ডা. মাহমুদা চৌধুরী
খাবার
গর্ভবতী মায়ের জন্য দরকার সুষম খাদ্যতালিকা, এতে করে প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিত ও খাদ্যঘাটতি দূর করা সম্ভব। এ সময় প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণে মাছ, মাংস, ডিম ও দুধ। এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে মওসুমি ফল ও শাক-সবজি খেতে হবে। কেনা শাক-সবজি, ফলমূল বাজার থেকে আনার পর আধাঘণ্টা পর্যন্ত পানিতে ভিজিয়ে খেলে ফরমালিনের ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব। এ সময় প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার না খাওয়াই ভালো।
যা খাওয়া যাবে
১। লাল শাক, আনার, মুরগী, কবুতরের বাচ্চা, শিং মাছ, সামুদ্রিক মাছ, আপেল, রেড মিট, লাল আটার রুটি এগুলোতে রক্তের পরিমান বৃদ্ধি পায়। শাক সবজি, ছোট মাছ, বাদাম খাবেন।
২। সপ্তাহে ২/ ৩ দিন নুডলস, ভাল মানের চকলেট, কেক ও মিস্টি বাচ্চার ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
৩। দৈনিক খাদ্য তালিকায় ডিম, দুধ, হরলিক্স (মাদার), তরমুজ, ডাবের পানি, ফলের জুস ও কলা রাখার চেস্টা করুন।
যা খাওয়া যাবে না
১। সম্পূর্ণভাবে লবন খাওয়া পরিহার করুন।
২। তৈলাক্ত খাবার খাওয়া যাবে না।
৩। কাচা পেপে, এলোভেরা জুস, আনারস না খাওয়া উচিৎ।
পরিমিত হালকা ধরনের কাজ
নারীর গর্ভকালীন সময়ে প্রথম দু-তিন মাস ও শেষের তিন মাস অতিরিক্ত পরিশ্রম না করে হালকা হাঁটাচলা করা উচিত। ভারী জিনিস বহন করা বা তোলা যাবে না। পিচ্ছিল স্থানে হাঁটা যাবে না এবং সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কলস তোলা, কল চাপা, ভাতের পাতিল তোলা, শিল পাটায় বাটাবাটি করা ইত্যাদি এড়িয়ে চলা উচিৎ। নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করুন।
ঘুম
এ সময় দিনের বেলা কমপক্ষে দু-ঘণ্টা ঘুম বা বিশ্রাম এবং রাতে কমপক্ষে আট ঘণ্টা ঘুম আবশ্যক। ঘুমানো বা বিশ্রামের সময় বাঁ-কাত হয়ে শোয়া ভালো।
পরিধেয়
গর্ভবতী মায়েদের অবশ্যই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, আরামদায়ক, সহজে পরিধানযোগ্য ও ঢিলেঢালা পোশাক পরা উচিত। সঠিক মাপের এবং নরম জুতো পরতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই হিল পরিহার করা উচিত।
ভ্রমণ
গর্ভকালীন প্রথম তিন মাস ও শেষ তিন মাস দীর্ঘ ভ্রমণে না যাওয়াই ভালো। উঁচু-নিচু পথ কিংবা ঝাঁকির আশঙ্কা আছে এমন যানবাহনে ভ্রমণ করা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। সকালে ও বিকেলে কিছু সময়ের জন্য স্বাস্থ্যকর ও মনোরম পরিবেশে ভ্রমণ গর্ভবতী মায়েদের জন্য ভালো, এতে শরীর সুস্থ ও মন প্রফুল্ল থাকে। তাই ফুলের বাগান, লেকের পাড়, পার্ক- এসব স্থানে ভ্রমণ করা উচিত।
শরীরের বিশেষ যত্ন ও রোগ-প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ
এ সময় নিয়মিত প্রতিদিন সাবান দিয়ে ভালোভাবে গোসল করতে হবে এবং হাত-পায়ের নখ কেটে ছোট রাখতে হবে। গর্ভকালে মায়েদের দাঁতগুলো বেশ নরম হয়ে যায়, তাই দাঁত ও মাড়ির বিশেষ যত্ন নিতে হবে। চার থেকে আট মাসের মধ্যে অবশ্যই টিটেনাসের টিকা দিতে হবে। এ সময় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা স্বাভাবিকের চেয়ে কম থাকে। তাই ইনফ্লুয়েঞ্জা, হাম, চিকেন পক্স ইত্যাদি ছোঁয়াচে রোগে আক্রান্ত রোগী থেকে দূরে থাকতে হবে।
বিশেষ সতর্কতা
অতিরিক্ত আবেগ, মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, ভয়, রোগ-শোক ইত্যাদি গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর, তাই এসব এড়িয়ে ভালো চিন্তা করতে হবে। প্রথম তিন মাস ও শেষ তিন মাস স্বামীর সহবাস থেকে বিরত থাকতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন করা যাবে না। পানিশূন্যতা রোধে স্বাভাবিকের চেয়ে অধিক পরিমাণে পানি পান করতে হবে। সব ধরনের ঝুঁকি এড়াতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া আবশ্যক। প্রেগ্ন্যান্সিতে নামায ছাড়বেন না। কোরআন শরীফ পড়ুন, সব সময় আল্লাহকে স্মরণ করুন। আল্লাহর কাছে নেককার ও দ্বীনদার সন্তান চাইতে থাকুন।
পোস্ট-টি পড়ে অনেক ভালোই লাগলো – এবং এর থেকে কিছু জিনিস শিখারও হলো-। ধন্যবাদ ভালো থাকবেন |
জাযাকাল্লাহ। শেয়ার করে ফেলুন
ধন্যবাদ অনেক উপকৃত হলাম আর শেষের কথাটা অনেক ভালো লাগলো
জাযাকাল্লাহ খাইর
ধন্যবাদ
জাযাকাল্লাহ খাইর