মুফতী আবুল হাসান শামসাবাদী
হিন্দু, বৌদ্ধ ও অন্যান্যদের ‘ধর্মগ্রন্থ’ সম্পর্কে ডাক্তার জাকির নায়েকের মতবাদ হলো–
(ক) “হিন্দুদের সবচেয়ে পবিত্র ও বিশুদ্ধ ধর্মগ্রন্থসমূহ হচ্ছে বেদ, উপনিষদ, ইতিহাস, শ্রীভগবতগীতা ও পুরাণ ইত্যাদি।”
(দ্রষ্টব্য : ডা. জাকির নায়েক লেকচার সমগ্র, ভলিয়াম নং ১, পৃষ্ঠা নং ২৫৭ ॥ পিস পাবলিকেশন, ৩৮/৩, কম্পিউচার মার্কেট, বাংলাবাজার, ঢাকা)
(খ) “সবচেয়ে নির্ভেজাল হিন্দুধর্ম গ্রন্থ হচ্ছে বেদ।”
(দ্রষ্টব্য : ডা. জাকির নায়েক লেকচার সমগ্র, ভলিয়াম নং ১, পৃষ্ঠা নং ২৭৭ ॥ পিস পাবলিকেশন, ৩৮/৩, কম্পিউচার মার্কেট, বাংলাবাজার, ঢাকা)
(গ) “বেদগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পবিত্র হলো ঋগবেদ।”
(দ্রষ্টব্য : ডা. জাকির নায়েক লেকচার সমগ্র, ভলিয়াম নং ২, পৃষ্ঠা নং ৪৩৭ ॥ পিস পাবলিকেশন, ৩৮/৩, কম্পিউচার মার্কেট, বাংলাবাজার, ঢাকা)
(ঘ) “মূল ‘বেদ’ আল্লাহর বাণী হতে পারে। … বেদ তখনকার জন্য আল্লাহর বাণী ছিল।”
(দ্রষ্টব্য : ডা. জাকির নায়েক লেকচার সমগ্র, ভলিয়াম নং ২, পৃষ্ঠা নং ১৬২ ॥ পিস পাবলিকেশন, ৩৮/৩, কম্পিউচার মার্কেট, বাংলাবাজার, ঢাকা)
(ঙ) “হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলো, বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থগুলো, পারসি ধর্মগ্রন্থ হতে পারে এগুলো আল্লাহর বাণী। আসমানী কিতাব হলেও সেগুলো নির্দিষ্ট জাতি আর নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। ”
(দ্রষ্টব্য : ডা. জাকির নায়েক লেকচার সমগ্র, ভলিয়াম নং ৪, পৃষ্ঠা নং ১১৯ ॥ পিস পাবলিকেশন, ৩৮/৩, কম্পিউচার মার্কেট, বাংলাবাজার, ঢাকা)
ডাক্তার জাকির নায়েকের উক্ত লেকচারসমূহের মূল ভিডিও-স্ক্রিপ্ট ইন্টারনেটের ইউটিউবে পাওয়া যায়। যেমন, বেদ, গীতা ইত্যাদি আল্লাহর বাণী হওয়া সম্পর্কে ডাক্তার জাকির নায়েকের ভিডিও স্ক্রিপ্ট নিম্নোক্ত ইউটিউব লিঙ্কে রয়েছে (উল্লেখ্য যে, এ ভিডিওটির ৫ মিনিট ৫২ সেকেন্ড থেকে সেই কথাটি পাবেন)–
আর যদি উক্ত মূল লেকচারের পুরো ভিডিওটি পেতে চা্ন, তাহলে নিম্নের লিঙ্কে লগইন করুন (উল্লেখ্য যে, এ ভিডিওটির ২ ঘন্টা, ৩১ মিনিট ১৮ সেকেন্ড থেকে সেই কথা পাবেন)–
♦ পর্যালোচনা ♦
বিভিন্ন হিন্দু, বৌদ্ধ প্রভৃতি অমূলক ধর্মের ধর্মগ্রন্থকে আল্লাহর বাণী হতে পারে বা বিশুদ্ধ, পবিত্র, নির্ভেজাল ইত্যাদি বিশেষণ দিয়ে ডাক্তার জাকির নায়েক মুসলমানদের বিশ্বাসকে হুমকীর মুখে ঠেলে দিয়েছেন। তাইতো জাকির নায়েকের উক্ত লেকচার কনফারেন্সে আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্যে হিন্দু পণ্ডিত শ্রী শ্রী রবি শংকর মুসলমানদেরকে নসীহত করে বলেছেন– “তাহলে এখন আপনারা সবাই বেদকে শ্রদ্ধা করবেন। ডাক্তার জাকির নায়েক নিজেই বলেছেন, সবারই বেদকে শ্রদ্ধা করা উচিত। আপনারা ভাববেন না যে, এটা কাফির-মুশরিকদের বই। প্রত্যেক মুসলমানেরই এই গ্রন্থকে শ্রদ্ধা করা উচিত। আমি ডাক্তার জাকির
নায়েককে ধন্যবাদ জানাতে চাই, তিনি বেদের সত্যতাকে সবার সামনে যথাযথভাবে তুলে ধরেছেন।”
(দ্রষ্টব্য : ডাক্তার জাকির নায়েক লেকচার সমগ্র, ভলিয়াম নং ২, পৃষ্ঠা নং ৪৭৩)
ডাক্তার জাকির নায়েকের বক্তব্যের উপর ভিত্তি করে মুসলমানদের প্রতি শ্রী শ্রী রবি শংকরের উক্ত নসীহত সরাসরি তার মুখে শুনতে ইন্টারনেটের ইউটিউবের নিম্নোক্ত লিঙ্কে লগইন করুন (উল্লেখ্য যে, এ ভিডিওটির ৪২ মিনিট ২২ সেকেন্ড থেকে তার সেই মন্তব্য শুনতে পাবেন) —
ডাক্তার জাকির নায়েকের বক্তব্যের ভিত্তিতে মুসলমানদের নিকট বেদের প্রতি সম্মান জানানোর ব্যাপারে প্রদ্ত্ত শ্রী শ্রী রবি শংকরের উক্ত নসীহতটি বাংলা-ডাবিংয়ে শুনতে পাবেন নিম্নোক্ত ইউটিউব লিঙ্কে (উল্লেখ্য যে, এ ভিডিওটির ২ ঘন্টা ১৬ মিনিট ৫ সেকেন্ড থেকে তার সেই নসীহতটি রয়েছে)
–
নাউযুবিল্লাহ। কত মারাত্মক ফিতনা! এভাবে ডাক্তার জাকির নায়েক মুসলমানদের মধ্যে ঈমানধ্বংসী ফিতনার সৃষ্টি করেছেন। যা ক্রমশ ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে।
ডাক্তার জাকির নায়েক কী করে বেদকে আল্লাহর নাযিলকৃত কিতাব হতে পারে বলেছেন এবং হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলো, বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থগুলো, পারসি ধর্মগ্রন্থ এগুলো আল্লাহর বাণী হতে পারে বলে উল্লেখ করেছেন? অথচ এ ব্যাপারে কুরআন ও হাদীসে কোন কিছু বলা হয়নি। সুতরাং যে কিতাবকে আল্লাহর কালাম বলে পবিত্র কুরআন ও হাদীসে নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি, তাকে আল্লাহর কালাম বলে বিশ্বাস করা বা আল্লাহর কালাম হতে পারে বলা ঈমানধ্বংসী কাজ বৈকি।
(প্রমাণ : আল-কুরআন, সূরাহ আলে ইমরান, আয়াত নং ৭৮/ তাফসীরে ইবনে কাসীর, ২য় খণ্ড, ২৯ পৃষ্ঠা/ সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৪১৪/ মিরকাত, ১ম খণ্ড, ২৩৪ পৃষ্ঠা)
তাই ডাক্তার জাকির নায়েকের গোমরাহী পথ থেকে দূরে থাকা সকল মুসলমানের কর্তব্য। যাতে কেউ তার এ ধরনের কুফরী লেকচারে বিভ্রান্ত হয়ে ঈমানহারা না হন।
আপনাদের বুঝার ভুল। ভালো করে বুঝার চেস্টা করুন।
না বুঝে কাওকে অপবাদ দিবেন না। উনি কি বলতে চাচ্ছেন তা বঝেন নি