ক্যালেন্ডারে কুরআনের আয়াত: ইসলাম কী বলে?

মুফতি এনায়েতুল্লাহ । । 

বাড়ি-ঘর, অফিস-আদালত, মসজিদ-মাদরাসা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কোরআনে কারিমের আয়াত ও হাদিস লিখিত ওয়ালমেট, ক্যালেন্ডার, শোপিস ও বিভিন্ন আসবাবপত্র ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে।

এসবের কোনোটির মধ্যে সরাসরি আরবি লেখা থাকে আবার কোনোটির মধ্যে থাকে তরজমা। অনেক সময় আবার দেখা যায় কোরআনের আয়াত ও হাদিসের ক্যালিওগ্রাফি।

ইদানিং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কোরআনে কারিমের আয়াত ও হাদিসের বাণী দিয়ে বার্ষিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করে। এসব ক্যালেন্ডারের পাতা দিয়ে বইয়ের মলাট করা থেকে শুরু করে পড়ার টেবিলে বিছিয়ে ব্যবহার করার এবং বিভিন্ন স্থানে সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হয়।

এ বিষয়ে ইসলামের বিধান হলো- শুধু প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে কোরআন-হাদিস লিখিত বা ক্যালিওগ্রাফি করা ওয়ালমেট বা শোপিস ব্যবহার করা উচিত নয়। কোরআনে কারিম আল্লাহতায়ালার কালাম। এটি প্রদর্শনের বস্তু নয়। তবে কেউ যদি এ উদ্দেশ্যে এগুলো ব্যবহার করে যে, এর দ্বারা আল্লাহতায়ালার কথা স্মরণ হবে; এতে লিখিত বাণীর হেদায়েত ও শিক্ষা গ্রহণ করা যাবে- তাহলে শর্ত সাপেক্ষে তা করা যেতে পারে।

এ ক্ষেত্রে শর্তগুলো হলো- কোরআনের আয়াত ও হাদিসের মর্যাদার প্রতি খেয়াল রাখা। যেন এসব নিচে পড়ে না যায় বা নাপাক কিছুর সঙ্গে স্পর্শ না হয়; আর ধুলাবালি থেকে নিয়মিত পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা হয়।

কোরআন-হাদিস লিখিত ক্যালেন্ডারের ক্ষেত্রেও একই হুকুম। কোরআন-হাদিসের মর্যাদার প্রতি খেয়াল রাখা। এগুলো যাতে বাতাসে যাতে উড়াউড়ি না করে সে ব্যবস্থা করা। তবে ক্যালেন্ডারে কোরআনের আয়াত বা হাদিস না লেখাই উচিত। কারণ মানুষ এটিকে সেভাবে মর্যাদা দিয়ে ব্যবহার করে না এবং মাস ও বছর শেষে তা যথাযথভাবে সংরক্ষণ করে না। যেখানে সেখানে তা ফেলে দেয়।

আর কোরআন-হাদিস লিখিত ক্যালেন্ডার দ্বারা কিতাব বা বই-পুস্তক বাঁধাই করা মাকরূহ। এটা কোরআন-হাদিসের মর্যাদা পরিপন্থী কাজ। এ ধরনের ক্যালেন্ডার প্রয়োজন শেষে সংরক্ষণ করতে হবে। যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে পুড়িয়ে ছাইগুলো কোনো পবিত্র স্থানে দাফন করে দেবে।

লেখক : ইসলাম বিভাগীয় সম্পাদক, বার্তা ২৪ ডটকম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *