা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, উৎপাদন সংস্থা ইত্যাদি।
আর দ্বিতীয় দিকটি হচ্ছে সভ্যতার মূল ও মৌলিক অর্থাৎ আসল দিক। এতে মানুষের ইয়াকীন-বিশ্বাস, চিন্তা-চেতনার সুস্থ বিকাশ, মার্জিত আচরণ, নীতি-নৈতিকতা ও শিল্পকলাসহ আন্তর্জাতিক সম্পর্কও তাতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আর বস্তুবাদী সভ্যতায় এ দিকটি থাকে না। তাই তাদের আর্থিক ও যান্ত্রিক অনেক অগ্রগতি দেখা গেলেও সেখানে নীতি-নৈতিকতার শান্তিময় সুষ্ঠু জীবন ব্যবস্থা নেই।
তাছাড়া বর্তমান ধর্মহীন নাস্তিক্যবাদ জাগতিক শিক্ষার প্রভাবেও মানব জীবন কলুষিত হচ্ছে। চিন্তা-চেতনায় বিষ ছড়িয়ে জীবনের সর্বক্ষেত্রে বিশৃংখলা ছড়াচ্ছে। তাই প্রথমে ইসলামকে পূর্ণভাবে আঁকড়ে ধরতে হবে। আমাদেরকে আখিরাত মুখী হতে হবে। পরকালের আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করতে হবে। চিরস্থায়ী জীবনে বিশ্বাসকারী কখনো গুনাহ করতে পারে না। লোকচক্ষুর অন্তরালেও অপরাধ বা অনৈতিক কোনো কাজ করতে পারে না। আল্লাহ দেখছেন, সবখানেই তিনি দেখেন, একদিন তার সামনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে এবং জবাবদিহি করতে হবে। এসব অনুভূতি তার হৃদয়ে সদা জাগরুক থাকে।
সম্প্রতি বিশ্বে জীবনের সর্বক্ষেত্রে এই যে আমরা অধঃপতিত হচ্ছি তার মূল কারণ হলো, ঈমান ও কুরআন সুন্নাহর পথ থেকে বিচ্যুতি। পাশ্চাত্য আগ্রাসনে আমরা ঈমান-আকীদা সব হারিয়ে যাবতীয় কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয়েছি। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেনÑ“নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা‘আলার কাছে একমাত্র ধর্ম হলো ইসলাম।” এ ধর্মেই রয়েছে সর্বসুন্দর ও পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। জীবনের সর্বক্ষেত্রে নিশ্চিত শান্তি আর সকল সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান। রয়েছে পারলৌকিক অনন্ত জাযা শান্তি-সুখের চিরস্থায়ী জান্নাত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *