মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা হল খাদ্য। জীবন ধারণের জন্যই মানুষকে খাদ্য গ্রহণ করতে হয়। তবে খাদ্য গ্রহণের নির্দিষ্ট নিয়ম লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ করলে ঐ খাবার শরীরের জন্য উপকারী না হয়ে বরং তা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
মানুষ হিসেবে রাসূল (সা.) এরও খাবার গ্রহণের প্রয়োজন ছিল। জীবনের অন্যান্য দিকের মতই রাসূল (সা.) আমাদেরকে খাবার গ্রহণের সুন্দরতম পদ্ধতি শিখিয়ে গেছেন। এখানে রাসূল (সা.) এর খাবার গ্রহণের কিছু পদ্ধতি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল।
১. প্রয়োজনের অতিরিক্ত না খাওয়া
রাসূল (সা.) খাবার গ্রহণের জন্য পেটকে তিনভাগে ভাগ করার উপদেশ দিয়েছেন। প্রথম একভাগ খাবার, দ্বিতীয় একভাগ পানি ও তৃতীয় একভাগ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য তিনি খালি রাখতে বলেছেন। প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ শরীরের হজম প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করে এবং বিভিন্ন প্রকার রোগের সৃষ্টি করে।
২. সকল প্রকার খাদ্যগ্রহণ
রাসূল (সা.) আমিষ ও উদ্ভিদজাত উভয় প্রকার খাবারই গ্রহণ করতেন। তিনি কখনোই শুধু আমিষ বা শুধু উদ্ভিদজাত খাদ্য খেতেন না। শরীরের সুস্থতার জন্য আমাদের উভয় প্রকার খাদ্যেরই প্রয়োজন আছে। কোন এক প্রকার খাবার অধিক গ্রহণ করে অন্যটি সম্পূর্ণ বর্জন শরীরের জন্য কোনক্রমেই উপকারী নয়।
৩. প্লেট পরিষ্কার করে খাওয়া
প্লেটে পরিবেশিত খাদ্যের শেষ কণাটি পর্যন্ত মুছে খেয়ে নেওয়া রাসূল (সা.) এর সুন্নাহ। রাসূল (সা.) তার সামনে পরিবেশিত আহারের শেষ কণাটি পর্যন্ত মুছে আহার করতেন। বর্তমানে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, খাবারের মূল পুষ্টিগত নির্যাস পাত্রের তলায় এসে জমা হয়। পাশাপাশি খাবার পর আঙ্গুল চেটে নেওয়াও সুন্নাহর অংশ। খাবার শেষে আঙ্গুল চেটে নেওয়ার মাধ্যমে হজম ক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পাচক রসের অধিক নিঃসরণ ঘটে।
৪. হাতে করে খাওয়া
কোন প্রকার চামচ ব্যবহার না করে হাতে করে খাওয়া রাসূল (সা.) এর সুন্নাহ। হাতে করে খাওয়ার মাধ্যমে খাবারের সাথে সংযোগ স্থাপিত হয়। ফলে যত্নের সাথে পরিষ্কার করে খাবার খাওয়া সম্ভব হয় এবং তা সহজেই হজম হয়। অন্যদিকে, চামচের মাধ্যমে খাবারের সাথে কোন প্রকার সংযোগ ঘটেনা এবং ফলে অনেকাংশে অবহেলায় অপরিচ্ছন্নভাবে খাবার গ্রহণ করা হয়। মনোসংযোগ ছাড়া অবহেলায় খাবার গ্রহণের কারণে এই খাবার হজমের জন্য অধিক সময়ের প্রয়োজন হয়।
৫. আল্লাহর নাম নিয়ে খাবার গ্রহণ করা
খাবার গ্রহণের পূর্বে রাসূল (সা.) আমাদের আল্লাহর নাম নেওয়ার জন্য তথা ‘বিসমিল্লাহ’ বলার নির্দেশ দিয়েছেন। এই পৃথিবীতে আমাদের খাবারের জন্য যা কিছু রয়েছে, তার সকল কিছুই আল্লাহর নেয়ামত। সুতরাং, ‘বিসমিল্লাহ’ বলার মাধ্যমে আমরা যেমন আমাদের সামনে পরিবেশিত খাবারের জন্য আল্লাহর শোকর আদায় করি, যার মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের উপর সন্তুষ্ট হন, ঠিক তেমনি আমাদের আহারের উপর আল্লাহ বরকত দেন, যা আমাদের জন্য কল্যাণকর হয়।
খাবার গ্রহণের সময় রাসূল (সা.) প্রদর্শিত এই পদ্ধতি সমূহ স্মরণে রেখে বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে আমরা আমাদের খাবারকে আমাদের জন্য উপকারী করে নিতে পারি।
মুসলিম ভাইব অবলম্বনে লিখেছেন মুহাম্মদ আল-বাহলুল।
I like adarsha nari.
জাযাকাল্লাহ খাইর