বিশ্বখ্যাত দাঈ মাওলানা কালিম সিদ্দিকীর ৩টি অমূল্য নসিহত

হাজার হাজার মানুষ যে মহান ব্যক্তির হাত ধরে ইসলামের সুশীতল ছায়ার নিচে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি মাওলানা কালিম সিদ্দিকী। একজন নিভৃতচারী কর্মবীর। ইসলামের একনিষ্ঠ দাঈ। অসংখ্য দাঈদের প্রেরণার বাতিঘর। অমুসলিমদের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছানোর ক্ষেত্রে এক অনন্য ব্যক্তিত্ব।

ব্যক্তি জীবনে তিনি মুফাক্কিরে ইসলাম আল্লামা আবুল হাসান আলী নদভী রহ. দ্বারা প্রভাবিত। তিনি নদওয়াতুল ওলামাতে দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন। তিনি মোফাক্কিরে ইসলাম আল্লামা আবুল হাসান আলী নদভি রহ. এবং হজরত জাকারিয়া রহ. এর খলিফা।

বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী এ মাওলানা নিজ গ্রাম ফুলাতে একটি মাদরাসা পরিচালনা করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন মেয়াদি কোর্সের আয়োজন করেন দায়ীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য।

জামইয়্যাতি ইমাম ওয়ালীউল্লাহ ট্রাস্ট নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছেন। এটি একটি দাওয়াতি সংগঠন। বিভিন্ন দাতব্য কার্যক্রমও এ সংঘের আওতায় পরিচালিত হয়। ভারতজুড়ে অসংখ্য মাদরাসা ও স্কুল পরিচালনা করে থাকেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনা করার জন্য বিভিন্ন প্রাদেশিক শহরে আছে কেন্দ্রীয় অফিস।

উর্দু ভাষায় ‘আরমুগান’ নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করে থাকেন মাওলানা কালিম সিদ্দিকী। এছাড়া ‘সর্বশান্তি’ নামে হিন্দিতে এবং ‘আল খাইর’ নামে আরবিতে দুইটি পত্রিকা সম্পাদনা করে থাকেন। ওয়ার্ল্ড পিস অর্গানাইজেশন নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছেন। এ সংগঠনের মাধ্যমে শান্তি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন।

একাধারে তিনি তুখোড় বাগ্মী, দক্ষ সম্পাদক ও লেখক এবং অভিজ্ঞ শিক্ষক।  ইসলামের এ মহান দাঈ দাওয়াত ও তাবলিগ এর সঙ্গে জড়িত সকল দাঈদের উদ্দেশ্যে দাওয়াতি মেহনত পরিচালনা করার জন্য কয়েকটি নসিহত করেছেন।

নসিহত ১
দীনের দাওয়াত দানের ক্ষেত্রে হিম্মত হারাব না। একজন অমুসলিমকে কিভাবে দাওয়াত দিবো, উনি কী মনে করবেন, আমি যদি তাকে দাওয়াত দিই সে যদি দাওয়াত গ্রহণ না করে, দাওয়াত দিতে গেলে সে যদি পাল্টা প্রশ্ন করে তার উত্তর দিতে পারবো তো, এসব প্রশ্নকে প্রশ্রয় না দেয়া।

যাকে দাওয়াত দিতে যাবো তার সামনে সরাসরি কুরআনুল কারীমের আয়াত পেশ করে দেয়া। কুরআনের নূর তার মধ্যে প্রবেশ করার সুযোগ করে দেয়া। জটিল কোন আলোচনায় না যাওয়া। সাদাসিদাভাবেই দাওয়াত পেশ করা।

নসিহত ২
আল্লাহ তা‘আলা কুরআন কারীমে বলেছেন, হে নবী! আপনি আপনার রব্বের পক্ষ থেকে যা নাযিল করা হয়েছে তা প্রচার করুন। (সুরা মায়িদাহঃ ৬৭)

এই আয়াতে কারিমার মাধ্যমে বোঝা যায় যে, দাওয়াত দিতে হবে কুরআন কারীমের মাধ্যমে। অন্য কিছু দিয়ে যদি দাওয়াত দেয়া যেত, তাহলে আল্লাহ তা‘আলা সেটা বলে দিতেন।

আমাদের মনে ভুল ধারণা, দাওয়াত দিতে গেলে বুঝি অন্য ধর্মগ্রন্থ সম্পর্কেও জানতে হবে। সেটা জানলে ভাল, না জানলে বসে না থেকে কুরআন কারীমকে অবলম্বন করেই নেমে পড়া।

নসিহত ৩
দাওয়াতের ক্ষেত্রে দুনিয়াবি আসবাব দ্বারা প্রভাবিত না হওয়া। যাকে দাওয়াত দিবো তার অর্থ-যশ-খ্যাতি ইত্যাদি দ্বারা প্রভাবিত না হওয়া। উনি এত বড় পদের অধিকারি, তিনি এত বিখ্যাত মানুষ তাকে দাওয়াত দিই কিভাবে? তিনি কি আমার চেয়ে কম জানেন? এ ধরনের কোন দ্বিধায় না ভোগা। হিম্মত করে দাওয়াত পেশ করে দেয়া। বাকীটুকু আল্লাহর হাতে।

সূত্র: মাসিক ঊর্দু পত্রিকা ‘আরগুমান’ (গ্রন্থনা ও সম্পাদনা: রকিব মুহাম্মদ )

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.