১. পৃথিবী সৃষ্টি করা হয়
আল্লাহ তায়ালা নভোমণ্ডল, ভূমণ্ডল ও গোটা জগৎকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। এই ছয় দিনের শেষ দিন ছিল জুমার দিন। বিশুদ্ধ বর্ণনা অনুসারে যে ছয় দিনে জগৎ সৃষ্টি করা হয়েছে, তা রবিবার থেকে শুরু হয়ে শুক্রবারে শেষ হয়।
রবি ও সোমবার- এ দুই দিনে পৃথিবী সৃষ্টি করা হয়েছে। মঙ্গল ও বুধবার ভূমণ্ডলের সাজসরঞ্জাম- পাহাড়, নদী, খনি, বৃক্ষ, সৃষ্টজীবের পানাহারের বস্তু সৃষ্টি করা হয়েছে। বৃহস্পতি ও শুক্রবার সাত আকাশ সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দিনেই কেয়ামত সংগঠিত হবে।
২. জুমার দিনে হজরত আদম আ. সৃষ্টি করা হয়
ইহুদি ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের আলেমগণ এবং মুসলিম সম্প্রদায়েরও কয়েকজন আলেমের মত হলো, আল্লাহ তাআলা সৃষ্ট জগতের সৃষ্টি সম্পর্কে ছয় দিনের কথা উল্লেখ করেছেন।
সেই দিনগুলোর মধ্য থেকে একদিন হজরত আদম আ.-ও অস্তিত্বের জগতে আগমন করেছেন এবং তা ছিলো জুমার দিন শুক্রবার। আবার দিনেই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং এ দিনেই জান্নাত থেকে পৃথিবীতে নামানো হয়।
৩. ইহুদি-নাসারাদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল
জুমার দিন মুহাম্মদ সা. এর উম্মত এর জন্য একটি মহান দিন। এ জুমার দিনটিকে সম্মান করার জন্য ইহুদি-নাসারাদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল; কিন্তু তারা মতবিরোধ করে এই দিনটিকে প্রত্যাখ্যান করেছিল।
অতঃপর ইহুদিরা শনিবারকে আর খ্রিস্টানরা রবিবারকে তাদের ইবাদতের দিন বানিয়েছিল। অবশেষে আল্লাহ তায়ালা মুহাম্মদ সা. এর উম্মতের জন্য শুক্রবারকে মহান দিবস ও ফযীজিতের দিন হিসেবে দান করেছেন। আর উম্মতে মুহাম্মদী তা গ্রহণ করে নিল। [বুখারী ৮৭৬; মুসলিম ৮৫৫]
৪. জুমার দিন মসজিদের দরজায় ফেরেশতারা অবস্থান করেন
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জুমার দিন মসজিদের দরজায় ফেরেশতারা অবস্থান করেন এবং ক্রমানুসারে আগমনকারীদের নাম লিখতে থাকেন।
যিনি সবার আগে আসেন তিনি ওই ব্যক্তির ন্যায় যিনি একটি মোটাতাজা উট কুরবানি করেন। এরপর যিনি আসেন তিনি ওই ব্যক্তির ন্যায় যিনি একটি গাভী কুরবানি করেন। এরপর যিনি আসেন তিনি ওই ব্যক্তির ন্যায় যিনি একটি দুম্বা কুরবানি করেন। তারপর আগমনকারী ব্যক্তি মুরগি দানকারীর ন্যায়। এরপর আগমনকারী ব্যক্তি ডিম দানকারীর ন্যায়।
তারপর ইমাম যখন (খুৎবার প্রদানের জন্য) বের হন তখন ফিরিশিতা তাদের দফতর বন্ধ করে দেন এবং মনোযোগ সহকারে খুৎবা শুনতে থাকেন। [বুখারি শরিফ হাদিস নং-৮৮২]
৫. জুমার দিনে দুয়া কবুল হয়
রাসুল সা. বলেন, জুমার দিনে এমন একটি সময় আছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা চায়, তা-ই তাকে দেওয়া হয়। আর এ সময়টি হল জুমার দিন আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত, একটি সময়। [বুখারি ৯৩৫]
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা: রকিব মুহাম্মদ