সম্পাদনা –
আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী রহ. ছিলেন মুসলিম উম্মাহর অবিসংবাদিত নেতা ও আধ্যাত্মিক পথপ্রদর্শক। তিনি
একাধারে মেধাবী আলিম, সফল শিক্ষক, পরিশুদ্ধ সাধক, দূরদর্শী সমাজসংস্কারক, সংযমী, বিনয়ী, সদালাপী,
যুক্তিবাদী, উদার ও পরম স্নেহবৎসল এক জ্যোতির্ময় ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। জাতির দুর্দিনে দিশারীর ভূমিকা পালন করেছেন।
ব্যক্তি হিসেবে ছিলেন খুবই সাধারণ, অত্যন্ত সাদাসিধে, চাতুর্যমুক্ত কিন্তু কৌশলী।
জন্ম
আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী রহ.-এর জন্ম ১৯২০ সালে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার পাখিয়ারটিলা গ্রামের এক
সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। তাঁর পিতার নাম মরহুম বরকত আলী ও মায়ের নাম মরহুমা মেহেরুন্নেছা।
বাল্যকালেই তিনি পিতা-মাতা উভয়কে হারান।
শিক্ষা
আল্লামা শাহ আহমদ শফী রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা মাদরাসায় তার শিক্ষাজীবন শুরু করেন। এরপর পটিয়ার আল
জামিয়াতুল ইসলামিয়া জিরি মাদ্রাসায় কিছুদিন লেখাপড়া করেন। তারপর তিনি হাটহাজারীর আল জামিয়াতুল
আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসায় ভর্তি হন। সেখানে দীর্ঘদিন অধ্যয়ন করার পর ১৯৪১ সালে
তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদরাসায় ভর্তি হন এবং চার বছর অধ্যয়ন করেন। এ
সময় তিনি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট
আল্লামা হুসাইন আহমদ মাদানির সংস্পর্শে আসেন এবং তার কাছ থেকে আধ্যাত্মিক শিক্ষালাভ করেন।
শিক্ষকবৃন্দ ও খেলাফত লাভ
ছাত্রজীবনেই ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অকুতোভয় সিপাহসালার, আওলাদে রাসূল (সা.) আল্লামা
সাইয়েদ হোসাইন আহমদ মাদানী রহ.-এর হাতে আধ্যাত্মিক শিক্ষা লাভ করেন এবং খেলাফতপ্রাপ্ত হন।
দারুল উলুম দেওবন্দে তার উল্লেখযোগ্য উস্তাদগণ হলেন- মাওলানা সাইয়েদ হুসাইন আহমদ মাদানী রহ.,
মাওলানা ইবরাহিম বালিয়াভী রাহ.,মাওলানা ফখরুল হাসান রহ., মাওলানা ই’জাজ আলী রহ., মাওলানা
জহিরুল হাসান রহ., মাওলানা জলিল আহমদ রহ. প্রমুখ। তিনি শায়খুল ইসলাম হুসাইন আহমাদ মাদানি রহ.এর কাছে বুখারী,
শায়েখ ইবরাহীম বালিয়াভী রহ. এর কাছে মুসলিম, শায়েখ এজাজ আলী রহ. এর কাছে আবু দাউদ, শায়েখ ফখরুল হাসান রহ. এর কাছে নাসায়ী,
জহুরুল হক দেওবন্দী রহ. এর কাছে মুয়াত্তায়ে মালেক এবং শায়েখ আব্দুজ জলিল রহ. এর কাছে মুয়াত্তায়ে মুহাম্মাদ এর দরস গ্রহণ করেন।
কর্মজীবন:
১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে দেশের শীর্ষ ইসলামী বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রামের দারুল উলূম হাটহাজারীতে শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত
হন। শিক্ষকতার প্রতি তাঁর পূর্ণ মনোযোগের কথা সুবিদিত। ১৪০৭ হিজরি তথা ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে জামিয়ার
সর্বোচ্চ পরিষদ মজলিসে শুরার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মহাপরিচালক পদে দায়িত্ব পান। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ সাল
পর্যন্ত মহা-পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর পরিচালনার আমলে হাটহাজারী মাদরাসার প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়। শিক্ষাগত এবং কাঠামোগত–দুটো ক্ষেত্রেই।
তার পরিচালনার সময়েই মিশরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে দারুল উলুম হাটহাজারী মাদরাসার শিক্ষাচুক্তি হয়।
এ চুক্তি অনুযায়ী হাটহাজারী মাদরাসার সার্টিফিকেট দিয়ে কেউ চাইলে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবে।
কওমী মাদরাসাসমূহের অভিভাবক
২০০৮ সালে শাহ আহমদ শফী কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাক-এর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি
কওমি মাদরাসাগুলোর সরকারি স্বীকৃতির দাবিতে অনুষ্ঠিত আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। এর প্রেক্ষিতে ২০১৭
সালের ১১ এপ্রিল সুদীর্ঘকালের ধারাবাহিক প্রচেষ্টায় আল্লামা শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্বে গণপ্রজাতন্ত্রী
বাংলাদেশের তৎকালীন সরকার কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদকে মাস্টার্সের (আরবি
ও ইসলামিক স্টাডিজ) সমমান ঘোষণা করেন। তখন আইন অনুসারে কওমি মাদরাসার ৬টি বোর্ডের সমন্বয়ে
আল হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশ গঠন করা হলেও এর চেয়ারম্যানও নির্বাচিত হন
আল্লামা আহমদ শফী। ইন্তেকাল পর্যন্ত তিনি এই দুটো বোর্ডের দায়িত্বে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
রাজনৈতিক দলের দলনিরপেক্ষ উপদেষ্টা
আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী অরাজনৈতিক ব্যক্তি হলেও কওমী ধারার বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে
ব্যক্তিগত সখ্য ছিল। অরাজনৈতিক হওয়ার কারণে কোনও ইসলামিক রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব
ছিল না। এজন্য দীর্ঘ সময় ধরে তিনি সবার আস্থার জায়গায় অবস্থান করেছেন। ফলে তিনি আলেমদের
পারস্পরিক দ্বন্দ্ব নিরসনে ভূমিকা রাখতে পেরেছেন। সমকালীন ইসলামী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের তিনি পরামর্শ
দিতেন। তিনি ব্যক্তিগতভাবে দলনিরপেক্ষ হলেও সামগ্রিকভাবে ইসলামী রাজনীতির পক্ষে তাঁর স্পষ্ট অবস্থান
ছিল। তিনি সবার সঙ্গেই সুসম্পর্ক রাখতেন। দীর্ঘ জীবনে তাঁকে নেতৃত্বের দ্বন্দ্বের মালিন্য স্পর্শ করে নি।
এজন্যই তিনি পরবর্তীতে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিলে কেউ আপত্তি করে নি। একবাক্যে সবাই তাঁর নেতৃত্ব
মেনে নিয়েছেন। অবশ্য দেশের আলেম সমাজ সময়ের দাবি বুঝতে দেরি করেন নি, আল্লামা আহমদ শফীর
নিরঙ্কুশ নেতৃত্বের পক্ষে এটাও সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।
ধর্মীয় বক্তা
আল্লামা আহমদ শফী ছিলেন একজন ধর্মীয় বক্তা। এখনকার মতো তথাকথিত ‘আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন
বক্তা’ তিনি নন। চট্টগ্রাম অঞ্চলে বাড়িতে বাড়িতে ও ঘরে ঘরে ধর্মীয় ওয়াযের ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল। ধারণা
করা হয়, সুন্নাতের প্রসার ও বিদয়াত দূরীকরণের আন্দোলন ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়ার নিমিত্তে এই ধারা মুফতী
ফয়যুল্লাহ রহ. (হাটহাজারী মাদরাসার শিক্ষক ও চট্টগ্রামের বিশেষায়িত দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মেখল হামিউস
সুন্নাহ মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা) চালু করেছেন। ব্যাপারটা ফলপ্রসূ হলে সেখানকার অনেক আলেম রীতিটা ধরে
রাখেন। আল্লামা আহমদ শফীও তাঁদের একজন। কালক্রমে তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত
হওয়ার পরও এই ধারাটি পুরোপুরি ছেড়ে দেন নি। একজন জাতীয় ব্যক্তিত্ব ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত
ব্যক্তি রিকশায় চড়ে একটি ঘরোয়া মাহফিলে উপস্থিত হয়ে অল্প সংখ্যক মানুষের সামনে আঞ্চলিক ভাষায়
ওয়ায করছেন, এরচেয়ে সুন্দর দৃশ্য খুব কমই আছে। আল্লামা আহমদ শফীর ব্যক্তিত্বের অসাধারণ দিকগুলোর
এটিও একটি।
লেখক
আল্লামা শফী ছিলেন উর্দু, ফার্সি, আরবি ভাষা ও সাহিত্যের পাশাপাশি ইসলামী শিক্ষায় একজন সুদক্ষ পণ্ডিত।
হাটহাজারী মাদরাসার মুখপাত্র মাসিক মুঈনুল ইসলাম-এর সম্পাদক ছিলেন তিনি। তাঁর রচনাগুলোতে তাঁর
চিন্তা ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি বাংলায় ১৩টি এবং উর্দুতে ৯টি বই রচনা করেছেন।
তার রচিত বাংলা বইগুলো হলো- হক্ব ও বাতিলের চিরন্তন দ্বন্দ্ব, ইসলামী অর্থব্যবস্থা, ইসলাম ও রাজনীতি,
ইযহারে হাকিকত, মুসলমানকে কাফির বলার পরিণাম, সত্যের দিকে করুণ আহ্বান, ধূমপান কি আশীর্বাদ না
অভিশাপ?, একটি সন্দেহের অবসান, একটি গুরুত্বপূর্ণ ফতোয়া, তাবলীগ একটি অন্যতম জিহাদ, ইছমতে
আম্বিয়া ও মিয়ারে হক, সুন্নাত-বিদআতের সঠিক পরিচয়, বায়আতের হাকিকত।তার রচিত উর্দু বইগুলো হলো-
আল বয়ানুল ফাসিল বাইনাল হককে ওয়াল বাতিল, আল হুজাজুল ক্বাতিয়াহ
লিদাফয়িন নাহজিল খাতেয়াহ, আল খায়রুল কাসির ফি উসুলিত তাফসির, ইসলাম ওয়া ছিয়াছত, তাকফিরে
মুসলিম, চান্দ রাওয়েজাঁ, ফয়ুজাতে আহমদিয়া, সহিহ বুখারির ব্যাখ্যাগ্রন্থ ফয়জুল জারি ও মিশকাতুল
মাসাবিহের ব্যাখ্যাগ্রন্থ।
দ্বীনি আন্দোলন
বাংলাদেশে সর্বাধিক প্রভাব রাখা আলেমদের একজন ধরা হয় আল্লামা শফীকে। দেশে অনৈসলামিক কর্মকাণ্ড
বন্ধ ও নাস্তিকদের শাস্তির দাবিতে তাঁর প্রতিষ্ঠিত ‘হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’ নামে একটি অরাজনৈতিক
সংগঠন বাংলাদেশে সর্বাধিক প্রভাব তৈরি করে। তিনি ১৯ জানুয়ারি ২০১০ সালে হাটহাজারী মাদরাসার এক
সম্মেলনে ‘হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৩ সালে দেশে
নাস্তিক্যবাদী তৎপরতায় মুসলিম জনসাধারণের উদ্বেগ বৃদ্ধি পেলে একটি খোলা চিঠি লিখে জাগরণ সৃষ্টি করেন
আল্লামা আহমদ শফী । ৬ এপ্রিল ২০১৩ সালে তাঁর নেতৃত্বে ইসলাম ও মহানবী সা.-এর কটূক্তিকারীদের
বিচারের দাবিতে ঢাকায় বৃহত্তম সমাবেশ হয়। অতঃপর ৫ মে ঢাকাসহ পুরো দেশ অবরোধ করা হয়। এই
আন্দোলনের মাধ্যমে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পর্যায়ের হেফাজত জাতীয় রূপ লাভ করে। আর এর মাধ্যমে
আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী আবির্ভূত হন ঈমানী আন্দোলনের সর্বপ্রধান নেতা রূপে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের
অভিভাবক থেকে হয়ে ওঠেন জাতির আশার আলো। এর আগে ধর্মীয় আন্দোলন রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে
বহুধা বিভক্ত ছিল। আল্লামা শাহ্ আহমদ শফীর ডাকে সবাই সব বিভক্তি ভুলে এক মঞ্চে উপস্থিত হন।
এক্ষেত্রে আল্লামা শাহ্ আহমদ শফীর দীর্ঘদিনের দলনিরপেক্ষতা ও সব দলের নেতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার
পলিসি অনেক বড় ভূমিকা রাখে।
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন
করেছেন অনেকদিন। ভারতে বাবরী মসজিদ ধ্বংসের প্রতিবাদ, ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদ, তাসলিমা
নাসরীন খেদাও আন্দোলনসহ সরকারের ফতোয়া বিরোধী আইনের বিরুদ্ধে প্রতিটি আন্দোলনে তৎকালীন
সময়ে আল্লামা শফী ছিলেন প্রথম সারিতে।
সম্মাননা ও পুরস্কার
১৯ আগস্ট ২০০১ সালে ওমরা পালনকালে হারামাইন শরিফাইনের মহাপরিচালক শায়খ সালেহ বিন আল
হুমাইদ পবিত্র কাবার গিলাফের একটি অংশ উপহার প্রদান করেন। ২০০৫ সালে জাতীয় সিরাত কমিটি
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তাঁকে ‘শ্রেষ্ঠ ইসলামী ব্যক্তিত্ব’ হিসেবে সম্মাননা ও স্বর্ণপদক দেওয়া হয়। এ ছাড়া
দেশের অসংখ্য প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন তাঁকে নানা সম্মাননা ও পুরস্কারে ভূষিত করেছে।
বিদেশ ভ্রমণ
তিনি সৌদিআরব, মালয়েশিয়া, দুবাই, কাতার, বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, ভারত, পাকিস্তান, আমেরিকা,
অস্ট্রেলিয়া, লন্ডন, সিঙ্গাপুর ইত্যাদি রাষ্ট্র সফর করেন।
ছাত্র, মুরিদ ও খলিফা
বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ইসলামি শিক্ষাকেন্দ্রের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত থাকার কারণে সারা দেশে রয়েছে তার লাখ
লাখ ছাত্র, ভক্ত, মুরীদ ও খলিফা। কওমি ধারার ৩২ হাজার মাদরাসার প্রায় প্রত্যেকটির শিক্ষকতা ও
পরিচালকের পদে রয়েছে তার অগণিত ছাত্র। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও রয়েছে তার অগণিত
ছাত্র, মুরিদ ও খলিফা। তারা ইসলামের নানা খেদমতে নিয়োজিত আছেন।
পরিবার
স্ত্রী ফিরোজা বেগমের সঙ্গে পারিবারিক জীবন গড়েন আল্লামা আহমদ শফী। দুই ছেলে ও তিন মেয়ের জনক
তিনি। বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ পাখিয়ারটিলার মাদরাসার পরিচালক। ছোট ছেলে মাওলানা আনাস মাদানি
হাটহাজারী মাদরাসার সাবেক সহকারী শিক্ষাসচিব এবং হেফাজতে ইসলামের প্রচার সম্পাদক। মেয়েদের সম্ভ্রান্ত
মুসলিম পরিবারে পাত্রস্থ করেছেন।
ইন্তেকাল
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ইং শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় আল্লামা শাহ আহমদ শফী বার্ধক্যজনিত কারণে ঢাকার আজগর
আলী হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। তিনি দীর্ঘদিন যাবত বার্ধক্যজনিত দুর্বলতার পাশাপাশি ডায়াবেটিস, উচ্চ
রক্তচাপ ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। পরদিন শনিবার বাদ যোহর হাটহাজারী মাদ্রাসায় তার বিশাল জানাযা
অনুষ্ঠিত হয়। জানাযায় ইমামতি করেন তার বড় ছেলে মাওলানা ইউছুফ মাদানি। স্থান সংকুলান না হওয়ায়
তার লাশ ডাকবাংলোতে নিয়ে আসা হয়। পুরো হাটহাজারীর সব প্রবেশ পথে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ
করে দিতে প্রশাসন বাধ্য হয়। ৪ উপজেলায় ১০ প্লাটুন বিজিবি, র্যাব ও পুলিশ এবং ৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট
মোতায়েন করা হয়। জানাযা শেষে তাকে হাটহাজারী মাদ্রাসা ক্যাম্পাসের ভেতরে বায়তুল আতিক জামে
মসজিদের সামনের কবরস্থানে দাফন করা হয়। মিডিয়া এটিকে বাংলাদেশের স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জানাযা
বলে অবহিত করে।