বিয়েতে প্রচলিত কিছু হারাম সংস্কৃতি !

মাসিক আদর্শ নারীঃ বিয়ে জীবনের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা। আর সূচনাটাই যদি গোনাহ আর অপসংস্কৃতি দিয়ে শুরু হয় তা খুব নিন্দনীয়। অপরদিকে এই পবিত্র সম্পর্কের সূচনা যদি সুন্নাহ ও ইসলামী বিধানমেনে হয় তাহলে তার বরকত সারা জীবন পাওয়া যাবে ইন শা আল্লাহ। আমাদের সমাজের প্রচলিত এসব অপসংস্কৃতি যেন অঘোষিত ভাবে বাঙালির সংস্কৃতি তে পরিণত হয়েছে। তাই আসুন আজ আমরা বিয়েতে প্রচলিত এমন কিছু কাজ সম্পর্কে জানবো যা আমাদের বর্জন করা উচিত।

পাত্রী দেখাঃ বিয়ের জন্য পাত্রী দেখার সময় পাত্রপক্ষের অনেক পুরুষ পাত্রী দেখতে আসে এবং সবাই মিলেই পাত্রীকে দেখে। যা ইসলাম সমর্থন করে না। পাত্রীকে শুধুই পাত্র এবং পাত্রের নিকট মহিলারা দেখতে পারবে। অন্য কোন পুরুষ দেখলে তা পর্দার বিধান লঙ্ঘনের গোনাহ হবে। তাছাড়া এটি দৃষ্টিকটুও বটে। তাই এ থেকে আমাদের বিরত থাকা উচিত।

পাত্র-পাত্রীর যোগাযোগঃ বিয়ে ঠিক হয়ে গেলে অনেক পাত্র-পাত্রী ফোনে বা বাস্তবে নিজেদের সাথে পরিচিত পর্বের জন্য রেগুলার দেখা ও কথা বলে। ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসএপ কিংবা ইমু’র মাধ্যমে রাতের পর রাত মেসেজিং বা চ্যাটিং চলে। অথচ বিয়ের আগে এসমস্ত দেখা ও কথা বলা জায়েজ হবে না। বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পরেই কেবল এসব পর্ব সম্পাদন করা যাবে।

গায়ে হলুদঃ গায়ে হলুদের নামে গান বাজনা ,বেপর্দা মেলামেশা হয়ে থাকে। যা ইসলাম সমর্থন করে না। গায়ে হলুদ ইসলামী সংস্কৃতি নয়। অনেক জায়গায় পাত্রকে তার ভাবীরা গোসল দেয়ার প্রচলন আছে,যা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। গায়ে হলুদের মত নিকৃষ্টি এই কাজকে মুসলিম সমাজ থেকে বর্জন করা জরুরী।

বিয়েতে বেপর্দা নারীর সয়লাবঃ বিয়ের অনুষ্ঠানে নারীরা পর্দা রক্ষা না করেই সেজেগুজে অনুষ্ঠানগুলোতে অবাধ বিচরণ করে। যা পর্দার বিধান লঙ্ঘনের গোনাহের কাজ। অনেক পর্দানশীন নারীরাও বিয়ের অনুষ্ঠানে পর্দাহীন অবস্থায় চলে যায়, পর্দাকে তখন একদিনের জন্য তেমন জরুরি মনে করা না যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

বিয়ে বাড়িতে গানবাজনাঃ বিয়ে একটি ইবাদাত। অথচ বিয়ে উপলক্ষে অশ্লীল গানবাজনার প্রচলন অত্যন্ত গোনাহের একটি কাজ। ইবাদত কে হারাম উপায়ে নষ্ট করে পাপের বোঝা ভারি করা হয়।

যৌতুকঃ ইসলামে যৌতুক দেওয়া ও নেয়া জঘন্যতম অপরাধ। বর্তমানে সরাসরি বা আকার ইঙ্গিতে যৌতুক দাবী করা হয়। যা সম্পূর্ণ হারাম।

উকিল পিতাঃ বিয়েতে একজনকে উকিল পিতা বানানো হয় এবং এটিকে একটি সম্পর্কের মত করে দেখা হয়। অথচ ইসলাম এর অনুমোদন দেয় না। এগুলো সামাজিক কুপ্রথা।

ছেলেকে সোনার উপহারঃ অনেক পাত্রীপক্ষ জামাইকে সোনার আংটি বা চেইন উপহার দিয়ে বিয়ে বাড়িতে ঢোকায়। অথচ পুরুষের জন্য সোনা ব্যবহার হারাম। উপহার দিতে হলে অন্য হালাল কিছু দেয়া যায়।

শ্যালিকার হাত ধোয়ানোঃ অনেক বিয়ে বাড়িতে জামাইকে তার শ্যালিকার হাত ধোয়ানো ও হাসি টাট্টার প্রচলন আছে। অথচ শ্যালিকার জন্য বোনের স্বামীর সাথে পর্দা করা ফরজ। অথচ এই জঘন্য কাজটি প্রকাশ্যেই করা হয় এবং সবাই ব্যাপারটিকে হাসি তামাশা হিসেবেই নেয়।

পায়ে ধরে সালামঃ ইসলামে পায়ে ধরে সালাম দেয়ার বিধান নেই।বরং পায়ে ধরে সালাম দেয়া অনেক ক্ষেত্রেই সিজদার মত হয়ে যায়। যা শিরক এর গুনাহ হয়। তাই এটি বর্জন করা উচিত। সালাম দিতে ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলা উচিত।

মুশরিকদের অনুকরণঃ অনেক অঞ্চলেই বধুকে ঘরে ঢোকানোর সময় কুলাতে দুর্বা ঘাস , লতাপাতা, হলুদ, মেহদী, তেল , আগুনের বাতাস ইত্যাদি দেয়াকে শুভ কাজ মনে করা হয়। যা সরাসরি মুশরিকদের অনুকরণ। এসব সম্পূর্ণ পরিত্যাজ্য।

এরকম আরও অনেক ইসলাম বিরোধী কুপ্রথা ও গোনাহের কাজের মাধ্যমে একটি বিয়ে সম্পন্ন হয়। যার ফলাফল হিসেবে দেখা যায় বিয়ে পরবর্তী জীবনে বরকত থাকে না। অশান্তি লেগেই থাকে। যে সম্পর্কের সূচনাই হয় হারাম কাজ দিয়ে তাতে আল্লাহ বরকত দিবে না এটাই স্বাভাবিক। তাই বিয়ের অনুষ্ঠানে এসব হারাম সংস্কৃতি বন্ধ করা আবশ্যক। আসুন আমরা সবাই এসব হারাম কাজ থেকে মুক্ত হয়ে বিয়েকে হালাল ভাবে ইবাদত বানিয়ে নেই

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *