চলচ্চিত্রের পরিচিত মুখ মিশা সওদাগর তাবলীগের ওসীলায় হিদায়াতের পথে আসছেন। তিনি মুফতী উসামা ও মাওলানা ইয়াহইয়া মাদানীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় তাবলীগে কিছুদিন সময় লাগান এবং এতে দ্বীনের বুুঝ হাসিল করে নিজেকে দ্বীনের পথে নিয়ে আসছেন। এমনকি স্ত্রীকেও তিনি দ্বীনের পথে এনে মহিলা মাদরাসার তা‘লীমে নিযুক্ত করেছেন।
বিশেষভাবে গত ২০১৭ সনের হজ্বের সফরে মিশা সওদাগর মদীনায় তাবলীগের বিশিষ্ট মুরব্বী মাওলানা রূহুল কিস্ত (রহ.)-এর সাহেবজাদা ও মাসিক আদর্শ নারী সম্পাদক মুফতী আবুল হাসান শামসাবাদীর জামাতা মদীনা-প্রবাসী মাওলানা ইয়াহইয়া ইবনে রূহুল কিস্ত মাদানীর আন্তরিক আতিথেয়তায় দাওয়াত ও তাবলীগের সাথে জুড়েন। এরপর সম্প্রতি বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে মাওলানা ইয়াহইয়া ইবনে রূহুল কিস্ত মাদানী বাংলাদেশে আসেন এবং মিশা সওদাগরকে বিভিন্নভাবে দ্বীনের পথে তাশকীল করেন। এ পর্যায়ে তিনি মিশা সওদাগরকে টঙ্গী ইজতেমায় আরব জামা‘আতের খিত্তায় আপ্যায়ন করেন এবং দ্বীনের পথে উদ্বুদ্ধ করেন। এ ছাড়াও মাওলানা ইয়াহইয়া মাদানী স্বীয় মিরপুরের বাসভবনে আরব জামা‘আতের সাথে মিশা সওদাগরকে দাওয়াত দিয়ে তাদের নেক সাহচর্য প্রদান করেন। এভাবে বিভিন্ন দ্বীনী প্রোগামে মিশা সওদাগরকে শরীক করিয়ে তিনি তাকে পুরোপুরি দ্বীনের পথে আনার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
অধিকন্তু মাওলানা ইয়াহইয়া ইবনে রূহুল কিস্ত মাদানী তাশকীল করে মিশা সওদাগরকে অবিলম্বে উমরাহ উপলক্ষে মক্কা শরীফ ও মদীনা মুনাওয়ারায় নিয়ে পুরাপুরি তাওবা করিয়ে সম্পূর্ণরূপে দ্বীনের পথে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। এ ধরনের আলোচিত ব্যক্তিদের হিদায়াতের দ্বারা তাদের ভক্ত-অনুরক্তরা হিদায়াতে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত হয়। এ জন্য এ ধরনের লোকদের হিদায়াতে তাবলীগের মধ্যে বিশেষ মেহনত চলে।
সেই ধারায় দ্বীনের পথে উদ্বুদ্ধ করার অংশ হিসেবে কুরআনের মাধুর্য ও ইসলামের সুস্থ সংস্কৃতির প্রদর্শনে গত ২ ফেব্রুয়ারী বসু্ন্ধরায় অনুষ্ঠিত কলরব-এর যুগপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আন্তর্জাতিক কেরাত ও নাশিদ মাহফিলে মাওলানা ইয়াহইয়া ইবনে রূহুল কিস্ত মাদানী বিশেষভাবে দাওয়াত দিয়ে মিশা সওদাগরকে নিয়ে যান। মাহফিলের শেষের দিকে মিশা সওদাগরকে স্টেজে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সে সময় মাওলানা ইয়াহইয়া ইবনে রূহুল কিস্ত মাদানী মিশা সওদাগরকে স্টেজে নিয়ে যান। (স্টেজের দৃশ্যপটে কলরবের প্রধান পরিচালক জনাব রশিদ আহমদ ফেরদাউসের ডানে দাঁড়ানো মাওলানা ইয়াহইয়া ইবনে রূহুল কিস্ত মাদানী।)
কলরবের উক্ত মাহফিলে মিশা সওদাগর যে অভিব্যক্তি ব্যক্ত করেছেন, তাতে তার দ্বীনের পথে ফিরে আসার অনেক কথাই ফুটে উঠেছে। সেখানে তিনি নিজের ধর্ম পালন ও জীবনাচরণ নিয়ে কথা বলেন।
নিজের ধর্মমূলক জীবনাচারের কথা উল্লেখ করে মিশা সওদাগর বলেন, আমি যদিও অভিনয় করি, আমার কলবে সারাক্ষণ আল্লাহর ভয় থাকে। আমার ৫২ বছর বয়স। জেনে খুশি হবেন, ৫২ বছরের জীবনে আমি একটা সিগারেটের শলাকাও ধরিনি।
তিনি বলেন, ২০০৭ সালে হজ্ব করেছি। তাবলীগের বদৌলতে দ্বীনের পথে ফিরে আসায় মদীনার স্মৃতিতে মাওলানা ইয়াহইয়া ইবনে রূহুল কিস্ত মাদানীর কথাও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি প্রাত্যহিক ধর্মকর্ম সম্পর্কে বলেন, আমি শুধু ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি না, ৬ ওয়াক্ত পড়ি। নিয়মিত তাহাজ্জুদ পড়ি। কখনো মিস করি না।
কুরআনের অনুষ্ঠানের কথা টেনে তিনি বলেন, আমরা যে যাই করি না কেন, দলমত নির্বিশেষে সবাইকে কুরআনের দাওয়াত পৌঁছাতে হবে। সবাইকে আল্লাহর কুরআনের বাণী ছড়িয়ে দিতে হবে।
মিশা সওদাগর বলেন, আমি অবশ্যই মুসলমান। আমি ধার্মিক। ঈমান নিয়ে মরতে চাই। আমি আল্লাহ তা‘আলাকে বলেছি, আমার অভিনয় যদি ভুল হয়, তাহলে আমাকে জায়েজ পথে নিয়ে আসুন। এমন কিছু করি না যাতে আমার পিতা-মাতার ধর্ম অসম্মানিত হয়।
তিনি বলেন, আমি তিনদিন তাবলিগে যাই। দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন সঠিক পথে রাখেন। সারাজীবন যেন তাবলীগে লেগে থাকতে পারি। আমি অভিনয় করতেও চাই না।
অনুষ্ঠানে সকলে মিশা সওদাগরের পরিপূর্ণ হিদায়াত কামনা করেন এবং এ জন্য দু‘আ করেন।
আল্লাহ তা‘আলা তাকেসহ সকল পথভুলা মানুষকে দ্বীনের সহীহ পথে পরিচালিত করুন। আমীন।