আল্লামা মনজূর নূমানী রহঃ
আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের উপর ঈমান আনা এবং তাওহীদ ও রেসালাতের সাক্ষ্য দান করার পর ইসলামে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নামায। এটা আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে খাস একটি ইবাদত।
কোরআন শরীফের পঞ্চাশটিরও বেশি আয়াতে এবং নবীজীর শতাধিক হাদীসে দৈনিক পাঁচওয়াক্ত নামায যথাযথভাবে আদায়ের উপর জোর তাগিদ দেয়া হয়েছে। নামাযকে দ্বীনের খুটি এবং ইসলামের বুনিয়াদরূপে উল্লেখ করা হয়েছে।
নামাযের অনেক তাছীর ও সুপ্রভাব রয়েছে। সর্বাগ্রে উল্লেখযোগ্য প্রভাব হলো, নামায অন্যায় ও অশ্লীলতা থেকে নামাযীকে বাঁচিয়ে রাখে। কোনে বান্দা যখন আল্লাহ তাআলাকে হাজির নাযির জেনে, আল্লাহ তার সম্মুখে আছেন, তাঁর নামায প্রত্যক্ষ করছেন এই ধ্যান করে, খুশুখুযু তথা বিনয়, স্থিরতা ও প্রেমভয় নিয়ে নিয়মিত নামায আদায় করতে থাকে, তখন এই নামায রিপুর দোষ থেকে তার অন্তরকে পরিশুদ্ধ করে দেয়, জীবনকে পরিশীলিত করে তোলে। অন্যায় ও অপরাধ থেকে তাকে দূরে সরিয়ে আনে। এই নামায সততা, সাধুতা, আল্লাহ প্রেম ও খোদাভীতির গুণ তাকে উপহার দেয়। এ জন্যই ইসলামে নামাযের এত গুরুত্ব, সমস্ত ফরজ ইবাদতের উপর নামাযের শ্রেষ্ঠত্ব। এবং এই কারণেই নবীজীর আদত ছিলো, কেউ ইসলাম গ্রহণ করলে তাওহীদ শিক্ষা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রথমেই তাকে নামায আদায়ের আদেশ দিতেন, অঙ্গীকার নিতেন।
নবীজীর দৃষ্টিতে নামায ও নামাযী
হাদীস থেকে জানা যায়, নামায না পড়াকে নবীজী কুফুরী কাজ এবং কাফেরের স্বভাব বলে উল্লেখ করেছেন। এক হাদীসে এসেছে,
لَا سَهْمَ فِي الْإِسْلَامِ لِمَنْ لَا صَلَاةَ لَهُ. قال الهيثمي: وَفِيهِ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ، وَقَدْ أَجْمَعُوا عَلَى ضَعْفِهِ.
যার ভিতরে নামায নেই, তার ভিতর দ্বীনের কোনো হিস্যা নেই। মুসনাদে বায্যার, হাদীস নং ৮৫৩৯
অন্য এক হাদীসে নবীজী ইরশাদ করেন,
إِنَّ بَيْنَ الرَّجُلِ وَبَيْنَ الشِّرْكِ وَالْكُفْرِ تَرْكَ الصَّلَاةِ
কোনো বান্দা আর কুফর-শিরকের মাঝে পার্থক্য বোঝা যাবে তার নামায তরকের দ্বারা। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৩৪
হাদীসের মতলব হলো, যখন কেউ নামায ছেড়ে দিলো, তখন সে যেন কুফরের সঙ্গে গিয়ে মিলিত হলো। তার নামায না পড়াটা কুফরি কাজের সমতূল্য হলো।
নামায আদায় কত বড় সৌভাগ্যের বিষয় আর তরক করাটা কত বড় দুর্ভাগ্যের বিষয় সামনের হাদীস থেকে তা কিছুটা অনুমান করা যাবে। নবীজী ইরশাদ করেন,
مَنْ حَافَظَ عَلَيْهَا كَانَتْ لَهُ نُورًا، وَبُرْهَانًا، وَنَجَاةً يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَمَنْ لَمْ يُحَافِظْ عَلَيْهَا لَمْ يَكُنْ لَهُ نُورٌ، وَلَا بُرْهَانٌ، وَلَا نَجَاةٌ.
যে ব্যক্তি নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামায যতেœর সাথে আদায় করবে, কেয়ামতের সময় এ নামায তার জন্য আলো হবে, তার ঈমান ও ইসলামের দলিল হবে এবং তার নাজাতের ওসিলা হবে। আর যে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়মিত নামায আদায় করবে না, কেয়ামতের বিভীষিকাময় পরিস্থিতিতে নামায তার জন্য আলো হবে না, দলিল হবে না এবং সে আযাব ও শাস্তি থেকে রেহাইও পাবে না। মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ৬৫৭৬
দ্বীনি ভাই ও বোন! আমাদের সবারই ভাবা উচিৎ, যদি যতেœর সঙ্গে সময় মতো নামায পড়ে আমরা অভ্যস্ত না হই, তাহলে আমাদের হাশর কী হবে? আমাদের পরিণাম কী দাঁড়াবে?
বে-নামাযীর লাঞ্ছনাকর অবস্থা
কেয়ামতের দিন বেনামাযী সর্ব প্রথম যে অপদস্থতা ও লাঞ্ছনার শিকার হবে, কোরআন শরীফের একটি আয়াতে তার বিবরণ এসেছে, যার মর্ম নিম্নরূপ-
يَوْمَ يُكْشَفُ عَنْ سَاقٍ وَيُدْعَوْنَ إِلَى السُّجُودِ فَلَا يَسْتَطِيعُونَ .خَاشِعَةً أَبْصَارُهُمْ تَرْهَقُهُمْ ذِلَّةٌ وَقَدْ كَانُوا يُدْعَوْنَ إِلَى السُّجُودِ وَهُمْ سَالِمُونَ
কেয়ামতের সেই কঠিন দিনে যখন আল্লাহ তাআলার বিশেষ নূর প্রকাশ পাবে এবং সকল মানুষকে সিজদায় পড়ে যেতে বলা হবে, তখন (যে খোশনসীব দুনিয়াতে নামায পড়তো, সে তো সিজদায় পড়ে যাবে। কিন্তু) যারা নামায পড়তো না, তারা সিজদার জন্য ঝুঁকতেই পারবে না। (কারণ তাদের কোমরকে কাঠের মতো শক্ত করে দেওয়া হবে।) ভয় ও লজ্জার কারণে তাদের চক্ষু অবনমিত থাকবে। লাঞ্ছনা ও গঞ্জনার আযাব তাদেরকে ঘিরে ফেলবে। এ শাস্তি এই জন্য যে, দুনিয়াতে তাদেরকে সিজদার প্রতি আহ্বান করা হতো, যখন তারা সুস্থ সবল ছিলো। তা সত্ত্বেও তারা সিজদায় ঝুঁকে পড়তো না। সূরা ৬৮, আয়াত ৪২-৪৩
বে-নামাযী ব্যক্তি এক হিসাবে খোদাদ্রোহী। তাকে যত লাঞ্ছিত করা হোক আর যত শাস্তিই দেয়া হোক, সে এর উযুক্তই বটে। উম্মতের কতক মুজতাহিদ ঈমাম তো বেনামাযীকে ইসলাম থেকে খারিজ এবং কতলের উপযুক্ত বলেও মত প্রকাশ করেছেন!
আমার দ্বীনি ভাই! নামাযই আল্লাহ তায়ালার সঙ্গে বান্দার সম্পর্কের ভিত রচনা করে, মানুষকে আল্লাহ তাআলার রহমতের হকদার বানায়। সুতরাং নামায ছাড়া মুসলমান হওয়ার দাবী দলিলহীন ও ভিত্তিহীন।
নামায পড়ার ফায়দা
আল্লাহ তাআলার যে বান্দা দৈনিক পাঁচবার আল্লাহ তাআলার সামনে হাত জোড় করে দাঁড়ায়, তাঁর প্রশংসা ও স্তুতি গায়, তাঁর সামনে ঝোঁকে ও সিজদাবনত হয় এবং দুআয় নিমগ্ন হয়, সে বান্দা আল্লাহ তাআলার বিশেষ রহমত ও মুহাব্বতের অধিকারী হয়ে যায়। তাঁর গোনাহখাতা ঝরে যেতে থাকে, পাপের পঙ্কিলতা থেকে জীবন শুদ্ধ হতে থাকে, অন্তর আল্লাহ তাআলার নূরে নূরান্বিত হয়ে ওঠে। হাদীস শরীফে নবীজী বড় সুন্দর উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়েছেন,
أَرَأَيْتُمْ لَوْ أَنَّ نَهْرًا بِبَابِ أَحَدِكُمْ يَغْتَسِلُ مِنْهُ كُلَّ يَوْمٍ خَمْسَ مَرَّاتٍ، هَلْ يَبْقَى مِنْ دَرَنِهِ شَيْءٌ؟ قَالُوا: لَا يَبْقَى مِنْ دَرَنِهِ شَيْءٌ، قَالَ: فَذَلِكَ مَثَلُ الصَّلَوَاتِ الْخَمْسِ، يَمْحُو اللهُ بِهِنَّ الْخَطَايَا
বলো তো, তোমাদের কারো ঘরের পাশেই যদি নহরনালা বহমান থাকে, আর সে তাতে দিনে পাঁচবার গোসল করে, তাহলে কি তার শরীরে কোনো ময়লা থাকতে পারে? সাহাবারা বললেন, ইয়া রাসুল আল্লাহ! কোনো ময়লা থাকতে পারে না। নবীজী বললেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাযেরও উদাহরণ তেমন। এর বরকতে বান্দার গোনাহখাতা মাফ হয়ে যায়। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৬৭
জামাতে নামায পড়ার গুরুত্ব ও ফজীলত
হাদীস শরীফ থেকে জানা যায়, নামাযের প্রকৃত ফজীলত ও বরকত জামাতে নামায পড়ার দ্বারা হাসিল হয়। নবীজী জামাতে নামায পড়ার উপর কঠিনভাবে গুরুত্ব আরোপ করেছেন। যারা অসতর্কতা ও অলসতার কারণে জামাতে শরিক হয় না, নবীজী একবার তাদের সম্পর্কে বলেন,
وَلَقَدْ هَمَمْتُ أَنْ آمُرَ بِالصَّلَاةِ، فَتُقَامَ، ثُمَّ آمُرَ رَجُلًا فَيُصَلِّيَ بِالنَّاسِ، ثُمَّ أَنْطَلِقَ مَعِي بِرِجَالٍ مَعَهُمْ حُزَمٌ مِنْ حَطَبٍ إِلَى قَوْمٍ لَا يَشْهَدُونَ الصَّلَاةَ، فَأُحَرِّقَ عَلَيْهِمْ بُيُوتَهُمْ بِالنَّارِ
আমার ইচ্ছা হয় এদের ঘরদোরে আগুন লাগিয়ে দিই। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৫২
বোঝার জন্য এই একটি হাদীসই যথেষ্ট যে, জামাত তরক করাটা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নিকট কতটা অপছন্দীয় ছিলো। একটি হাদীসে এসেছে,
صَلَاةُ الرَّجُلِ فِي الْجَمَاعَةِ تَزِيدُ عَلَى صَلَاتِهِ وَحْدَهُ سَبْعًا وَعِشْرِينَ
একা নামায পড়ার চেয়ে জামাতে নামায পড়লে ২৭ গুণ বেশী সওয়াব হয়। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৫০
এছাড়াও জামাতে নামায পড়ার অনেক ফায়দা রয়েছে। যেমন, এর মাধ্যমে মানুষের মাঝে সময়ানুবর্তিতা সৃষ্টি হয়। দৈনিক পাঁচবার মহল্লার দ্বীনদার ভাইদের সঙ্গে একত্র হওয়ার দ্বারা বড় বড় কাজের সুযোগ লাভ হয়। জামাতের পাবন্দীর দ্বারা খোদ নামাযের উপর পাবন্দী নসীব হয়। অভিজ্ঞতায় বলে, যারা জামাতের পাবন্দী করে না, প্রায়ই তাদের নামায কাজা হয়ে যায়। এমনিভাবে বড় ফায়দা হলো, যারা জামাতে শরিক হয়, তাদের প্রত্যেকের নামায পুরো মসজিদের জামাতের একটি অংশ হয়ে যায়। মসজিদের সেই জামাতে আল্লাহ তাআলার কতক নেককার বান্দাও থাকেন, যাদের নামায খুশুখুজু পূর্ণ হয়। তাদের নামায যখন আল্লাহ তাআলা কবুল করেন, তখন আল্লাহ পাকের দয়া ও করুণার সামনে এ আশাই হয় যে, এই নামাযীদের ওসিলায় আমার নামাযও আল্লাহ তাআলা কবুল করবেন, যদিও আমার নামায সেই মানের নামায নয়। আমার নামায কবুল হওয়ার মত নয়।
সুতরাং, একান্ত অপারগতা ব্যতীত জামাত তরক করলে কী পরিমাণ ছওয়াব ও বরকত থেকে আমরা বঞ্চিত হবো তা ভেবে দেখা উচিৎ।
উল্লেখ্য যে, জামাআতে নামায পড়ার এই ফযীলত শুধু পুরুষের জন্য। হাদীস শরীফে স্পষ্ট এসেছে, মহিলার জন্য মসজিদে নামায পড়ার চেয়ে ঘরে নামায পড়া অধিক উত্তম ও ফযীলতপূর্ণ।
খুশুখুজুর গুরুত্ব
খুশুখুজুর সঙ্গে নামায পড়ার মতলব হলো, যখন নামাযে দাঁড়াবে তখন আল্লাহ তাআলাকে বিশেষভাবে হাজির নাযির জ্ঞান করবে। আল্লাহ তাআলার মুহাব্বতে দেহমন আপ্লুত করে তুলবে এবং অন্তরাত্মায় তাঁর বড়ত্ব ও মহত্বের সম্মুখে নিজেকে মিটিয়ে দেয়ার অনুভূতি জাগ্রত রাখবে। যেন আমি এক মহা অপরাধে অপরাধী, ধৃত হয়ে কোনো মহা প্রতাপের অধিকারী বাদশার সম্মুখে দাঁড়িয়ে আছি! নামাযে দাঁড়িয়ে কল্পনা করবে, আমি মহামহীয়ান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সম্মুখে তাঁরই সম্মানে দাঁড়িয়ে আছি। রুকু করার সময় ভাববে, আমি অবনতশির হচ্ছি আল্লাহ পাকের জালাল ও মহিমার সামনে। নিজেকে সিজদায় নিক্ষেপ করার সময় অনুভবের চেষ্টা করবে, আল্লাহ জাল্লা জালালুহুর অশেষ অসীম কুদরত ও ইজ্জতের সামনে আমি আমার অস্তিত্বের সমস্ত অপারগতা ও অপদস্ততার বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছি।
নামাযে যা কিছু পড়া হয়, তা বুঝে বুঝে পড়তে পারলে খুবই ভালো। এতে নামাযের আসল স্বাদ অনুভব করা সহজ হয়, খুশুখুজু পয়দা হয়। নামাযের রূহ বা প্রাণ হলো হৃদয়ের আল্লাহমুখিতা ও খুশুখুজু। এমন নামায যে বান্দার নসীব হবে, সে সুনিশ্চিতভাবে কামিয়াব ও সফল। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,
قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ. الَّذِينَ هُمْ فِي صَلَاتِهِمْ خَاشِعُونَ
ঐ সকল মুমিন সফল ও কামিয়াব, যারা খুশুখুজুর সঙ্গে নিয়মিত নামায আদায় করে। সূরা ২৩ আয়াত ১-২
এক হাদীসে নবীজি ইরশাদ করেন-
خَمْسُ صَلَوَاتٍ افْتَرَضَهُنَّ اللَّهُ تَعَالَى مَنْ أَحْسَنَ وُضُوءَهُنَّ وَصَلَّاهُنَّ لِوَقْتِهِنَّ وَأَتَمَّ رُكُوعَهُنَّ وَخُشُوعَهُنَّ كَانَ لَهُ عَلَى اللَّهِ عَهْدٌ أَنْ يَغْفِرَ لَهُ، وَمَنْ لَمْ يَفْعَلْ فَلَيْسَ لَهُ عَلَى اللَّهِ عَهْدٌ، إِنْ شَاءَ غَفَرَ لَهُ وَإِنْ شَاءَ عَذَّبَهُ
পাঁচটি নামায আল্লাহ ফরজ করেছেন। যে ব্যক্তি যথানিয়মে ওজু করবে এবং যথাসময়ে নামায আদায় করবে, উত্তমরূপে রুকু সিজদা করবে এবং খুশুখুজুর সঙ্গে নামযগুলি পড়ে যাবে, তার জন্য আল্লাহ তাআলার ওয়াদা রয়েছে, তিনি অবশ্যই তাকে ক্ষমা করে দিবেন। কিন্তু যে ব্যক্তি যথাযথভাবে নামায আদায় করবে না তার জন্য আল্লাহ পাকের কোনো ওয়াদা নেই। চাইলে তাকে তিনি শাস্তি দিতে পারেন, ক্ষমাও করতে পারেন। সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৪২৫
আমরা যদি আল্লাহ পাকের ক্ষমা পেতে চাই, আখেরাতের শাস্তি থেকে বাঁচতে চাই, তাহলে উত্তম থেকে উত্তমরূপে নামায আদায় করা আমাদের একান্ত কর্তব্য।
নামায পড়ার নিয়ম
যখন নামাযের সময় হবে, তখন ভালোভাবে অজু করে নিবে। মনে মনে ভাববে, আল্লাহ তাআলার দরবারে হাজির হওয়ার জন্য এবং তাঁর ইবাদত ও বন্দেগীর জন্য আমি পরিচ্ছন্নতা ও পবিত্রতা অর্জন করছি। এর ভিতরও অনেক রহমত ও বরকত নিহিত আছে। এক হাদীসে এসেছে,
إِذَا تَوَضَّأَ الْعَبْدُ الْمُسْلِمُ أَوِ الْمُؤْمِنُ فَغَسَلَ وَجْهَهُ خَرَجَ مِنْ وَجْهِهِ كُلُّ خَطِيئَةٍ نَظَرَ إِلَيْهَا بِعَيْنَيْهِ مَعَ الْمَاءِ أَوْ مَعَ آخِرِ قَطْرِ الْمَاءِ، فَإِذَا غَسَلَ يَدَيْهِ خَرَجَ مِنْ يَدَيْهِ كُلُّ خَطِيئَةٍ كَانَ بَطَشَتْهَا يَدَاهُ مَعَ الْمَاءِ أَوْ مَعَ آخِرِ قَطْرِ الْمَاءِ، فَإِذَا غَسَلَ رِجْلَيْهِ خَرَجَتْ كُلُّ خَطِيئَةٍ مَشَتْهَا رِجْلَاهُ مَعَ الْمَاء أَوْ مَعَ آخِرِ قَطْرِ الْمَاءِ حَتَّى يَخْرُجَ نَقِيًّا مِنَ الذُّنُوبِ
অজুর সময় যে অঙ্গগুলো ধৌত করা হয়, সে অঙ্গগুলো থেকে হয়ে যাওয়া গোনাহ ওজুর পানি দ্বারা বের হয়ে যায়। ওজুর পানি দ্বারা গোনাহের ছাপ-চিহ্নও ধুয়েমুছে পরিষ্কার হয়ে যায়। সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৪৪
অযুর পর যখন নামাজে দাঁড়াবে তখন ধ্যান করবে, আমি গোনাহগার। আমি এখন এমন এক সর্বজ্ঞাতা মালিকের সামনে দাঁড়াচ্ছি, যিনি আমার ভিতর-বাহির, প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সকল বিষয় সম্পর্কে সুপরিজ্ঞাত। কেয়ামতের দিন আবার আমাকে তাঁর সামনে দাঁড়াতে হবে। এরপর যে ওয়াক্তের নামাজের জন্য দাঁড়িয়েছে, সে ওয়াক্তের নামাজের নিয়ত করবে। নিয়মমত কান পর্যন্ত হাত তুলে হৃদয়ের গভীর থেকে বলবে, ‘আল্লাহু আকবার’। অত:পর হাত বাঁধবে এবং আল্লাহ তাআলার দরবারে হাজির হওয়ার পরিপূর্ণ ধ্যান রেখে পাঠ করবে,
سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ، وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالَى جَدُّكَ، وَلَا إِلَهَ غَيْرَكَ
হে আল্লাহ! তুমি পূতপবিত্র, চির প্রশংসার্হ, তোমার নাম পরম বরকতময়। তোমার মর্যাদা বড় মহিমাময়। তুমি ব্যতীত কোনো মা‘বুদ নেই। সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৭৭৬
اعوذ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ
বিতাড়িত শয়তান থেকে আমি আল্লাহ তাআলার আশ্রয় গ্রহণ করছি।
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
