——————
সন্তান-সন্তুতি দানের ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহ তা’আলার। আল্লাহ যাকে সন্তান দান করার ইচ্ছে করেন, কোন প্রতিরোধ বা নিরোধই তার কাজে আসে না । আর আল্লাহ যাকে সন্তান দান করার ইচ্ছে করেন না, সবকিছু পারফেক্ট থাকার পরেও সে সন্তান লাভে ব্যর্থ হয়।
আল্লাহ তাআলা বলেন, يَهَبُ لِمَن يَشَآءُ إِنَٰثٗا وَيَهَبُ لِمَن يَشَآءُ ٱلذُّكُورَ أَوۡ يُزَوِّجُهُمۡ ذُكۡرَانٗا وَإِنَٰثٗاۖ وَيَجۡعَلُ مَن يَشَآءُ عَقِيمًاۚ ‘আল্লাহ যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান দান করেন, যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন অথবা ছেলে-মেয়ে উভয়ই দান করেন। আবার যাকে ইচ্ছে বন্ধ্যা করেন।’ (সূরা আশ্শূরা ৫০)
এ আয়াত থেকে আমরা বুঝতে পারি, সন্তান যেমন আল্লাহর ইচ্ছেতে হয়, তেমনই সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে তাও আল্লাহর ইচ্ছেতে নির্ধারণ হয়। মায়ের গর্ভে যে রাসায়নিক বিক্রিয়ার কথা আমরা জানি, ওটাই মূলত আল্লাহর ইচ্ছেতে হয়ে থাকে।
পুত্র সন্তান লাভ করতে অনেককে অনেক রকমের তাবিজ ব্যবহার করতে বা দুয়া পড়তে দেখা যায়। উক্ত দুআ ও তাবীজে যদি কোন প্রকার শিরকী কথাবার্তা না থাকে, তাহলে কোন সমস্যা নেই। সেই সাথে লক্ষ রাখতে হবে, কুরআনের আয়াতের যেন কোন অসম্মান না হয়।
এ আকিদাও স্মরণ রাখা আবশ্যক যে সব কিছু করার ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর হাতে। ছেলে মেয়ে উভয়ই আল্লাহর দান। মূলত নেক সন্তানই কাম্য হওয়া উচিত। ছেলে মেয়ে যা-ই হোক, যদি নেক সন্তান হয়, তাহলেই সফলতা। তাই ছেলে সন্তানের জন্য হাহাকার করার কিছু নেই।
হাকীমুল উম্মত আশরাফ আলী থানবী রহঃ সংকলিত “আমালে কুরআনী” নামক বইটিতে বেশ কিছু আমল উল্লেখ আছে। এর বাংলাও হয়েছে মনে হয়।
সন্তান হবার আমল উক্ত কিতাবে দেয়া আছে। তা দেখে আমল করা যেতে পারে। আরও বেশ কিছু আমল আমরা তুলে ধরছি। যেমন-
১) যে ব্যক্তি স্ত্রী সহবাসের পূর্বে আল্লাহ তাআলার পবিত্র গুণবাচক নাম (اَلْمُتَكَبِّرُ) ‘আল-মুতাকাব্বিরু’- ১০ বার পাঠ করবে; আল্লাহ তাআলা তাকে সৎ নেককার ছেলে সন্তান দান করবেন ইনশাআল্লাহ।
২) সূরা আম্বিয়ার ৮৯ নং আয়াতের এ অংশ প্রতি নামাযের পর তিনবার তিলাওয়াত করবেন। ইনশাআল্লাহ পুত্র সন্তান হবে।
رَبِّ لَا تَذَرْنِي فَرْدًا وَأَنتَ خَيْرُ الْوَارِثِينَ [٢١:٨٩
বাংলা উচ্চারণঃ রব্বি লা তাজারনী ফারদান ওয়া আংতা খইরুল ওয়ারিছীন। অর্থ- ‘হে আমার পালনকর্তা আমাকে সন্তানহীন ছেড়ে দেবেন না। আর আপনিই তো সর্বোত্তম ওয়ারিস।’
৩) সহবাসের সময় দোয়া পড়ুন; দোয়াটি এই-
بِسْمِ اللَّهِ ، اللَّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ ، وَجَنِّبْ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا
‘হে আল্লাহ! আপনার নামে শুরু করছি, আপনি আমাদের নিকট হতে শয়তানকে দূরে রাখুন। আমাদের এ মিলনের ফলে যে সন্তান দান করবেন, তা হতেও শয়তানকে দূরে রাখুন।’
