হজ্ব কত প্রকার ও কী কী? বিস্তারিত কার্যাবলী ও হুকুম


হজ্জ তিন প্রকার

(১) হজ্জে কিরান। এক ইহরামে উমরা ও হজ্জ উভয়টি পালন করা।
(২) হজ্জে তামাত্তু। আলাদা আলাদা ইহরাম পরিধান করে উমরা এবং হজ্জ পালন করা।
(৩) হজ্জে ইফরাদ। শুধুমাত্র হজ্জের ইহরাম বেধে হজ্জ করা।
এই তিন প্রকারের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম হজ্জ হচ্ছে, হজ্জে কিরান, তারপর হজ্জে তামাত্তু, অতপর হজ্জে ইফরাদ।


হজ্জে কিরান:

এর কাজ সর্বমোট ১৩টি
১। উমরা ও হজ্জের নিয়তে ইহরাম বাধা। ফরজ।
২। বাইতুল্লায় প্রবেশ করে তাওয়াফে উমরা বা উমরার তাওয়াফ আদায় করা। ফরজ।
৩। তাওয়াফের পর উমরার সায়ী করা। ওয়াজিব।
৪। তাওয়াফে কুদুম করা । সুন্নত।
৫। সায়ী করা। ওয়াজিব।
৬। ৮ই জিলহজ্জ যোহর থেকে ৯ই জিলহজ্জ ফজর পর্যন্ত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মিনায় আদায় করা। সুন্নত।
৭। ৯ই জিলহজ্জ সূর্য ঢলা থেকে সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত উকুফে আরাফা (আরাফায় অবস্থান) করা। হজের অন্যতম ফরজ।
৮।৯ই জিলহজ দিবাগত রাত উকুফে মুজদালিফা (মুজদালিফায় অবস্থান) করা। পুরুষের জন্য ওয়াজিব। মহিলাদের জন্য ওয়াজিব নয়।
৯। ১০,১১ ও ১২ই জিলহজ্ব মিনায় জামারাতে (কংকর নিক্ষেপের স্থানে) কংকর নিক্ষেপ করা। ওয়াজিব।
১০। কোরবানি করা ওয়াজিব।
১১। হলক করে ইহরাম খোলা । ওয়াজিব (হলক বা কছর )
১২। তাওয়াফে যিয়ারত করা ফরজ।
১৩। সর্বশেষ মক্কা থেকে বিদায় নেওয়ার সময় বিদায়ী তাওয়াফ করা। ওয়াজিব।
বিদায়ী তাওয়াফ করলে হজ্জে কিরানের কার্যাবলী সমাপ্ত হবে।


হজ্জে তামাত্তু:

এর কাজ সর্বমোট ১৪ টি
১। উমরার নিয়তে ইহরাম বাঁধা।ফরজ।
২। বায়তুল্লায় উমরার তাওয়াফ করা। ফরজ।
৩। উমরার সায়ী করা।ওয়াজিব।
৪। হলক করে উমরার ইহরাম খোলা। ওয়াজিব।
৫। ৮ই জিলহজ্জ হজ্জের উদ্দেশ্যে ইহরাম বাঁধা।ফরজ।
৬। ৮ই জিলহজ্জ মিনায় গমন করে সেখান থেকে যোহর আসর মাগরিব এশা এবং ৯ই জিলহজ্জ এর ফজর সর্বমোট পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা। সুন্নত।
৭। ৯ই জিলহজ্জ উকুফে আরাফা বা আরাফার ময়দানে অবস্থান করা। আর উকুফে আরাফা হজ্জের একটি অন্যতম ফরজ।
৮। ৯ই জিলহজ্জ দিবাগত রাতে উকুফে মুজদালিফা বা মুজদালিফায় অবস্থান করা। পুরুষদের জন্য ওয়াজিব। মহিলাদের জন্য ওয়াজিব নয়।
৯। ১০ ১১ ও ১২ই জিলহজ্জ জামারাতে (কংকর নিক্ষেপের স্থানে) কংকর নিক্ষেপ করা। ওয়াজিব।
১০। পশু কোরবানি করা। ওয়াজিব।
১১। হলক করা। ওয়াজিব।
১২। তাওয়াফে জিয়ারত করা। ফরজ।
১৩। তাওয়াফে জিয়ারত এর সায়ী করা। ওয়াজিব।
১৪। সর্বশেষ মক্কা থেকে বিদায় নেওয়ার সময় বিদায়ী তাওয়াফ করা ওয়াজিব। বিদায়ী তাওয়াফ করার মাধ্যমে হজ্জে তামাত্তু এর কার্যাবলী সমাপ্ত হবে।


হজ্জে ইফরাদ:

এর কাজ সর্বমোট ১০টি
১। হজের ইহরাম বাঁধা। ফরজ।
২। বাইতুল্লায় প্রবেশ করে তাওয়াফ করা। এটাকে তাওয়াফে কুদুম বলে। এটি সুন্নত।
৩। ৮ই জিলহজ যোহর থেকে ৯ই জিলহজ ফজর পর্যন্ত মিনায় অবস্থান ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সেখানে আদায় করা সুন্নত।
৪। ৯ই জিলহজ্জ আরাফায় অবস্থান করা। এটি হজের প্রধানতম ফরজ।
৫। ৯ই জিলহজ দিবাগত রাত মুজদালিফায় অবস্থান করা। এই অবস্থান পুরুষদের জন্য ওয়াজিব। মহিলাদের জন্য ওয়াজিব নয়।
৬। ১০ ১১ ও১২ ই জিলহজ্জ জামারাতে (কংকর নিক্ষেপের স্থানে) কংকর নিক্ষেপ করা ওয়াজিব।
৭। হলক করে ইহরাম খোলা ওয়াজিব।
৮। তাওয়াফে জিয়ারত করা ফরজ।
৯। তাওয়াফে জিয়ারতে সায়ী করা ওয়াজিব।
১০। সর্বশেষ মক্কা থেকে বিদায় নেওয়ার সময় বিদায়ী তওয়াফ করলে হজ্জে ইফরাদের কার্যাবলী সমাপ্ত হবে। বিদায়ী তাওয়াফ ওয়াজিব।

5 thoughts on “হজ্ব কত প্রকার ও কী কী? বিস্তারিত কার্যাবলী ও হুকুম

  1. হজ্জ ইফরাদে বাইতুল্লায় তাওয়াফ শেষে ইহরাম খোলা যাবে কি না?

  2. হজ্জে ইফরাদ যে কেউ করতে পারবে কি না? যার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়(সৌদিতে থাকেন) সে কি হজ্জে ইফরাদ করতে পারবে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *