মুফতী আবুল হাসান শামসাবাদী
যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগ করা নিষেধ
হাদীস : হযরত মু‘আয ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : “তিনটি অভিসম্পাতযোগ্য কাজ থেকে দূরে থাক : পানিতে থুথু ফেলা, যাতায়াতের পথে মলত্যাগ করা এবং ছায়াদার স্থানে মলত্যাগ করা।”
(সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ২৬)
মিসওয়াক করে দাঁত পরিষ্কার রাখা কর্তব্য
হাদীস : হযরত আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন : “যদি আমি মুমিনদের জন্য কষ্টকর মনে না করতাম, তবে তাদেরকে ইশার নামায বিলম্বে (রাত্রির এক-তৃতীয়াংশের পর) পড়তে এবং প্রত্যেক নামাযের সময় মিসওয়াক করতে নির্দেশ দিতাম।”
(সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৬)
অপবিত্র বিষয় থেকে দূরে থাকতে হবে
হাদীস : হযরত আবু হুরাইরা (রা) হতে বর্ণিত, তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি ইরশাদ করেছেন : “কুকুর যদি তোমাদের কারো পাত্রে লেহন করে খায় বা পান করে, তবে তা পাক করার নিয়ম এই যে, তা সাতবার পানি দ্বারা ধৌত করতে হবে, যার প্রথমবার মাটি দ্বারা ঘর্ষণ করতে হবে।”
(সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৭১)
ইস্তিঞ্জার বেগ হতে মুক্ত হয়ে ইবাদত করবে
হাদীস : হযরত ছাওবান (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন : “তিনটি কাজ কারো জন্য বিধেয় নয় :
(১) যে ব্যক্তি কোন কাওমের ইমামতি করে এবং সে তাদেরকে বাদ দিয়ে কেবল নিজের জন্য দু’আ করে। যদি কেউ এরূপ করে, তবে সে নিশ্চয়ই তাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করল।
(২) কেউ যেন পূর্ব অনুমতি ব্যতিরেকে কোন ঘরের অভ্যন্তরে দৃষ্টি নিক্ষেপ না করে। যদি কেউ এরূপ করে, তবে যেন সে বিনানুমতিতে অন্যের ঘরে প্রবেশ করার মত অপরাধ করল।
(৩) মলমূত্রের বেগ চেপে রেখে তা ত্যাগ না করার পূর্ব পর্যন্ত কেউ যেন নামায না পড়ে।”
(সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৯০)
যথাসম্ভব অবিলম্বে পবিত্রতা অর্জন করবে
হাদীস : হযরত আলী (রা) হতে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : “যে ঘরে প্রাণীর ছবি, কুকুর ও অপবিত্র লোক থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতাগণ (নতুন রহমতসহ) প্রবেশ করেন না।”
(সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ২২৭)
গোসলের দ্বারা উজুর পবিত্রতাও অর্জন হয়
হাদীস : হযরত আয়িশা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গোসল করে দুই রাক‘আত নামায আদায় করতেন। অতঃপর তিনি ফজরে নামায পড়তেন। তাঁকে আমি গোসলের পর আর নতুনভাবে উজু করতে দেখি নি।”
(সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ২৫০)
পানি না পেয়ে তায়াম্মুম করলে পূর্ণ পবিত্রতা হাসিল হয়
হাদীস : হযরত আতা (রহ.) থেকে হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.)-এর সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা দুই ব্যক্তি সফরে বের হন। পথিমধ্যে নামাযের সময় উপনীত হওয়ায় তারা পানি না পাওয়ায় তায়াম্মুম করে নামায আদায় করেন। অতঃপর উক্ত নামাযের সময়ের মধ্যে পানি প্রাপ্ত হওয়ায় তাদের একজন উজু করে পুনরায় নামায আদায় করেন এবং অপর ব্যক্তি নামায আদায় করা হতে বিরত থাকেন। অতঃপর তারা উভয়েই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে হাজির হয়ে এই ঘটনা বর্ণনা করলেন। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন : “তোমাদের যে ব্যক্তি নামায পুনরায় আদায় করেনি, সে সুন্নাত মোতাবেক কাজ করেছে এবং এটাই তার জন্য যথেষ্ট। আর যে ব্যক্তি উজু করে পুনরায় নামায আদায় করেছে, তার সম্পর্কে বলেন : “তুমি দ্বিগুণ ছওয়াবের অধিকারী হয়েছ।”
(সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৩৮)
জুমু‘আর দিন বিশেষভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হবে
হাদীস : হযরত আওস ইবন আওস আছ-ছাকাফী (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি : “যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিন স্ত্রীকে গোসল করাবে (জুমু‘আর নামাযের পূর্বে স্ত্রী সহবাস করে তাকেও গোসল করাবে) এবং নিজেও গোসল করবে অথবা সুগন্ধিযুক্ত দ্রব্রাদি দ্বারা ভালরূপে গোসল করবে, অতঃপর সকাল-সকাল মসজিদে গিয়ে ইমামের নিকটবর্তী স্থানে বসে খুতবাহ শুনবে এবং যাবতীয় অপ্রয়োজনীয় ক্রিয়াকর্ম হতে বিরত থাকবে, তার মসজিদে যাওয়ার প্রতিটি পদক্ষেপ সুন্নাত হিসাবে পরিগণিত হবে এবং তার প্রতিটি পদক্ষেপ এক বছরের দিনের রোযা ও রাতে দাঁড়িয়ে তাহাজ্জুদের নামায আদায়ের ছওয়াবের সমতুল্য হবে।”
(সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৪৫)