মুফতী মনসূরুল হক দা.বা.
রিযিকের প্রশস্ততার আমল
পূর্বে এবং পরে ১১ বার দরূদ শরীফ পাঠ করে এই দু‘আ পড়া
حَسْبُنَااللّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيْل
এই দু‘আ ফিতনা ও বিপদ মুক্তির জন্য ৩৪১ বার। বিশেষ কোন মকছুদ পূরণের জন্য ১১১ বার, রিযিকের প্রশস্ততার, অভাব অনটন দূর হওয়া এবং ঋণ আদায়ের জন্য ৩০৮ বার, বিভিন্ন মুসীবত-পেরেশানী দূর হওয়ার জন্য ১৪০ বার পড়া।
রোগ মুক্তির দু‘আ
যে কোন রোগ থেকে মুক্তির জন্য প্রত্যহ ১১ বার আলহামদু শরীফ পূর্ণ পড়ে পানিতে দম করে পান করা এবং করানো। এর সাথে সূরায়ে ফালাক এবং সূরায়ে নাস পড়ে নেয়া অত্যন্ত ভাল।
শত্রুদের শত্রুতা থেকে মুক্তির জন্য ১১ দিন এক হাজার বার ইশার নামাযের পর এরপর প্রত্যহ একশত বার নিম্নোক্ত দু‘আটি পড়তে থাকবে।
إِنَّا كَفَيْنَاكَ الْمُسْتَهْزِئِينَ
শারীরিক সুস্থতার দু‘আ
সকাল বিকাল ১৪১ বার (يَا سَلَا مُ) ইয়া সালামু পড়বে, আগে পরে তিনবার করে দুরূদ শরীফ পড়ে নেবে। এটা যে কোন সময় পড়া যায়। বিভিন্ন সময়ে ভাগ ভাগ করেও পড়া যায়।
ইসলাহের আমল
নিজের অবস্থার ইসলাহ পরিশুদ্ধি এবং বিভিন্ন ধরনের হক আদায়ের জন্য চল্লিশ দিন পর্যন্ত যে কোন সময়, দৈনিক ২১ বার নিম্নের দু‘আ পড়বে- আগে পরে ১১ বার দুরূদ শরীফ পড়ে নিবে।
(يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوْبِ وَالْاَبْصَارِ يَاخَالِقَ الْلَيْلِ وَالنَّهَارِ يَاعَزِيْزُ يَالَطِيْفُ يَاغَفَّارُ)
বিপদ মুক্তির আমল
শত্রু এবং বিপদ থেকে মুক্তির জন্য বাদ ফজর এবং বাদ মাগরিব তিনবার করে সূরায়ে ইখলাস, ফালাক এবং সূরায়ে নাস পড়া অত্যন্ত উপকারী।
বিরোধীদেরকে দমনের আমল
প্রত্যেক নামাযের পর ১৩ বার-
اللَّهُمَّ اِكْفِنَاهمْ بِمَا شِئْتَ- اللّهُمَّ إِنِّيْ اجْعَلُكَ فِيْ نُحُوْرِهِم، وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ شُرُوْرِهِمْ
বিবাহের জন্য আমল
ভাল পরিবারে তড়িৎ বিবাহের জন্য মাতা-পিতা অথবা কোন মুরুব্বী আগে পরে ১১ বার দুরূদ শরীফ পাঠ করে ১১০০ বার এই দু‘আ পড়বে-
(يَا لَطِيفُ يَا وَدُوْدُ)
আর আগে ১১ বার দুরূদ পাঠ করে ছেলে/মেয়ে ১১০০ বার পড়বে-
(يَا جامِعُ)
পেরেশানী দূর করার আমল
দুনিয়া আসলে চিন্তা এবং পেরেশানীর নাম। দুনিয়ায় যারা বসবাস করে তাদের কোন না কোন ব্যাপারে পেরেশানীতে পড়তেই হয়। তাই সর্বাবস্থায় পেরেশানী থেকে মুক্ত থাকার চেষ্টা করা অনর্থক। তাই পেরেশানী দেখা দিলে অধৈর্য না হওয়া, অস্থির না হওয়া। এর তরীকা দুইটি-
ক. এই মনে করা যে, আল্লাহ পাক তাঁর বান্দার ব্যাপারে যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। যা কিছু ঘটে তাঁরই হুকুমে ঘটে। তাঁর হুকুম ব্যতীত কোন কিছুই হতে পারে না।
খ. এই মনে করা যে আল্লাহ পাক হিকমতওয়ালা, তাঁর কোন কাজ হিকমতবিহীন হয় না। তাঁর কাজের অন্তরালে গভীর রহস্য-তাৎপর্য নিহিত থাকে, যা বান্দার জন্য অবগত হওয়ার হুকুমও নেই, প্রয়োজনও নেই। বর্ণিত দু’টি বিষয় বারবার চিন্তা করা উচিৎ, যাতে একটু চিন্তা ভাবনা করলেই মনে এই বিষয় দু’টির উদয় সহজেই হয়। এছাড়া নিম্ন বর্ণিত আমলসমূহ করা।
(১) অধিক পরিমাণে নফল নামায আদায় করা।
(২) উঠা-বসা, চলা-ফেরা সর্বাবস্থায় অধিক পরিমাণে আল্লাহ পাকের যিকির করতে থাকা। নির্দিষ্ট সময়, পরিমাণ অথবা কোন নির্ধারিত যিকিরের প্রতি খেয়াল রাখবে না। যখন যে যিকির মনে আসে তাই করা।
যেমন- (سُبْحانَ اللَّهِ وَالحَمْدُ لِلَّهِ وَاللَّهُ أكْبَرُ وَلاَ إلهَ إلاَّ اللهُ)
(৩) সর্বদা আখিরাতের ছাওয়াবের প্রতি ধ্যান রাখা, যেমন- যদি কোন সন্তানের মৃত্যু হয়, তাহলে সে আখিরাতে শাফা‘আত করবে- এই মনে করে ধৈর্য ধারণ করা।
(৪) কারো মৃত্যুর সময় যে প্রিয় পাত্র জীবিত আছে, তার প্রতি মনকে নিয়োজিত রাখা।
(৫) অধিক পরিমাণে (يَاحَيُّ يَاقَيُّوْمُ) পড়া। রাত দিন কমপক্ষে পাঁচশত বার এবং বৈঠকে একশত বার অবশ্যই পড়া।
(৬) “তাবলীগে দীন” কিতাবের সবর, শুকর এবং তাফভীজ সম্পর্কীয় অধ্যায় পড়া-শুনা করা।
(৭) আল্লাহ এবং আল্লাহওয়ালাদের অথবা নেক মুসলমানদের সাহচর্য অবলম্বন করা। তাদের সাথে ওঠাবসা করা। যদি সাহচর্য অবলম্বনে সুযোগ না হয় তাহলে তাদের মাওয়ায়েয ও মালফূযাত (জীবন ও কর্ম সম্পর্কীয় বই) পড়াশুনা করা।
(৮) জাযাউল আমল এবং হায়াতুল মুসলিমীন রুহ নং ২৩ নিজে পড়া এবং পরিবারের অন্যান্য লোকজনকে পড়ে শুনানো।
রিযিকের বরকতের জন্য আমল
নিজে অথবা পরিবারের লোকজন দ্বারা দৈনিক ১১ বার (يَامُغْنِيْ) পড়বে এবং পড়াবে।
হিফাজতের আমল
* নিজের এবং পরিবারের হিফাজতের জন্য সূরায়ে ইখলাস, ফালাক এবং নাস বিসমিল্লাহ সহ তিন তিনবার করে বাদ ফজর এবং বাদ মাগরিব নিজেও পড়বে এবং পরিবারে লোকজনদেরকেও পড়তে বলবে।
* ফরজ নামায আদায় করে যদি নফল নামায পড়ার সময় হয় তাহলে দুই রাকা‘আত নফল নামায আদায় করে অত্যন্ত একাগ্রতা এবং তাওয়াজ্জুর সাথে মুনাজাত করা। এ নামাযকে ফিক্হের পরিভাষায় সালাতুল হাজত বলে। এ সালাতুল হাজত গুরুত্বের সাথে আদায় করা চাই।
* পরিবারের মধ্যে যারা নামাযের পাবন্দী করে না, তাদেরকে নামাযের পাবন্দীর জন্য তাকীদ করতে থাকা।
আল্লাহপাক সমগ্র বিশ্বের পালনকর্তা, দয়াময়, করুণাময়, সাহায্যকারী, অভিভাবক, পরাক্রমশালী, কারীম, মালিক, হাকীম। তাঁর কোন কাজ হিকমত বিহীন হয় না একথা বারবার গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করবে।
অনেক শুকরিয়া জযাকাল্লাহু খাইর
ধন্যবাদ 🙂
শুকরিয়া পড়ে অনেক উপকার হইছে
তাহলে আমাদের কষ্ট সার্থক 🙂 ধন্যবাদ 😀