করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে মুসলিম উম্মাহের উদ্দেশে বাইতুল্লাহর প্রাঙ্গণে মসজিদুল হারামের খতিব আব্দুর রহমান সুদাইসি বয়ান পেশ করেন। রবিবার এশার নামাজের পর কাবা চত্বরে তিনি এ বয়ান দেন।
বয়ানে তিনি আল্লাহর প্রশংসা ও রাসূল সা. এর প্রতি দরূদ শরিফ পাঠ করার পর উপস্থিত লোকদের উদ্দেশে বলেন, হে আমার মুসলমান ভাইয়েরা, আপনারা সকলেই জানেন বিশ্বব্যাপী এক ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। এতে কোনও সন্দেহ নেই যে, এ ভাইরাস আল্লাহর হিকমতেই কার্যকর হয় এবং তাঁর কুদরতেই উপনীত হয়। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি পরীক্ষা। যাতে বান্দা আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করে।
তিনি বলেন, মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, “অবশ্যই আমি তোমাদের পরীক্ষা করবো কিছুটা ভয়,ক্ষুধা, সম্পদ ও জীবনের ক্ষতির মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও ধৈর্যশীলদেরকে।” সুতরাং বান্দার জন্য আল্লাহর সাথে সম্পর্ক রাখা অত্যন্ত জরুরী। আল্লাহই কেবল কল্যাণ আনয়নকারী ও অকল্যাণ দূরীভূতকারী।
মানুষের জন্য উচিত নয় যে, আল্লাহ প্রতি আস্থাহীন হওয়া। বরং আবশ্যক হলো আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করা, তাঁর ওপর ভরসা রাখা ও দোয়া করা। যাতে আল্লাহ এ ভাইরাস ও মহামারি থেকে মুসলমানদের হেফাজত করেন।
হারাম শরিফের খতিব আরো বলেন, সৌদি সরকার হারামাইন শরিফাইনে সাময়িকভাবে কিছু দিনের জন্য ওমরা স্থগিত রাখা ও রাতে মাতাফ বন্ধ রাখাসহ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। যাতে এদেশ (সৌদিআরব) এবং অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোতে এ ভাইরাস ওমরার মাধ্যমে না ছড়াতে পারে।
তিনি বলেন, এতে কোনও সন্দেহ নেই যে, সৌদি সরকারের এ পদক্ষেপটি হারামাইন শরিফাইন এবং উমরাহকারী ও পরিদর্শনকারীদের সুরক্ষার জন্য জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সাথে সাথে আমাদেরকেও আল্লাহর ওপর ভরসা করতে হবে এবং তাঁর প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে। অস্থির, দুশ্চিন্তা ও ভয় না করে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও তাঁর রহমতের আশা করতে হবে।
সৌদি সরকার কর্তৃক সাময়িকভাবে ওমরাহ স্থগিত রাখাকে সমর্থন করে তিনি বলেন, সৌদি সরকারের এ পদক্ষেপ শরীয়ত সম্মত। কেননা মহানবী সা. বলেছেন,” তোমরা উপকরণ গ্রহণ করো”। অন্য এক হাদিসে মহানবী সা.বলেছেন,যদি তোমরা কোনও স্থানের মহামারি সম্পর্কে অবগত হও তাহলে সেখানে প্রবেশ করবে না। আর যদি তা ছড়িয়ে পড়ে এবং তোমরা সেখানে থাকো তাহলে সেখান থেকে বের হবে না।” অপর এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, “তোমরা কুষ্ঠরোগী থেকে পলায়ন করো, যেমন সিংহ থেকে পলায়ন করো।
সৌদি সরকার এ পদক্ষেপ যেহেতু হারামাইন শরিফাইনকে ভাইরাস থেকে নিরাপদ রাখা, আল্লাহর মেহমানদের সুস্থতা ও আবহাওয়া দূষণমুক্ত রাখতে গ্রহণ করা হয়েছে। তাই কিছুদিন উমরাহ স্থগিত থাকার কারণে তিনি মুসলমানদের দুশ্চিন্তা ও হতাশ হতে নিষেধ করেছেন।
শায়েখ সুদাইস এরপর ভাইরাস ও মহামারি থেকে সৌদিসহ সকল মুসলিমদেশের হেফাজতের জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া করেন। (সংক্ষেপিত)
অনুবাদ : আব্দুর রহমান শরীয়তপুরী