আমরা অনেকেই হয়তো অনেক আমল করি, প্রকাশ্যে বা অপ্রকাশ্যে। প্রতিটি আমলই বিশেষ। তবে আমলের মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হল ইখলাস। অর্থাৎ, আমলটা শুধুই আল্লাহর জন্য হওয়া এবং এতে লোক দেখানোর মত কোন পার্থিব উদ্দেশ্য না থাকা।
তাই আমরা এমন একটি আমলের অভ্যাস করে নিতে পারি, যা হবে শুধুই আল্লাহর জন্য, যে আমলটির কথা আপনি এবং আল্লাহ ছাড়া কেউ জানবে না এবং সে আমলটির মধ্যে কোন প্রকার রিয়া বা ভেজাল থাকবে না।
সেটি যে কোন ছোট নেক আমলও হতে পারে। হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, তিনি বলেন,
سئل النبي – صلى الله عليه وسلم -: أي الأعمال أحب إلى الله؟ قال: أدومها وإن قل. وقال: اكلفوا من الأعمال ما تطيقون . رواه البخاري
“রাসুলুল্লাহ (সা.) এর কাছে জানতে চাওয়া হল, কোন আমল আল্লাহর অধিক প্রিয়? রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, “যে আমল নিয়মিত করা হয়, যদিও তা হয় অল্প”। তিনি আরও বললেন, “তোমরা সাধ্যানুযায়ী কিছু আমলের অভ্যাস করে নাও।” – বুখারী : ৬৪৬৫
অতএব, এ আমলটি যে খুব আহামরি কিছু হতে হবে তা নয়। বরং সেটি হতে পারে সাধ্যানুযায়ী যে কোন আমল। প্রতিদিন গোপনে পাঁচ টাকা করে সাদকা করা অথবা সাধ্যমত কম বা বেশিও করা যেতে পারে। হাদিস শরীফে এসেছে, প্রিয় নবী (সা.) সাত প্রকার ব্যক্তির কথা বলেছেন, যাদেরকে আল্লাহ কেয়ামতের ময়দানে তাঁর আরশের ছায়াতলে ছায়া দান করবেন, যেদিন আরশের ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া থাকবে না। তন্মধ্যে এক ব্যক্তি হল,
رجل تصدق بصدقة فأخفاها حتى لا تعلم شماله ما تنفق يمينه
“যে ব্যক্তি কোন সাদকা করে, অতঃপর এমনই গোপনে করে যে, তার বাম হাত টের পায় না যে ডান হাত কি দান করেছে।” – বুখারী, মুসলিম
অথবা জনকল্যাণ মূলক কিছু কাজ গোপনে করলেন বা কুরআন অধ্যয়ন করলেন অথবা তাহাজ্জুদের নামায আদায় করলেন, যা কেবল আপনার এবং আপনার আল্লাহর মাঝেই থাকবে।
এছাড়াও প্রিয় নবী (সা.) এর বিভিন্ন হাদীস থেকে আমরা অসুস্থদের সাক্ষাতে যাওয়া, বৃদ্ধ ও বয়স্কদের দেখাশোনা করার গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে পারি। জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা আপনি তাদের সাক্ষাত থেকে পেতে পারেন। তবে সাক্ষাতের সময় খেয়াল রাখবেন, এতে যেন শুধু বসে বসে সময় নষ্ট না করা হয়। অসুস্থও ব্যক্তির মন বুঝে আপনি কিছু উত্তম কথা তার সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন।
এধরনের গোপন আমল রপ্ত ও অভ্যাস করার চেষ্টা করুন, যাতে মানুষের থেকে কোন কিছু প্রাপ্তির আশা থাকবে না। এটি আপনাকে আল্লাহর সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক তৈরিতে সাহায্য করবে এবং আপনি এর থেকে তীব্রভাবে উপকৃত হবেন।
রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন ইয়া রাব্ব।