কোরআনে বর্ণিত মকবুল ৩টি দোয়া

শায়খ আহমাদুল্লাহ

কোরআনে হাকিমে অনেক দোয়াই বর্ণিত হয়েছে। তার মধ্যে তিনটি বিশেষ দোয়া আছে, যেগুলো আল্লাহ তায়ালা কবুল করেছেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। অবাক করা বিষয় হলো, মহান মালিকের মঞ্জুরকৃত সেই দোয়াগুলোর প্রত্যেকটিই জীবনঘনিষ্ঠ। প্রথমটি হলো রোগমুক্তি, দ্বিতীয়টি বিপদমুক্তি আর তৃতীয়টি সন্তানলাভের জন্য।

প্রথম. আল্লাহর নবী আইয়ুব (আ.) এর দোয়া
উচ্চারণ : আন্নি মাচ্ছানিআদ্দুররু ওয়া আনতা আরহামুর রাহিমিন।

‘আমি দুঃখকষ্টে পতিত হয়েছি এবং আপনি দয়াবানদের চাইতেও সর্বশ্রেষ্ঠ দয়াবান।’ (সূরা আম্বিয়া : ৮৩)।
এই দোয়া প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘অতঃপর আমি তার (সেই) আহ্বানে সাড়া দিলাম এবং তার দুঃখকষ্ট দূর করে দিলাম এবং তার পরিবারবর্গ ফিরিয়ে দিলাম, আর তাদের সঙ্গে তাদের সমপরিমাণ আরও দিলাম আমার পক্ষ থেকে কৃপাবশত, আর এটা ইবাদতকারীদের জন্য উপদেশস্বরূপ।’ (সূরা আম্বিয়া : ৮৪)।

দ্বিতীয়. আল্লাহর নবী ইউনুস (আ.) এর দোয়া
উচ্চারণ : লা-ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন।

‘তুমি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই; তুমি নির্দোষ, আমি নিজের প্রতি অবিচারকারীদের অন্তর্ভুক্ত।’ (সূরা আম্বিয়া : ৮৭)। এই দোয়া বর্ণনার পর আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর আমি তার (সেই) আহ্বানে সাড়া দিলাম এবং তাকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিলাম। আমি এমনিভাবে বিশ্ববাসীদের মুক্তি দিয়ে থাকি।’ (সূরা আম্বিয়া : ৮৮)।

তৃতীয়. জাকারিয়া (আ.) এর দোয়া। তার দোয়ার দুইটি অংশ কোরআনের ভিন্ন দুইটি জায়গায় বর্ণিত হয়েছে।

(ক) উচ্চারণ : রব্বি লা তাযারনি ফারদাঁও ওয়া আনতা খাইরুল ওয়ারিসিন।
অর্থ : হে আমার পালনকর্তা, আমাকে একা রেখো না। তুমি তো উত্তম ওয়ারিশ। (সূরা আম্বিয়া : ৮৯)।
এই দোয়া কবুল হওয়া প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘অতঃপর আমি তার দোয়া কবুল করেছিলাম, তাকে দান করেছিলাম ইয়াহইয়া এবং তার জন্য তার স্ত্রীকে প্রসবযোগ্য করেছিলাম।’ (সূরা আম্বিয়া : ৯০)।

(খ) একই বিষয়ে তিনি আরেকটি দোয়া করেছিলেন। সেই দোয়ার পরপরই আল্লাহর পক্ষ থেকে ফেরেশতারা এসে তাকে দোয়া কবুলের সুসংবাদ দিয়েছিলেন, যা সূরা আলে ইমরানের ৩৯ নং আয়াতে বিধৃত হয়েছে। দোয়াটি হলোÑ

উচ্চারণ : রব্বি হাবলি মিল্লাদুনকা যুররিয়্যাতান তয়্যিবাতান ইন্নাকা সামীউদ্দুআ।
‘হে আমার পালকর্তা! তোমার নিকট থেকে আমাকে পূতপবিত্র সন্তান দান করোÑ নিশ্চয় তুমি প্রার্থনা শ্রবণকারী।’ (সূরা আলে ইমরান : ৩৮)।

দোয়ার উপরোক্ত ভাষ্যগুলোর গ্রহণযোগ্যতা যেহেতু পরীক্ষিত, সুতরাং রোগ বা বিপদমুক্তি কিংবা সন্তান লাভের জন্য এসব দোয়ার মাধ্যমে প্রার্থনা করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.