সহীহ জিকির ও গলত জিকির | পর্ব ২

মুফতী আবুল হাসান শামসাবাদী

জিকরে খফীর ন্যায় জিকরে জলী বা জেহেরী জিকিরের পক্ষে পবিত্র কুরআনের আয়াত ও হাদীসের অকাট্য দলীল পূর্বের পোস্টে বর্ণনা করা হয়েছে। এবার জেহেরী জিকিরে আওয়াজ উঁচু করার মাত্রা বা পরিমাণ সম্পর্কে আলোচনা করা হচ্ছে।

জেহেরী জিকিরে আওয়াজের মাত্রা :

পূর্বে উল্লেখকৃত পবিত্র কুরআনের সূরাহ আ‘রাফের ২০৫ নং আয়াতে জিকিরের ধরণ সম্পর্কে বলা হয়েছে–
وَاذۡکُرۡ رَّبَّکَ فِیۡ نَفۡسِکَ تَضَرُّعًا وَّخِیۡفَۃً وَّدُوۡنَ الۡجَہۡرِ مِنَ الۡقَوۡلِ
“এবং স্বীয় পালনকর্তার জিকির করুন চুপে চুপে বিনম্রভাবে ও ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে এবং খুব জোরের চেয়ে কম আওয়াজে।”
(সূরাহ আ‘রাফ, আয়াত নং ২০৫)

এ আয়াতে বর্ণিত জিকিরের ধরনের ব্যাখ্যায় তাফসীরে মা‘আলিমুত তানযীলে আল্লামা বাগাভী (রহ.) বলেন, বিশিষ্ট তাফসীরবিদ হযরত মুজাহিদ (রহ.) ও হযরত ইবনে ‍জুরাইজ (রহ.) বলেন–“আল্লাহ তা‘আলা নির্দেশ দিয়েছেন যে, একাগ্রতার সাথে অন্তর দিয়ে তাঁর জিকির করবে এবং তাঁকে খুব জোরে আওয়াজ করে ও চিৎকার করে ডাকবে না।”
(তাফসীরে মা‘আলিমুত তানযীল, সূরাহ আ‘রাফ, ২০৫ নং আয়াতের তাফসীর দ্রষ্টব্য)

উক্ত আয়াতে জেহেরী জিকিরের ক্ষেত্রে “খুব জোরের চেয়ে কম আওয়াজে” মাত্রার ব্যাখ্যায় আল্লামা ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন–اَلْجَهْر (আল-জাহর) অর্থ খুব জোরে বলা। আয়াতটিতে دُوۡنَ الْجَهْرِ (দূনাল জাহর) বলে তাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
(দ্রষ্টব্য : মাজমূ‘উল ফাতাওয়া, ১৫ নং খণ্ড, ১৭৫ পৃষ্ঠা)

জেহেরী জিকিরের সেই মাত্রাকে বিশ্লেষণ করে তাফসীরে ইবনে কাছীরে বলা হয়েছে–এতে বুঝানো হয়েছে যে, এমনভাবে জোরে চিল্লিয়ে বলবে না যেমন দূরের কাউকে ডাকা হয়, আবার এমন আস্তে বলবে না যে, পাশের লোকেরা শুনতে না পায়। বরং এতদুভয়ের মাঝামাঝি স্বাভাবিক আওয়াজে বলবে।
(দ্রষ্টব্য : তাফসীরে ইবনে কাছীর, ৩য় খণ্ড, ৫৩৯ পৃষ্ঠা)

এ প্রসঙ্গে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন–এটা পবিত্র কুরআনের সূরাহ ইসরা’র ১১০ নং আয়াতের নির্দেশনার অনুরূপ। উক্ত আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন–
وَلَا تَجۡہَرۡ بِصَلَاتِکَ وَلَا تُخَافِتۡ بِہَا وَابۡتَغِ بَیۡنَ ذٰلِکَ سَبِیۡلًا
“আপনি আপনার নামাযে (ক্বিরাআত) খুব উচ্চ স্বরে পড়বেন না এবং নিঃশব্দেও পড়বেন না। এতদুভয়ের মধ্যম পন্থা অবলম্বন করুন।”
(সূরাহ ইসরা’, আয়াত নং ১১০)

তার প্রেক্ষাপট সম্পর্কে সহীহ বুখারীতে বর্ণিত হয়েছে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন–
نَزَلَتْ وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُخْتَفٍ بِمَكَّةَ ، كَانَ إِذَا صَلَّى بِأَصْحَابِهِ رَفَعَ صَوْتَهُ بِالقُرْآنِ ، فَإِذَا سَمِعَهُ المُشْرِكُونَ سَبُّوا القُرْآنَ وَمَنْ أَنْزَلَهُ وَمَنْ جَاءَ بِهِ ، فَقَالَ اللَّهُ تَعَالَى لِنَبِيِّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : { وَلَا تَجْهَرْ بِصَلاَتِكَ } أَيْ بِقِرَاءَتِكَ ، فَيَسْمَعَ المُشْرِكُونَ فَيَسُبُّوا القُرْآنَ { وَلَا تُخَافِتْ بِهَا } عَنْ أَصْحَابِكَ فَلاَ تُسْمِعْهُمْ ، { وَابْتَغِ بَيْنَ ذَلِكَ سَبِيلًا }
“এ আয়াত সেসময় নাযিল হয়েছে যখন রাসূলুল্লাহ (সা.) মক্কায় সংগোপনে রয়েছেন। (অর্থাৎ এ আয়াত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর মক্কী জীবনে ইসলামের প্রাথমিক যুগে নাযিল হয়েছে।) সে সময় রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন সাহাবীগণকে নিয়ে নামায পড়তেন, কুরআন পাঠে আওয়াজকে উচ্চ করতেন। তখন সেই আওয়াজ মুশরিকরা শুনে তারা কুরআনকে এবং কুরআন যিনি নাযিল করেছেন (মহান আল্লাহ) এবং যিনি কুরআন নিয়ে এসেছেন (মুহাম্মদ সা.)কে গালমন্দ করলো। এ প্রেক্ষিতে আল্লাহ তা‘আলা উক্ত আয়াত নাযিল করেন। এতে তিনি স্বীয় নবী (সা.)কে বলেন–আপনি কুরআন মাজীদ এত উচ্চস্বরে পাঠ করবেন না যে, আওয়াজ বাহিরে গিয়ে কাফির-মুশরিকরা শুনে গালমন্দ করার প্রয়াস পায়। আবার এত নিম্নস্বরে পড়বেন না যে, পাশের সাহাবীগণ শুনতে না পান। বরং মধ্যম পন্থা অবলম্বন করুন।
(সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৪৬৬)

অপর ‍রিওয়ায়াতে হযরত সাঈদ ইবনে যুবাইর (রা.) হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন–সে সময় জোরে কুরআন পাঠ শুনে মুশরিকরা (গালি দিয়ে) রাসূূলুল্লাহ (সা.)কে বললো, আপনি জোরে পড়বেন না। কারণ, এতে আপনি আমাদের মা‘বূদগণকে কষ্ট দেন। তাই আমরা আপনার মা‘বূদকে গালি দেই।
(দ্রষ্টব্য : ইরশাদুস সারী শরহে বুখারী, ৭ম খণ্ড, ১৪৮ পৃষ্ঠা)

এতে বুঝা গেলো- “খুব জোরের চেয়ে কম আওয়াজে পড়া”-এর নির্দেশনা ইসলামের প্রাথমিক যুগে মক্কায় বিশেষ পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে দেয়া হয়েছিলো। অতঃপর যখন রাসূলুল্লাহ (সা.) মদীনায় হিজরত করলেন এবং মুসলমানগণের শক্তিমত্তা বৃদ্ধি পেলো, তখন সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়।

এ জন্য মদীনায় রাসূলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবীগণের (রা.) আমলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উচ্চস্বরে জিকির করার প্রমাণ পাওয়া যায়। যেমন, সহীহ বুখারীতে রয়েছে–
عن ابْن عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا : أَنَّ رَفْعَ الصَّوْتِ بِالذِّكْرِ حِينَ يَنْصَرِفُ النَّاسُ مِنَ المَكْتُوبَةِ كَانَ عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ كُنْتُ أَعْلَمُ إِذَا انْصَرَفُوا بِذَلِكَ إِذَا سَمِعْتُهُ
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, জিকিরে আওয়াজকে উচ্চ করা যখন মানুষেরা ফরজ নামায থেকে ফিরেন তা রাসূলুল্লাহ (সা)-এর যমানায় বিদ্যমান ছিলো। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, “আমি বুঝতে পারতাম যে সময় তারা উচ্চস্বরে যিকিরের দ্বারা ফিরতেন যখন আমি তা শুনতাম।”
(সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৮৪১)

তেমনি সহীহ বুখারীতে আরো বর্ণিত হয়েছে–
وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ وَأَبُو هُرَيْرَةَ يَخْرُجَانِ إِلَى السُّوقِ فِي أَيَّامِ الْعَشْرِ يُكَبِّرَانِ، وَيُكَبِّرُ النَّاسُ بِتَكْبِيرِهِمَا
“হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) ও হযরত আবু হুরাইরা (রা.) যিলহজ্বের দশকে বাজারে যেতেন তাকবীর বলতে বলতে এবং তাদের তাকবীর শুনে মানুষেরা তাকবীর বলতেন।” (হযরত আফফান (রহ.)-এর রিওয়ায়াতে রয়েছে : তাঁরা তখন তাকবীর বলে মানুষদেরকে তাদের সাথে তাকবীর বলানোর জন্যই বাজারে যেতেন।)
(দ্রষ্টব্য : সহীহ বুখারী, ২য় খণ্ড, ৪৫৮ পৃষ্ঠা)

অনুুরূপভাবে সহীহ বুখারীর শিরোনাম-বিবরণে তা‘লীকরূপে বর্ণনা করা হয়েছে–
وَكَانَ عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ يُكَبِّرُ فِي قُبَّتِهِ بِمِنًى فَيَسْمَعُهُ أَهْلُ الْمَسْجِدِ فَيُكَبِّرُونَ وَيُكَبِّرُ أَهْلُ الْأَسْوَاقِ حَتَّى تَرْتَجَّ مِنًى تَكْبِيرًا
“হযরত উমর (রা.) মিনায় স্বীয় হুজরায় তাকবীর বলতেন। সেই তাকবীর মসজিদের মুসল্লীগণ শুনতেন, তখন তাঁরা তাকবীর বলতেন। এবং বাজারের লোকজন (তাদের তাকবীর শুনে) তাকবীর বলতেন। তা এ পর্যন্ত হতো যে, মিনা তাকবীর ধ্বনিতে কেঁপে উঠতো।”
(দ্রষ্টব্য : সহীহ বুখারী, ১ম খণ্ড, ৩৩০ পৃষ্ঠা)

অপরদিকে পবিত্র কুরআনে জিকির সম্পর্কে অসংখ্য আয়াত রয়েছে–যেগুলোতে শর্তবিহীনভাবে জিকির করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাই বর্ণনার ব্যাপকতার দ্বারা সেগুলো সিররী জিকির ও জেহেরী জিকির উভয় প্রকার জিকিরকেই শামিল করে।
যেমন, সূরাহ আহযাবের ৪১ ও ৪২ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন–
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اذۡکُرُوا اللّٰہَ ذِکۡرًا کَثِیۡرًا وَّسَبِّحُوۡہُ بُکۡرَۃً وَّاَصِیۡلًا
“হে মুমিনগণ! তোমরা অধিক পরিমাণে আল্লাহর জিকির করো এবং সকালে ও বিকালে তাঁর তাসবীহ পড়ো।”
তেমনিভাবে সূরাহ আনফালের ৪৫ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন–
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا لَقِیۡتُمۡ فِئَۃً فَاثۡبُتُوۡا وَاذۡکُرُوا اللّٰہَ کَثِیۡرًا لَّعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন কোন বাহিনীর সাথে মুখোমুখি হও, তখন সুদৃঢ় থাক এবং অধিক পরিমাণে আল্লাহর জিকির কর। এতে আশা করা যায়, তোমরা কৃতকার্য হবে।”

অনুরূপভাবে মহান আল্লাহ সূরাহ জুমু‘আর ১০ নং আয়াতে ইরশাদ করেন–
فَاِذَا قُضِیَتِ الصَّلٰوۃُ فَانۡتَشِرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ وَابۡتَغُوۡا مِنۡ فَضۡلِ اللّٰہِ وَاذۡکُرُوا اللّٰہَ کَثِیۡرًا لَّعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ
“অতঃপর যখন নামায সম্পন্ন হয়, তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর। আর অধিক পরিমাণে আল্লাহর জিকির কর। এতে তোমরা সফলকাম হবে।”

এভাবে বহু আয়াত রয়েছে–যেগুলোতে জোরে বা আস্তে কিংবা মনে মনে ইত্যাদি কোন ধরনের শর্ত ছাড়া জিকির করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সুতরাং জিকির সশব্দে বা নিঃশব্দে যে কোনভাবে আদায় করলেই সেসব আয়াতের ‍উপর আমল হয়ে যাবে।

তবে জেহেরী জিকির করার ক্ষেত্রে নিজের প্রতি খিয়াল রেখে কষ্টদায়কভাবে খুব জোরে বা চিৎকার করে জিকির করা পরিহার করার জন্য হাদীস শরীফে বিশেষ নিদের্শনা এসেছে। এ সম্পর্কে সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে–
عَنْ أَبِي مُوسَى رضي الله عنه قَالَ : كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي سَفَرٍ ، فَكُنَّا إِذَا عَلَوْنَا كَبَّرْنَا (وَفِيْ رِوَايَةِ مُسْلِمِ : فَجَعَلَ النَّاسُ يَجْهَرُونَ بِالتَّكْبِيرِ) ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : أَيُّهَا النَّاسُ ارْبَعُوا عَلَى أَنْفُسِكُمْ ، فَإِنَّكُمْ لاَ تَدْعُونَ أَصَمَّ وَلاَ غَائِبًا ، وَلَكِنْ تَدْعُونَ سَمِيعًا بَصِيرًا –
হযরত আবু মূসা আশ‘আরী (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন–“আমরা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাথে এক সফরে ছিলাম। সে সময় যখন আমরা কোন উঁচু স্থানে উঠতাম, তাকবীর বলতাম। (সহীহ মুসলিমের রিওয়ায়াতে রয়েছে : সে সময় লোকেরা উচ্চস্বরে তাকবীর বলতে থাকেন।) তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন–“হে লোক সকল! তোমরা নিজেদের উপর নম্রতা করো। কেননা, তোমরা কোন বধির বা অনুপস্থিত কাউকে ডাকছো না। বরং তোমরা ডাকছো সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টাকে।”
(সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬০৪৭/ অনুরূপ : সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫০০২)

এ হাদীস দ্বারা বুঝা গেলো–জেহেরী জিকির করা সাহাবায়ে কিরাম (রা.)-এর আমলের মধ্যে ছিলো। আর এ হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সা.) তাদেরকে জেহেরী জিকির করতে নিষেধ করেননি, বরং উম্মতের প্রতি দরদী হয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.) হিতাকাংখামূলকভাবে বলেছেন, খুব জোরে জিকির করে যেন নিজের জানকে কষ্ট না দেয়া হয়, বরং জেহেরী জিকির যেন নম্রতার সাথে বা সহনীয়ভাবে করা হয়।

