সম্প্রতি ‘ইভ্যালী ইকমার্স’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান নিয়ে মিডিয়ায় এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। আমাদের কাছেও অনেকে জানতে চেয়েছেন এবিষয়ে আলেমদের অভিমত কী।
আমাদের দেশে ইভ্যালী যখন তার কার্যক্রম শুরু করে তখন মানুষ আমাদের কাছে মৌখিকভাবে এবং লিখিতভাবে জানতে চায়। মানুষ আমাদেরকে তাদের প্রতারণা সম্পর্কে যা বলে আমরা তাদের ওয়েব সাইটে এবং সাধারণভাবে প্রকাশিত বিজ্ঞাপনে সেগুলোর কিছু কিছু অংশ না পেয়ে প্রশ্নকারীদেরকে পাল্টা জিজ্ঞেস করি, তাদের প্রতারণাপূর্ণ বিজ্ঞাপনগুলো কোথায়। তারা আমাদেরকে তাদের ফেসবুকের লিঙ্ক দেন। আমরা সেখানে ইভ্যালীর চটকদার বিজ্ঞাপনগুলো দেখতে পাই। মানুষ সাধারণত কোনো প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানার জন্যে ওয়েবসাইটে ঢুকে। ইকমার্সগুলোর পরিচয় ওয়েবসাইটে থাকে। তো ইভ্যালী তার কিছু পরিচয় ওয়েব সাইটে দিল আর ফেসবুকে দিল তার আরো কিছু চটকদার পরিচয়- এ থেকে বোঝা যায় যে তারা কিছু জিনিস কিছু মানুষ থেকে লুকাতে চায়। এটা শরীয়া পড়াশোনা করা ছাত্র কেন যে কোনো বিবেকবান মানুষই বুঝতে পারার কথা যে, দাল মে কুছ কালা হ্যাঁয়।
সাধারণত আমাদের দেশের ইকমার্সগুলোর পদ্ধতি, গ্রাহক পণ্য কেনার পর মূল্য পরিশোধ করবে। আগে থেকে তাদের কাছে গ্রাহকের একাউন্টে টাকা জমা রাখার কোনো নিয়ম নেই। কিন্তু এক্ষেত্রে ইভ্যালী বিভিন্ন সময় গ্রাহকদেরকে চটকদার অফার করে প্রলোভন দেখায় এবং ইভ্যালীর নিকট অগ্রিম টাকা জমা রাখতে বলে।
এর দৃষ্টান্ত হল এমন যে, আপনি একটা দোকানে কোনো কিছু কিনতে যাবেন। দোকানদার আপনাকে বলল, আমার এখানে পণ্য কিনতে হলে আমার কাছে আগে আপনার টাকা জমা রাখতে হবে। সেই জমা টাকা থেকে আপনি অমুক তারিখে অত দিন পরে আমার মাধ্যমে পণ্য এই এই সুবিধাসহ ভোগ করবেন। বলা বাহুল্য, এমন কারবার সাধারণভাবে কেউ মেনে নিবে না। কিন্তু আশ্চর্য ইভ্যালী এই কাজটিই দেশে প্রকাশ্যে দিনের পর দিন করে যাচ্ছে। মাত্র ৫০ হাজার টাকার পরিশোধিত মূলধন নিয়ে কিভাবে একজন মানুষ দেশের লক্ষ লক্ষ জনগণের কোটি কোটি টাকা জমা করছে দেশের বাণিজ্যমন্ত্রণালয়-অর্থমন্ত্রণালয়সহ এত এত নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার নাকের ডগায় এটি ক্ষতিয়ে দেখার অবশ্যই প্রয়োজন আছে।
শরীয়তে জায়েজ কি নাজায়েজ সেই প্রশ্ন পরে। যে প্রতিষ্ঠান প্রথমেই একথা বলে, পণ্য কেনার আগে এত টাকা দিন। পরে পণ্য দিব। সেই কোম্পানি পরিষ্কার এক ধাপ্পাবাজ কোম্পানি। ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে এ কোম্পানির পদ্ধতি ভুল। শরীয়তও কখনো এজাতীয় কোম্পানির কারবারকে বৈধ বলে না। এই কোম্পানির সাথে লেনদেনকারী ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে, কোম্পানির অ্যাপ, ওয়েব সাইট, বিজ্ঞাপন পড়ে আমাদের কাছে এ কথা স্পষ্ট হয়েছে যে, এই কোম্পানির কার্যক্রম শরীয়তের দৃষ্টিতে কোনো ব্যবসার মধ্যে পড়ে না। এ কথা আমরা আরো এক বছর আগেই বলেছি।
কি কারণে ইভ্যালীর কার্যক্রমকে শরীয়তের দৃষ্টিতে নাজায়েয বলা হবে ?
ইভ্যালীর অনেক কারবারেই রিবা তথা সুদ বিদ্যমান। অনেক ক্ষেত্রে তারা বলে, আমাদের কাছে টাকা জমা রাখার এত দিন পর অমুক কোম্পানির পণ্য খরিদে আপনি এত টাকা ডিসকাউন্ট বা ক্যাশব্যাক পাবেন। প্রশ্ন হচ্ছে, অগ্রিম টাকা জমা নেয়ার এ কৌশল কেন? সাধারণ অর্থনীতির দৃষ্টিতে অনেকে এখানে প্রতারণার ফাঁক খুঁজে পাবেন। আর শরীয়তের দৃষ্টিতে এটা এক প্রকার রিবা (সুদ)ও বটে। কারণ মানুষের টাকা নিজের কাছে ধার নিয়ে এর জন্য অতিরিক্ত সুবিধা দেয়ার চুক্তি করা হচ্ছে, যা সুস্পষ্ট নাজায়েয। তাদের কাজকর্মের প্রতারণার কথা যদি আপনি বাদও দেন তারপরও এখানে এই সুদ পাওয়া যাচ্ছে।
এই জাতীয় কারবার নাজায়েয হওয়ার আরো দলীল রয়েছে। যেমন, ইসলাম চায় কেনাবেচার সময় ক্রেতা বিক্রেতা মূল্য ও পণ্য প্রাপ্তির মাধ্যমে একে অপর থেকে স্বাধীন হয়ে যাবে। কিন্তু ইভ্যালী জাতীয় প্রতিষ্ঠান তাদের প্রতারণাপূর্ণ অফারগুলোর মাধ্যমে ক্রেতাকে স্থায়ীভাবে আটকে রাখতে চায়। তারা এত এত পার্সেন্ট ক্যাশব্যাক ঘোষণা করে কিন্তু সেই ক্যাশব্যাকের টাকা গ্রাহকের হাতে তুলে দেয় না। বরং নিজেদের কাছে জমা রেখে অনেক দিন পর তার অংশ বিশেষের মাধ্যমে বিভিন্ন শর্তে বিভিন্ন জিনিস খরিদ করতে বলে। এধরণের শর্ত ও কৌশল ইসলামী শরীয়তে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
আমাদের দেশে অনেক কোম্পানি বিশাল বিশাল ক্যাশব্যাকের কথা বলে। যেমন, ৫০% ক্যাশব্যাক, ১০০% ক্যাশব্যাক। এসব ক্যাশব্যাক সম্পর্কেও অনেকে জানতে চান। আসলে এসব বড় বড় ক্যাশব্যাকগুলো এক ধরণের প্রতারণা। তবে মানুষ সেগুলো মনে করে এটা তার ভাগ্য পরীক্ষা। স্ক্র্যাচকার্ড ঘষে ক্যাশব্যাক পেতে পারে আবার নাও পেতে পারে। এসব ক্ষেত্রেও প্রশ্ন থেকে যায়, একটা কোম্পানি একজন গ্রাহককে কেন ভাগ্যপরীক্ষায় নিপতিত করবে? সে তো সরাসরি গ্রাহককে ডিসকাউন্ট দিতে পারে। যত টাকা সে লটারির মাধ্যমে দিত তত টাকা ভাগ করে সকল গ্রাহককে ডিসকাউন্ট দিক। এতে ভোক্তা সমাজ বেশী উপকৃত হবে।
ইভ্যালীর ক্যাশব্যাক কতটা শরীয়ত সম্মত?
ইভ্যালী তো অনেক আগেই প্রতারণার সকল স্তর অতিক্রম করে গেছে। তারা যখন নিশ্চিত ১০০% ১৫০% ক্যাশব্যাক অফার দিয়েছে তখনই তো গণমাধ্যম এবং নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাগুলোর নড়েচড়ে বসা উচিত ছিল। এ কথা কি কেউ বুঝে না ১০০% ক্যাশব্যাকের অর্থ আপনি এক লাখ টাকা দিয়ে পণ্য কিনলেন আর সেই এক লাখ টাকা বিক্রেতা আপনাকে ফেরত দিয়ে দিবে। আর দেড় শ পার্সেন্ট ক্যাশব্যাক দেয়ার মানে হল আপনার এক লাখ টাকার সাথে আরো ৫০ হাজার টাকা অতিরিক্ত পাবেন। এ অংশকে ক্যাশব্যাক নাম দেয়া হলেও ব্যাক হচ্ছে না, বরং নিজের থেকে দেয়া হচ্ছে। প্রশ্ন হল, ইভ্যালী কি কোনো দাতব্য প্রতিষ্ঠান না গ্রাহকদের সাথে তার নিকটাত্মীয়তা আছে? আর তাদের পূর্বপুরুষরা কি বিলিয়নিয়ার ছিল ? তাদের তো কয়েক বছর ব্যবসা করে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হওয়ার কথা না যে গ্রাহককে ফ্রিতে লাখ লাখ টাকা বিলিয়ে দিবে? এখানেই আমাদের আক্ষেপ যে এক শ্রেণীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের এ ধরণের জঘন্য কর্মকাণ্ডগুলোর ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়-অর্থমন্ত্রণালয় সজাগ থাকে না কেন? যাই হোক, ইসলামের দৃষ্টিতে নিশ্চিত ১০০% ক্যাশব্যাক বা তার চেয়ে বেশী ক্যাশব্যাকের কথা বললে এটা কোনো বেঁচাকেনাই হয় না। শরীয়তের দৃষ্টিতে এটা হিবা তথা ফ্রিতে বিনা পয়সায় দানের আওতায় পড়ে। কিন্তু বিভিন্ন শর্তের কারণে সেটাও বৈধ হয় না।
যদি আপনি ১০০ পার্সেন্ট ১৫০% পর্যন্ত ক্যাশব্যাক দেন তার মানে আপনি মূল পুরো টাকা বা তার চেয়ে বেশী ফেরত দিলেন। তো টাকা নেওয়ারই দরকার কী ছিল, শুরুতেই পণ্যটা তাকে দিয়ে দিতেন। আপনার যদি পুঁজি থাকে, আপনি যদি পুঁজি থেকে ক্যাশব্যাক দিয়ে থাকেন তাহলে শুরুতে টাকাটা নাই নিতেন। আপনি এমনি দিয়ে দিতেন। আপনার প্রতিষ্ঠান ব্যবসা প্রতিষ্ঠান না হয়ে দানের প্রতিষ্ঠান হত। নাম দিলেন বেচাকেনা কিন্তু এখানে কাজ হল উল্টা। আপনি পণ্যও দিচ্ছেন আবার মূল্যও ফেরত দিচ্ছেন।
এমন অস্বাভাবিক পদ্ধতিতে লাভ দেয়ার কি কি ক্ষতি?
আমরা এককভাবে শুধু ইভ্যালী সম্পর্কেই বলছি না বরং এজাতীয় যে কোনো প্রতিষ্ঠানের কথাই বলছি। দেশে ব্যবসার নাম দিয়ে এ জাতীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের থাকা উচিত নয়। এতে করে সমাজের মূলধারার ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মূলধারার ব্যবসায়ীদের রক্ষা করতে এবং তাদের বিশাল কর্মীদের রক্ষা করতে দেশের দায়িত্বশীলদেরকে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে।
ইভ্যালিসহ এ জাতীয় যেসব ব্যবসা মানুষকে অস্বাভাবিক অফারের প্রলোভন দেয় তাদের সবকটিকেই গোড়াতেই থামিয়ে দেওয়া উচিত। উচিত এ জাতীয় ভিত্তিহীন চটকদার ব্যবসাকে আইন করে নিষিদ্ধ করা। আমাদের দেশের অনেক মানুষ স্বল্প শিক্ষিত ও কিছুটা হুজুগ দ্বারা আক্রান্ত। প্রলোভন সৃষ্টিকারী ব্যবসার কর্তারা এটাকেই বড় রকম সুযোগ ও সুযোগের ক্ষেত্র মনে করে। তাই আইন করে ও গোঁড়া থেকে সরকারিভাবে সতর্কীকরণের পদক্ষেপ চালু থাকা দরকার। এক্ষেত্রে কঠোর নীতি প্রয়োগে গড়িমসি করলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয় লাখ লাখ সাধারণ পর্যায়ের গ্রাহকদের। দেশে আইন করে বিজ্ঞাপনের ভাষার সীমা নির্ধারণ দিতে হবে। এবং আইন কঠোরভাবে পালন করাতে হবে। ঠিক করে দিতে হবে কতটুকু দেওয়া যাবে কতটুকু দেওয়া যাবে না কী ধরনের ভাষা ব্যবহার করা যাবে। নয়তো এ ধরণের বিজ্ঞাপনে প্রভাবিত হয়ে সাধারণ মানুষ একদিকে যেমন প্রতারিত হবে অপরদিকে নাজায়েয কারবারে জড়িয়ে পড়বে। কিনবে হালাল পণ্য নিজের হালাল অর্থ দিয়ে কিন্তু পদ্ধতি ভুল হওয়ার কারণে গোনাহে লিপ্ত হয়ে যাবে।
সার কথা
এ জাতীয় প্রতিষ্ঠানের কারবারে কোনো ক্ষেত্রে রিবা তথা সুদ পাওয়া যায়, কোথাও কিমার তথা জুয়া ও প্রতারণা পাওয়া যায়। অনেক ক্ষেত্রে এখানে হাদীসে নিষিদ্ধ ‘বাইউন ও শরতুন’ ( ক্রয়বিক্রয় চুক্তির সাথে অপ্রাসঙ্গিক শর্ত) পাওয়া যায়। এসব কারণে এ জাতীয় প্রতিষ্ঠানের সাথে লেনদেন করা নাজায়েয।
অনেক বিশেষজ্ঞ ইভ্যালীর কার্যক্রমকে এমএলএমের মত মনে করছেন। ইভ্যালী ও এমএলএমের মধ্যে পদ্ধতিগত পার্থক্য রয়েছে। তবে গ্রাহক প্রতারণার দিক থেকে এটা আরো জঘন্য।
সবশেষে একটা কথাই, ইসলাম হচ্ছে স্বাভাবিক কল্যাণকর দ্বীন। ব্যবসা বা কারবার যুগ যুগ থেকে চালু ছিল। ইসলাম আসার আগে থেকেই ব্যবসা চলে আসছে। ইসলাম ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ঐসব নীতি ও বিধান বহাল রেখেছে যা কল্যাণকর। সাথে সাথে আরো বহু এমন নিয়ম নীতিও ইসলাম আরোপ করেছে, যা ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের স্বার্থ রক্ষা করে। অন্যদিকে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ইসলাম অনেক বিধিনিষেধও আরোপ করেছে, যেগুলোর সবটাই ক্রেতা অথবা বিক্রেতা এবং ক্ষেত্র-বিশেষে উভয়ের স্বার্থপরিপন্থী। সুতরাং মুসলমানদেরকে তাদের দৈনন্দিন কারবারে ইসলামী শরীয়ার নীতি অনুসরণ করতে হবে। তাতেই তারা এ জাতীয় ধোঁকা ও প্রতারণা থেকে বাঁচতে পারবে।
আল্লাহ আমাদের বোঝার ও আমল করবার তাউফিক দিন। আমীন, ইয়া রাব্বাল আলামীন।
-লেখক
পরিচালক, মারকাযুদ দাওয়াহ আল ইসলামিয়া, ঢাকা
গুরুত্তপূর্ণ পোষ্ট
জাযাকাল্লাহ খাইর
প্রথম ব্যাপার টা মিথ্যা চটক দার বিজ্ঞাপন দেয় বিস্তারিত বলেনা এটা যারা অশিক্ষিত তারাই বলতে পারে।২য় ত কাস্টমার আর ক্রেতা যদি নগদ টাকা দিয়ে পরে পন্য পেয়ে সন্টুস্ট থাকে তাহলে সমস্যা কোথায়?? ক্যাশ ব্যাকের টাকা কিভাবে সুদ হয়?? কুরআন হাদিসের আলোকে যুক্তি চাই?? ইভ্যালি কাউকে ঠকায়নি।।হাম হয়তো ক্যাশ ব্যাক নাজায়েজ হতে পারে এমন তোহ টিভি মোবাইল ইন্টারনেটও এক সময় নাজায়েজ ছিল পরেতোহ সভ জায়েজ হয়ে গেল।
বাকি করাও তোহ তাহলে নাজায়েজ হভে।
আমি সহ আরোঅনেকেই আছে আমরা প্রতারিত হইনাই জুয়া ও খেলিনাই যে লটারির মত হয়ত পেলাম নাহয় হারালাম।।।পন্য পেতে হয়ত কিছুটা লেট হইছে সেটা তোহ বাকি ক্রয় করলেও হয়
apne hoyto protareto honne onno kew to hote pare
৪/৫ মাস বাকী থাকবে?
https://www.youtube.com/watch?v=GhSjITZncS8
Please know details about the procedure of the company then give the gates.
আর্টিকেলটিতে যেই তথ্যগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে তার বেশিরভাগ তথ্যই ভুল তথ্য। সম্পূর্ন বিষয় ভালভাবে না জেনে এমন লেখা প্রকাশ করা ঠিক হয়নি।
১) এখানে বলা হয়েছে সাধারণত ইকমার্সগুলো পণ্য কেনার পর মূল্য পরিশোধ করে থাকে এবং এভাবে আগে থেকে টাকা নেয়ার কোন নিয়ম নেই, এটি ভুল। বেশিরভাগ ইকমার্সেই আগে পেমেন্ট এর ব্যবস্থা আছে এবং সাথে সাথে পণ্য পাওয়ার পর টাকা দেয়ার ব্যবস্থা দুটাই আছে, এবং পরে টাকা দেয়ার সিস্টেমটি লিমিটেড।
২) তাদের পরিশোধিত মূলধন ৫০ হাজার টাকা নয়, বরং ১ কোটি টাকা।
৩) তারা শুধু কোটি কোটি টাকা জমা করছে এমন নয়। তারা গ্রাহক থেকে টাকা নিয়ে অর্ডার নিচ্ছে এবং সেই টাকা বিভিন্ন কোম্পানিকে দিয়ে তাদের থেকে পন্য কিনে ডেলিভারি দিচ্ছে।
৪) আগে টাকা দিন পরে পন্য দিব এমন বললেই সেই কোম্পানি ধাপ্পাবাজ হবে কেন? ধাপ্পাবাজ হওয়ার জন্য নিশ্চই কোন অপরাধ থাকতে হবে।
৫) আগে টাকা জমা নিয়ে পণ্যে ডিস্কাউন্ট বা ক্যাশব্যাক দিলে এটা সুদ হবে কেন।
৬) ইভালি ১০০% ক্যাশব্যাক দেয়া মানে এই নয় যে তারা সেটা নিজের পকেট থেকে দিচ্ছে অথবা ফ্রিতে দিচ্ছে। এটা দাতব্য প্রতিষ্টান হবে কেন। এটা তাদের বিজনেস মডেল।
৭) ব্যবসায়ীরা এর মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেনা, বরং ব্যবসায়ীদের জন্য এটি একটি প্লাটফরম হয়েছে। তারা এখানে সহজে পণ্য বিক্রয় করতে পারছে। এবং গ্রাহকও উপকৃত হচ্ছে।
৮) এখানে জুয়ার সুযোগটা কোথায়।
….. আরো আছে।
মূলত এখানে যে বিষয়টিকে হাইলাইট করা হয়েছে সেটি হচ্ছে ইভ্যালি কিভাবে সাধারণ মার্কেট থেকে এত কম দামে দিচ্ছে। আসলে একটি পণ্য মূল কোম্পানি যেই দামে বিক্রি করে এবং গ্রাহক যেই দামে ক্রয় করে এর মধ্য অনেক বেশি পার্থক্য থাকে। যার কারণ হল এই পন্য গ্রাহকের কাছে আসার আগে অনেক হাত পার হয়ে অনেক জায়গা অতিক্রম করে আসে, এখানে বিজ্ঞাপন খরচ, প্রদর্শনি খরচ, ইত্যাদি আরো বিভিন্ন খরচ আছে। ইভ্যালি সরাসরি মূল প্রস্তুতকারী কোম্পানি হতে সরাসরি গ্রাহকের কাছে পৌছে দিচ্ছে এবং একসাথে অনেক পণ্য কিনছে যার ফলে এদের অনেক কম ক্রয়মূল্য পড়ছে, শুধু এটি না, এখানে আরো বিভিন্ন বিষয় এবং ক্যালকুলেশন আছে, সবকিছু লিখে বুঝানো সম্ভব না।
আসলে ইভ্যালির বিজনেস মডেল বাংলাদেশের মানুষের কাছে সম্পূর্ণ অপরিচিত এবং নতুন। যার ফলে মানুষ বুঝতে পারছেনা কিভাবে তারা ব্যবসা পরিচালনা করছে, তাই মানুষ তাদেরকে প্রতারক মনে করছে।
এখানে দলিল সহ আরো গবেষণমূলক লিখার প্রয়োজন ছিল এবং জায়েজ পদ্ধতিগুলোও বাই সলমের ভিত্তিতে উল্লেখ করার প্রয়োজন ছিল।
Asol Kota bolle Karo Longi Tagbena