মাযহাব মানা ওয়াজিব কেন?

মুফতি লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
—————————

মাযহাব ছাড়া পূর্ণ দ্বীন মানা সম্ভব নয়, তাই চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা আবশ্যক।

যেমন দুই রাকাত নামায মাযহাবের অনুসরণ ছাড়া আদায় করা অসম্ভব।

উদাহরণত :

১) রুকু করা ফরজ কুরআন দ্বারা প্রমাণিত।

২) রুকুর তাসবীহ পড়া সুন্নত হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।

৩) রুকুতে গমনের সময় ইমাম জোরে তাকবীর বলে আর মুসল্লি আস্তে তাকবীর বলে। এ মাসআলা কুরআন ও হাদীসের কোথাও নেই। অথচ তা নামাযের মাসআলা। ইমাম যে জোরে তাকবীর বলে, আর মুসল্লি সর্বদা আস্তে আস্তেই তাকবীর বলে এভাবে আমল করার দ্বারা নামায শুদ্ধ হচ্ছে কি না? তা কুরআন ও হাদীসের কোথাও নেই।

এর সমাধান মাযহাবের ইমামদের ইজমা তথা ঐক্যমত্য এর দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে।

৪) রুকুতে গিয়ে যদি কেউ ভুল তাকবীর না বলে, রুকুর তাসবীহের বদলে কেউ সেজদার তাসবীহ বলে ফেলল, তাশাহহুদের বদলে সূরা ফাতিহা পড়ে ফেললো, জোরে কিরাতের স্থলে আস্তে কিরাত পড়ল, আস্তের স্থলে জোরে পড়ল এসব মাসআলার সমাধান ছাড়া তো সহীহ পদ্ধতিতে নামায পড়া সম্ভব নয়।

আর এসব মাসআলাসহ নামাযের অসংখ্য মাসায়েলের সমাধান না কুরআন দ্বারা প্রমাণিত, না হাদীস দ্বারা প্রমাণিত বরং এসব সমাধান মাযহাবের ইমামগণ কুরআন ও হাদীসের গভীর থেকে মূলনীতি বের করে এর আলোকে উদ্ভাবন করেছেন। আর তাদের উদ্ভাবিত সেসব মাসআলার নামই হল মাযহাব।

এইতো গেল শুধু নামাযের একটি ছোট্ট অংশের উদাহরণ। এমনিভাবে মানুষের জীবন ঘনিষ্ঠ এমন অসংখ্য মাসআলার উপমা পেশ করা যাবে, যার সরাসরি কোন সমাধান কুরআন ও হাদীসে নেই। কিংবা অনেক স্থানেই বাহ্যিক বিরোধপূর্ণ।

তাই মাযহাব মানা ছাড়া সাধারণ মুসলমানদের কোন গত্যন্তর নেই। অন্তত দুই রাকাতও পূর্ণ করে পড়ার জন্য প্রতিটি মুসলমান মাযহাবের প্রতি মুখাপেক্ষী।

তাই যেহেতু মাযহাব ছাড়া দুই রাকাত নামাযও পড়া যায় না, পূর্ণ দ্বীন মানা তো বহু দূরের কথা, তাই গায়রে মুজতাহিদ ব্যক্তিদের জন্য মাযহাব মানা ওয়াজিব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *