মেহদী আমাদের দেশে ব্যাপক হারে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এর পূর্ণ বৈশিষ্ট্য সাধারণ লােকের তাে দূরের কথা অনেক শিক্ষিত লােকেরও জানা নাই। সাধারণত মেহেদী পাতা পিষে হাতে পায়ে সৌন্দর্য বৃদ্ধি অথবা গরমী দূর করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
বিবাহ-শাদী, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা ছাড়াও অন্যান্য অনুষ্ঠানে মেহদীর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। ডাক্তারী গবেষণানুযায়ী মেহদী রক্ত পরিষ্কারকারী এবং চর্ম রােগের জন্য উপকারী।
কুষ্ঠরােগী, আগুনে পােড়া এবং পান্ডব রােগের জন্যও মেহদীর ব্যবহার খুব উপকারী। মেহদীর প্রলেপ ফোলা, ফোস্কা, আগুনে চামড়া পুড়ে যাওয়া রােগীর জন্য খুবই উত্তম প্রতিষেধক। মেহদীর বৈশিষ্ট্য ঠান্ডা।
হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে মেহদী পাতাকে ঔষধ হিসাবে ব্যবহার করতেন।
ক) ফোড়া পাকানাের জন্য (খ) শরীরে কাঁটা ইত্যাদি বিলে (গ) মাথা ব্যথার জন্য।
হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খাদেমা হযরত সালামা বিনতে উম্মে রাফে রা. বলেন, “যখনই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোন ফোঁড়া পাচড়া বের হত অথবা কাটা বা এই প্রকারের কিছু ঢুকে যেত তখনই তিনি আমাকে বলতেন এর উপর মেহদী লাগিয়ে দাও।” -মিশকাত, তিরমিযী
অপর এক হাদীসে ইবনে মাজার বরাত দিয়ে আল্লামা ইবনে কাইয়্যিম রহ. নকল করেন, “যখন হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মাথা ব্যথা দেখা দিত তখনই তিনি মাথায় মেহেদী লাগাতেন আর বলতে থাকতেন যে, আল্লাহর হুকুমে এটা মাথা ব্যথার শেফাদানকারী।
তবে রাসূল সা. দাড়িতে মেহেদী দিয়েছেন কিনা এই ব্যাপারে মতভেদ আছে। সহীহ কথা হল রাসূল সাঃ দাড়িতে মেহেদী দিতেন না, বরং দাড়িতে প্রচুর তেল দিতেন, যার ফলে তার দাড়ি কিছুটা লালচে হয়ে গিয়েছিল। এটাকেই অনেকে নবীজী সা. দাড়িতে মেহেদী দিয়েছেন মর্মে ভুল করেছেন।
তবে রাসূল সা. মেহেদী লাগানো পছন্দ করতেন। হযরত আবু বকর রা., হযরত ইবনে আব্বাস রা. সহ অনেক সাহাবী দাড়িতে, চুলে মেহেদী লাগাতেন। সুতরাং এটিকে কিছু সাহাবাদের সুন্নাত বলা যায়। কিন্তু রাসূল সা. এর সুন্নাত নিশ্চিতভাবে বলা উচিত নয়। তবে মুস্তাহাব এতে কোন সন্দেহ নেই।
(তিব্বে নববী থেকে নেওয়া)