পাঁচ প্রকার নামাজী

বান্দা যখন আল্লাহর সামনে নামাজের জন্য দাঁড়ায়, তখন তারা সাধারণত পাঁচ প্রকার অবস্থায় নামাজ আদায় করে থাকে।মূলত নামাজে খুশুখুজু তথা মনোযোগের উপর ভিত্তি করেই এই অবস্থাসমূহের পার্থক্য নির্ণয় করা যায়।

নামাজের এই পাঁচ অবস্থা তথা পাঁচ প্রকার নামাজীরা নিম্নরূপ:

 

১. অমনোযোগী

প্রথম প্রকার নামাজী নামাজের মধ্যে সম্পূর্ণভাবে অমনোযোগী থাকে। সে অনেকটা অবহেলা এবং দায়সারা ভাবে নামাজ আদায় করে। এমনকি সে তার নামাজের অবস্থান সম্পর্কেও অর্থাৎ কিরাত, রুকু, সিজদা, বৈঠক প্রভৃতি সম্পর্কে সচেতন ও নিশ্চিত থাকেনা।

 

২. বিভিন্ন চিন্তায় মগ্ন

এরা যথাযথভাবেই নামাজ আদায় করে কিন্তু নামাজের মধ্যে তারা অন্য চিন্তায় মগ্ন থাকে। যদিও তারা যথাযথভাবে নামাজের মধ্যে কিরাত, রুকু, সিজদা, বৈঠক প্রভৃতি আদায় করে তবুও তাদের নামাজে খুশু খুজু  থাকেনা এবং নামাজের ভেতর তারা বাইরের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চিন্তা করতে থাকে।

 

৩. প্রচেষ্টাকারী

এই প্রকার নামাজীরা যথাযথভাবে নামাজ আদায়ের চেষ্টা করে। নামাজের মধ্যে তারা শয়তানের বিভিন্ন ওয়াসওয়াসার সাথে মোকাবেলা করে নামাজের ভেতর তাদের মনোযোগ রাখার জন্য অব্যাহতভাবে চেষ্টা চালায়। যদি নামাজের বাইরের ভিন্ন বিষয়ে তাদের মনোযোগ চলে যায়, সচেতন হওয়ার সাথে সাথে তারা বাইরের চিন্তা ঝেড়ে ফেলে নামাজের ভেতরে মনোযোগ দেয়।

 

৪. মনোযোগী

এই নামাজীরা তাদের মনোযোগকে নামাজের মধ্যে ধরে রাখে। তারা যখন নামাজ আদায় করে, তখন তারা বাইরের সব চিন্তা থেকে নিজেদের মুক্ত করে শুধু নামাজের দিকেই মনোযোগ দেয়। তাদের তখন একমাত্র চিন্তা থাকে, উত্তম ও যথাযথভাবে নামাজ আদায় করা।

 

৫. আত্মসমর্পিত

আত্মসমর্পিত নামাজীরা তাদের নামাজ যথাযথ ও উত্তম ভাবে আদায় করে। পাশাপাশি তারা তাদের নামাজে তাদের প্রভু আল্লাহর দরবারে হাজির হয়। তারা এমনভাবে নামাজ আদায় করে, যেন তারা আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করছে। অন্যকোন বিষয় নয়, তাদের লক্ষ্যই হয় আল্লাহর সাথে সাক্ষাত। অন্য আর সকলের নামাজের সাথে তাদের নামাজের পার্থক্য আকাশ ও পাতালের।

এই পাঁচ প্রকার নামাজী তাদের নামাজের উপর ভিত্তি করে পাঁচ প্রকার পরিণতির মুখোমুখি হয়। প্রথম প্রকারের নামাজীরা তাদের অমনোযোগের জন্য শাস্তির অধিকারী হয়। দ্বিতীয় প্রকারের নামাজীরা আল্লাহর কাছে কৈফিয়ত দেওয়ার জন্য দায়ী থাকে। তৃতীয় প্রকারের নামাজীরা তাদের চেষ্টার জন্য ক্ষমা প্রাপ্ত হয়। চতুর্থ প্রকারের নামাজীরা তাদের মনোযোগের জন্য আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কৃত হয়। এবং পঞ্চম প্রকারের নামাজীরা তাদের আত্মসমর্পনের জন্য আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত হয়।

যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পিত অবস্থায় নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে পারে, সেই মূলত যাবতীয় সাফল্য অর্জন করতে পারে। যার প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট, সকলে তার অকল্যাণ চাইলেও সর্বশেষে সেই প্রকৃত সাফল্য ও কল্যাণ লাভ করতে পারে।

আল্লাহ আমাদেরকে তার প্রতি আত্মসমর্পিত অবস্থায় নামাজ আদায়ের তৌফিক দান করুন।

এবাউট ইসলাম অবলম্বনে মুহাম্মদ আল বাহলুল 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *