একসময়ের ছোটপর্দার শীর্ষ অভিনেত্রী ও মডেল সুজানা জাফর পাপের রঙ্গিন
জগৎ ত্যাগ করে আলোর দুনিয়ায় প্রত্যাবর্তনের ঘোষণা দিয়েছেন। ২০১৮ সালে উমরাহ করতে গিয়ে তিনি হৃদয়জগতে পরিবর্তন টের পান৷ এরপর বিভিন্ন ইসলামী গ্রন্থ অধ্যয়ন করে বুঝতে পারেন কোনটা বাস্তবতা আর কোনটা ঘোরগ্রস্ততা, কোনটা আলো আর কোনটা আলেয়া।
মিডিয়া সাবেক শিল্পীদের পুরোপুরি বিস্মৃত হয় না। কেননা খবর-সংকট দেখা দিলে তাদের খবর তৈরি করে নিতে হয়। এজন্য সাইড হিরো/হিরোইন থেকে এক্সট্রা শিল্পী, এমনকি কাটপিস করাদেরও খোঁজ খবর নিতে হয়৷ তাদের হালচাল, জীবনের বাঁক ও গতিপ্রকৃতি মানুষের কাছে তুলে ধরতে হয়।
কিন্তু সুজানাদের জীবনের এতবড় পরিবর্তনও তাদের দৃষ্টি আকর্ষণে সমর্থ হয় না। খবর-সংকটের সময়ও না। কী হতে পারে এর কারণ?
আমাতুল্লাহর (হ্যাপি) প্রতিও সাংবাদিকদের তেমন ভ্রুক্ষেপ ছিলো না। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়নি অতীত ও বর্তমান জীবনের পার্থক্যের কথা। জীবনে আলোর দিশা পাওয়ার মুহূর্তটির অনুভূতির কথা। প্রশ্ন করা হয়নি কোন লাইফস্টাইলে সে অধিক সুখ পেয়েছে? স্বাধীন বিচরণে নাকি ইসলামী আচরণে? হিজাব কি তার দম বন্ধ করে দিয়েছিল নাকি বুকভরে শ্বাসগ্রহণের দ্বার উন্মোচন করেছিল।
এই লেখাটি যখন লিখছি তখন ব্যস্ততম অভিনেত্রী এনি খান মিডিয়া ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এই মুহূর্তে বিভিন্ন টেলিভিশনে তার ৩ টি সিরিয়াল প্রচারিত হচ্ছে আর কয়েকটি প্রচারিত হওয়ার অপেক্ষায়। সেগুলোর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়লেও এনি খানের ভবিষ্যৎ ইনশাআল্লাহ খুবই উজ্জ্বল ।
বলা হয়, যারা শিশুকালে কায়দা রেহাল নিয়ে মক্তবে কুরআন শেখে। তাদের হৃদয়ে কুরআন একটা স্থায়ী ছাপ রেখে দেয়। অনাচার, অবাধ্যতা ও বস্তুবাদের ধূলিঝড় সে ছাপে পুরু আস্তর তৈরি করতে পারে ঠিকই, কিন্তু একেবারে
মুছে দিতে পারে না। কখনো হেদায়েতের শীতল ঝাপটা পেলে সেই অন্তর ধূলিমুক্ত হতে পারে। তাতে কুরআনী দীপশিখা প্রজ্বলিত হতে পারে।
এনি খান শৈশবেও কুরআনের ছোঁয়া পাননি৷ শিশুশিল্পী হিসেবেই অভিনয় জগতে পদার্পণ করেছিলেন। তবু তার হৃদয় বঞ্চিত হয়নি। কুরআনের ছাপহীন শুষ্ক অন্তরটিতেও করুণাধারা বর্ষিত হয়েছে। কত মেহেরবান আমার আল্লাহ।
বাংলা চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বৃহৎ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা-এডমিন এনি খানের ‘প্রত্যাবর্তন’ মেনে নিতে পারেনি। সে নিজের গ্রুপে কঠোর সমালোচনা করে পোস্ট দিয়েছে। দুঃখ লাগলো সেই পোস্টে লাভ রিয়েক্টের আধিক্য দেখে। প্রোফাইল চেক করে বুঝলাম এডমিন সাহেব আসলে নাস্তিক। মুচকি হেসে ভাবলাম ‘জ্বলুক না একটু’।
সাধারণ সৌদি নারী সালওয়ার রসকষহীন ইন্টার্ভিউ বিশ্বমিডিয়ায় ফ্রন্টপেজে আসে। কিন্তু সেলিব্রেটি এনি ইসলামকে নিয়ে একটা শব্দও লেখা হয় না। সালওয়া পশ্চিমা লাইফস্টাইলে সুখ খুঁজে পায়। মিডিয়া তাকে বিশ্বাস করে। এনি ইসলাম যখন বলে ‘দ্বীনের পথে এসে কীযে শান্তি পেয়েছি ভাই, বলে বোঝাতে পারবো না’ তাকে বিশ্বাস করা হয় না।
বাংলাদেশের শীর্ষ দুটি পত্রিকা সুজানা ও এনি খান সম্পর্কে কোনো নিউজই করেনি। একটি নারীবাদী অপরটি তসলিমা নাসরিনের মুখপাত্র। স্ব স্ব আদর্শের উপর এই অবিচলতা এক হিসেবে প্রশংসনীয়। কিন্তু ওরা পারলে আমরা কেন পারি না ? সংবাদের জন্য কেন ওমুখো হতে যাই? আমরা কি পারি না এতটুকু গাইরত অর্জন করতে? ইসলাম বিদ্বেষী এই মিডিয়াকে বর্জন করতে? এখন তো আলহামদুলিল্লাহ আমাদের ঘরের নিউজ পোর্টালগুলোও (রাহবার-২৪, আউর ইসলাম, ইসলামী টাইমস, ইনসাফ) বেশ মানসম্পন্ন।
যারা সাইদ আহমদ পালনপুরী বা যুবায়ের আনসারীদের প্রয়াণেও একফোঁটা কালি ঝরায় না, অথচ হিরো আলমদের জীবন যাপন প্রচারযোগ্য মনে করে, বিশ্বজয়ী কুরআনের হাফেজদের জন্য দু’লাইন লেখার প্রয়োজন মনে করে না, অথচ অগ্নীকাণ্ডে পাইপ চেপে ধরলে জাতীয় বীর হিসেবে তুলে ধরে, এমন নিষ্ঠাহীন, অবিচারী, ‘কালো’ সাংবাদিকতাকে কিছুতেই নিজেরদের ‘চোখ-কান’ হিসেবে মেনে নেয়া যায় না।
সুজানা জাফর, এনি ইসলাম ও আমাতুল্লাহকে বলবো, দুনিয়ামুখীতা ত্যাগ করলে দুনিয়াদাররা তো ঘৃণা করবেই। কিন্তু আল্লাহর দরবারে যার গমনাগমন দুনিয়াদারদের নাক সেঁটকানোতে তার কি আসে যায়? ইসলামপ্রিয় জনমানুষের পক্ষ থেকে স্বাগতম আপনাদের।
%%CHANGEAUTHOR%% set %%AUTHOR%% as the author of the ticket