পরম করুণাময় চির মেহেরবান আল্লাহর নামে শুরু করছি।
الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ .الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ. َالِكِ يَوْمِ الدِّينِ. إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ. اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ. صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّين.َ امين
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তাআলার। যিনি জগৎসমূহের প্রতিপালক, সকলের প্রতি দয়াবান, পরম দয়ালু। যিনি কর্মফল দিবসের মালিক। (হে আল্লাহ!) আমরা তোমারই ইবাদত করি, তোমার কাছেই সাহায্য চাই। তুমি আমাদেরকে সরল পথে পরিচালিত করো। সেই সকল লোকের পথে, যাদের প্রতি তুমি অনুগ্রহ করেছো; ঐ সকল লোকের পথে নয়, যাদের উপর তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং তাদের পথেও নয়, যারা পথহারা হয়েছে। (হে আল্লাহ! তুমি আমার এই দুআ কবুল করে নাও)
এরপর কোনো সূরা বা তার অংশ বিশেষ তেলাওয়াত করবে। এখানে আমরা ছোট ছোট চারটি সূরা উল্লেখ করছি:
১। সূরা আছর
وَالْعَصْرِ. إِنَّ الْإِنْسَانَ لَفِي خُسْرٍ. إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ.
কালের শপথ! বস্তুত সকল মানুষ মারাত্মক ক্ষতির মধ্যে আছে। তবে তাদের কথা ভিন্ন, যারা ঈমান এনেছে, সৎকর্ম করছে এবং একে অন্যকে সত্যের ও ধৈর্য্যরে উপদেশ দিচ্ছে।
২। সূরা ইখলাস
قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ. اللَّهُ الصَّمَدُ. لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ. وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ.
বলুন, আল্লাহ তাআলা সর্বদিক থেকে এক অদ্বিতীয়। আল্লাহ পাক এমন যে, সকলে তার মুখাপেক্ষী; তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন। তাঁর কোনো সন্তান নেই, তিনিও কারো সন্তান নন, তাঁর কোনো সমকক্ষ নেই। সুরা ১১২
৩। সূরা ফালাক
قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ. مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ. وَمِنْ شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ. وَمِنْ شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِي الْعُقَدِ. وَمِنْ شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ.
বলো, আমি ভোরের মালিকের আশ্রয় গ্রহণ করছি; তিনি যা কিছু সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট থেকে, অন্ধকার রাতের অনিষ্ট থেকে, যখন তা ছেয়ে যায়; সেই সব নারীর অনিষ্ট থেকে, যারা সুতার গিরায় ফুঁ মারে; হিংসুকের হিংসা হতে, যখন সে হিংসা করতে থাকে। সুরা ১১৩
৪। সূরা নাস
قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ. مَلِكِ النَّاسِ. إِلَهِ النَّاسِ. مِنْ شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ. الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ. مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ.
বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি সমস্ত মানুষের অধিপতির, সমস্ত মানুষের মা’বুদের, পশ্চাতে আত্মগোপনকারী কুমন্ত্রণাদাতার অনিষ্ট থেকে, যে মানুষের অন্তরে কুমন্ত্রণা দেয়; সে জিনদের মধ্য থেকে হোক বা মানুষের মধ্য থেকে।
মোটকথা সূরা ফাতেহা পড়ার পর একটি সূরা বা তার কিয়দাংশ পাঠ করবে। প্রত্যেক নামাযে এতটুকু তেলাওয়াত করা জরুরি। কেরাত শেষে আল্লাহ পাকের বড়ত্ব ও মহত্বের ধ্যান করে দিল থেকে আল্লাহু আকবার উচ্চারণ করবে এবং রুকুতে যাবে। আর বারবার বলতে থাকবে, অন্তত তিনবার বলবে,
সুবহানা রাব্বিয়াল আযীম (পূত পবিত্র আমার মহান মালিক)
সুবহানা রাব্বিয়াল আযীম (পূতপবিত্র আমার মহীয়ান প্রতিপালক)
সুবহানা রাব্বিয়াল আযীম (পূতপবিত্র আমার আল্লাহ তাআলা)
এরপর মাথা তুলে সোজা হয়ে দাঁড়াবে এবং বলবে, سمع الله لمن حمده আল্লাহ সেই বান্দার কথা শুনছেন ও কবুল করেছেন যে তাঁর প্রশংসা ও স্তুতি বর্ণনা করছে। তারপর বলবে, ربنا لك الحمد প্রশংসা তোমার হে পরওরদেগার। অতঃপর অন্তর থেকে আল্লাহু আকবার বলে সিজদায় লুটিয়ে পড়বে। একে একে দুটি সেজদা করবে। আল্লাহু পাকের সামনে মন ও প্রাণের গভীরতম প্রদেশ থেকে বলতে থাকবে, سبحان ربي الاعلى আমি আমার মহান প্রভূর পবিত্রতা ঘোষণা করছি। سبحان ربي الاعلى আমি আমার মহান প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করছি। سبحان ربي الاعلىআমি আমার মহান মালিকের সুচিশুভ্রতার ঘোষণা দিচ্ছি।
সিজদা অবস্থায় ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আ‘লা’ পড়বে আর নিজের ক্ষুদ্রতা ও অক্ষমতার কথা চিন্তা করতে থাকবে এবং আল্লাহ পাকের অসীম অশেষ বড়ত্ব ও বিশালত্বের ধ্যানে মগ্ন থাকবে। এই চিন্তা ও ধ্যান যত গভীর হবে, নামাযও ততো জানদার ও প্রাণবন্ত হবে।
এ-গেলো এক রাকাতের বিবরণ। সামনে যত রাকাত পড়বে, এ-নিয়মেই পড়বে। তবে ‘সুবহানাকা আল্লাহুম্মা’ শুধু প্রথম রাকাতে পড়বে। আর নামাযের মাঝখানে বা শেষে যখন বসবে, তখন ‘আত্তাহিয়্যাতু’ পড়বে। এই দুআর ভিতর নামাযের সারমর্ম গচ্ছিত আছে,
التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ، السَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلاَمُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ، فَإِنَّكُمْ إِذَا قُلْتُمُوهَا أَصَابَتْ كُلَّ عَبْدٍ لِلَّهِ صَالِحٍ فِي السَّمَاءِ وَالأَرْضِ، أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ
সমস্ত আদব ও সম্মান, সাদাকা ও ইবাদত আল্লাহ তোমার জন্য। তোমার প্রতি হে রাসূল! আল্লাহর রহমত বরকত ও সালাম বর্ষিত হোক। শান্তি বর্ষিত হোক আমাদের সকলের উপর এবং আল্লাহ পাকের সকল নেক বান্দার উপর। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ তাআলা ব্যতীত ইবাদতের উপযুক্ত আর কোনো মা’বুদ নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। সহীহ বোখারী, হাদীস নং ৮৩১
তিন রাকাত ও চার রাকাত বিশিষ্ট নামাযে প্রথম দুই রাকাতের পর বসতে হয়। সেখানে শুধু ‘আত্তাহিয়্যাতু’ পড়বে। আর নামাযের শেষ বৈঠকে ‘আত্তাহিয়্যাতুর’ পর দরুদ শরীফ পড়বে,
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ، اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ
হে আল্লাহ! নবীজি ও তাঁর আপনজনদের উপর বিশেষ রহমত নাযিল করো, যেমন রহমত নাযিল করেছো হযরত ইবরাহীম ও তার নিকটজনদের উপর। আল্লাহ! নিশ্চই তুমি মহিমান্বিত ও প্রশংসিত। বরকত নাযিল করো হে আল্লাহ! নবীজি ও তাঁর আপনজনদের উপর, যেমন তুমি বরকত অবতীর্ণ করেছো হযরত ইবরাহীম ও তার পরিবার-পরিজনের উপর। আল্লাহ! তুমি বড় মহিমান্বিত ও প্রশংসিত। সহীহ বোখারী, হাদীস নং ৩৩৭০
দরুদ শরীফ মূলত নবীজি, তাঁর পরিবারপরিজন ও আপনজনদের জন্য রহমত ও বরকতের দুআ বিশেষ। যেহেতু নবীজির মাধ্যমেই দ্বীনের নেয়ামত ও নামাযের এ দৌলত আমরা লাভ করেছি, তাই আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য দরুদ শরীফ দান করেছেন। সুতরাং নবীজির অনুগ্রহ স্মরণ করে আত্তাহিয়্যাতু পড়ার পর হৃদয় থেকে দরুদ পাঠ করবে। নবীজির জন্য রহমত ও বরকতের দুআ করবে। তারপর নিজের জন্য এই দুআটি পাঠ করে সালাম ফিরাবে,
اللَّهُمَّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي ظُلْمًا كَثِيرًا، وَلاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ، فَاغْفِرْ لِي مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ، وَارْحَمْنِي إِنَّكَ أَنْتَ الغَفُورُ الرَّحِيمُ
আয় আল্লাহ! আমি তোমার ইবাদত ও আনুগত্যে অবহেলা করে নিজের উপর বহু অন্যায় করে ফেলেছি। আর তুমি ছাড়া তো মার্জনাকারী কেউ নেই। সুতরাং একান্ত আপন অনুগ্রহে আমাকে ক্ষমা করো। আমার প্রতি দয়া করো মালিক, তুমি বড় ক্ষমাশীল, তুমি বড় দয়ালু। সহীহ বোখারী, হাদীস নং ৮৩৪
এই দুআর মধ্যে নামাযে হয়ে যাওয়া ত্রুটিবিচ্যুতির স্বীকারোক্তি রয়েছে, আল্লাহ তাআলার রহমত ও ক্ষমা লাভের সকাতর প্রার্থনা রয়েছে। মূলত একজন বিনয়ী বান্দার জন্য এটাই শোভনীয় যে, নামাযের মতো ইবাদত করার পরও নিজেকে গোনাহগার ভাববে। অহমিকাবোধের তো প্রশ্নই আসে না, বরং নিজের নামাযকে ত্রুটিপূর্ণ মনে করে লজ্জিত হবে। নামায কবুল হওয়ার ব্যাপারে কেবলি আল্লাহ তাআলার রহমতের উপর ভরসা করবে। কারণ, আল্লাহ তাআলার ইবাদতের হক আদায় করা বান্দার পক্ষে কখনোই সম্ভব নয়।
হে আমার ভাই! নামায হলো পরশপাথরের মতো একটি ইবাদত। উল্লিখিত পদ্ধতিতে ধ্যান ও খুশুখুজুর সঙ্গে যে ব্যক্তি নামায আদায় করবে, নামাযই তাকে আমলে-আখলাকে ফেরেশতাতূল্য বানিয়ে তুলবে।
উম্মতের নামাযের বিষয়ে নবীজির এত ফিকির ছিলো যে, দুনিয়ার জীবনের শেষ মুহূর্তেও উম্মতকে নামায কায়েমের অসিয়ত করে গেছেন। সুতরাং যে সকল ভায়েরা নামায পড়েন না, নামায কায়েমের চেষ্টা করেন না, তারা আল্লাহর ওয়াস্তে ভেবে দেখুন, কেয়ামতের দিন কীভাবে নবীজির সামনে দাঁড়াবেন? কিভাবে নবীজীকে মুখ দেখাবেন!? আপনি তো নবীজীর শেষ অসিয়তকেও আমলে নিচ্ছেন না।
আসুন আমরা সবাই ইবরাহীম আলাইহিস সালামের ভাষায় দুআ করি,
رَبِّ اجْعَلْنِي مُقِيمَ الصَّلَاةِ وَمِنْ ذُرِّيَّتِي رَبَّنَا وَتَقَبَّلْ دُعَاءِ. رَبَّنَا اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُومُ الْحِسَابُ
হে আমার আল্লাহ! আমাকে এবং আমার বংশধরদেরকে নামাযী বানিয়ে দাও। হে আমাদের মালিক! আমাদের এ দুআ তুমি কবুল করে নাও। ওহে আমাদের প্রভু! আমাকে, আমার মাতাপিতাকে এবং সকল ঈমানদারকে কেয়ামতের দিন তুমি ক্ষমা করে দিও। সূরা ১৪, আয়াত ৪০-৪১