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ আপন স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হওয়ার ইচ্ছা করে তখন উক্ত দোয়া পড়ে যেন মিলিত হয়। এ মিলনে যদি তাদের কিসমতে কোনো সন্তান আসে, সে সন্তানকে শয়তান কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। (বুখারি ৬৩৮৮)
৪) প্রত্যেক ফরয-নামাজের পর سبحان الله (সুবহানাল্লাহ) ৭০ বার এবং أستغفر الله ( আস্তাগফিরুল্লাহ) ৭০ বার পড়বেন। তারপর তেলাওয়াত করবেন সূরা নূহ-এর ১০,১১, ১২ নং আয়াত অর্থাৎ,
اسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ إِنَّهُ كَانَ غَفَّارًا يُرْسِلِ السَّمَاء عَلَيْكُم مِّدْرَارًا وَيُمْدِدْكُمْ بِأَمْوَالٍ وَبَنِينَ وَيَجْعَل لَّكُمْ جَنَّاتٍ وَيَجْعَل لَّكُمْ أَنْهَارًا
‘তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের উপর অজস্র বৃষ্টিধারা ছেড়ে দিবেন, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ত তি বাড়িয়ে দিবেন, তোমাদের জন্যে উদ্যান স্থাপন করবেন এবং তোমাদের জন্যে নদীনালা প্রবাহিত করবেন।’
এ আয়াতগুলো তেলাওয়াত করবেন। আমলটি তিন দিন করবেন। তৃতীয় দিনে স্ত্রী-সহবাস করবেন। ইনশা-আল্লাহ আল্লাহ আপনাকে নেক সন্তান দান করবেন।’
৫) সুরা সাফফাতে এসেছে, বৃদ্ধ বয়সে ইবরাহিম আ. আল্লাহ তাআলার নিকট দোয়া করেছিলেন সৎ পুত্র সন্তানের জন্য। আল্লাহ তাআলা তার দোয়া কবুল করলেন। তাঁকে নেক পুত্র সন্তান দান করলেন। এর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা শিক্ষা দিয়েছেন, যাতে বান্দা এ দোয়ার মাধ্যমে তাঁর নিকট সন্তান কামনা করতে পারে। দোয়াটি এই- رَبِّ هَبْ لِي مِنَ الصَّالِحِينَ উচ্চারণ- রব্বি হাব লী মিনাস স_লিহীন। অর্থ- ‘হে আমার পরওয়ারদেগার! আমাকে এক সৎপুত্র দান করুন।’ (সূরা সাফফাত ১০০)
৬) প্রত্যেক নামাযের পর এই আয়াতখানা পড়ুন رَبِّ هَبْ لِي مِن لَّدُنْكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً إِنَّكَ سَمِيعُ الدُّعَاء । উচ্চারণ- রব্বি হাব লী মিল্লাদুংকা যুররিয়্যাতাং ত্বইয়িবাহ, ইন্নাকা সামী’উদ দু’আ। অর্থ- হে, আমার পালনকর্তা! আপনার নিকট থেকে আমাকে পুত-পবিত্র সন্তান দান করুন। নিশ্চয়ই আপনি প্রার্থনা শ্রবণকারী। (সূরা আল-ইমরান ৩৮)
৭) ৪০দিন পর্যন্ত একাধারে ৪০ বার আল্লাহ তাআলার পবিত্র গুণবাচক নাম (اَلْاَوَّلُ) ‘আল-আউয়ালু’ পাঠ করতে হবে।
আল্লাহ তাআলা সকলের মনের নেক বাসনা পূরণ করেন। আমীন, ইয়া রাব্বাল আলামীন
মাসিক আদর্শ নারীর ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের নিয়মাবলি
https://adarshanari.com/featured-2/7150/
মাসিক আদর্শ নারী পরিচালিত মেয়েদের জন্যে ব্যতিক্রমধর্মী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মাদরাসা খাতুনে জান্নাত এর ফেসবুক পেইজ
https://www.facebook.com/MadrasaKhatuneJannat
সাইটের ফেসবুক পেইজ
https://www.facebook.com/adarshanari.web
অফিসিয়াল ফেসবুক গ্রুপ
https://www.facebook.com/groups/adarsha.nari
তাহলে,মেয়ে সন্তান লাভের আমল কি?
স্পেশাল আমল নেই।উক্ত আমলগুলিই করবেন এবং মেয়ে সন্তানের নিয়ত করবেন।