এ সম্পর্কে ফাতহুল মুলহিমে নিম্নরূপ ব্যাখ্যা করা হয়েছে–
كانت السنة رفع الصوت بالتكبير والتهليل كلما علا مرتفعا وكلما هبط واديا لكن بعض الصحابة بالغوا في رفع الصوت ظنوه كلما رفعوا أصواتهم زاد ثوابهم فقال لهم صلى الله عليه وسلم ارفقوا بأنفسكم واخفضوا أصواتكم فإن رفع الصوت إنما يفعله الإنسان لبعد من يخاطبه أو لصممه ليسمعه وأنتم تدعون الله تعالى وليس هو بأصم ولا غائب ولا بعيد بل هو سميع قريب وهو معكم
“জিকিরের সুন্নাহ পদ্ধতি হলো–যতবার কোন উঁচু স্থানে উঠবে এবং নীচু স্থানে নামবে, যথাক্রমে উচ্চস্বরে “আল্লাহু আকবার” ও “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বলবে। কিন্তু কিছু সাহাবী (রা.) উচ্চস্বর করতে গিয়ে খুব বেশী করে ফেলেছেন। তারা ভেবেছিলেন, যত স্বর বৃদ্ধি করবেন, ততবেশী নেকী হবে। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) তাদেরকে বললেন, তোমরা তোমাদের জানের প্রতি নম্রতা করো এবং তোমাদের আওয়াজকে খাটো করো। কেননা, খুব উচ্চস্বর মানুষ করে থাকে যাকে বলছে সে দূরে থাকলে কিংবা বধির হলে তাকে শোনানোর জন্য। আর তোমরা তো আল্লাহকে ডাকছো। তিনি তো বধিরও নন, অনুপস্থিতও নন এবং দূরেও নন। বরং তিনি সর্বশ্রোতা ও নিকটের সত্তা। তিনি তোমদের সাথে আছেন।”
(ফাতহুল মুলহিম শরহে মুসলিম, ১০ম খণ্ড, ২৫৯ পৃষ্ঠা)

(চলবে)

 

১ নং পর্বের লিঙ্ক https://adarshanari.com/featured/7729/

2 thoughts on “সহীহ জিকির ও গলত জিকির | পর্ব ২

  1. ১|তাহলে যারা মজমা কায়েম করে যত ইচ্ছা তত জোরে যিকির করে এমনকি জোরে না পড়াকে মুমিণের কন্ঠস্বর নয় বলে উল্লেখ/ মনে করে তাদের ব্যাপারে মাসআলা কি হবে?
    ২| আমাদের দেশের প্রচলিত যেভাবে যিকিরের পরিবেশ দেখা যায় এক্ষেত্রে শরীয়তের মাসআলা কি?

  2. ১|তাহলে যারা মজমা কায়েম করে যত ইচ্ছা তত জোরে যিকির করে এমনকি জোরে না পড়াকে মুমিণের কন্ঠস্বর নয় বলে উল্লেখ/ মনে করে তাদের ব্যাপারে মাসআলা কি হবে?
    ২| আমাদের দেশের প্রচলিত যেভাবে যিকিরের পরিবেশ দেখা যায় এক্ষেত্রে শরীয়তের মাসআলা কি?
    ৩|বিখ্যাত কেউ যদি বলে জোড়ে যিকির আমরা অনেক সময় করি কারণ আপনাদেরকে তালিম দেওয়ার উদ্দেশ্যে মূলত উচ্চস্বরে মাহফিলে গণহারে/সম্মিলিতভাবে যিকির করার কোনে দলিল নাই তখন শরীয়তের মাসআলা কি হবে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *