বর্তমান পরিস্থিতিতে মাজার ভাঙ্গা জায়েজ নেই

মুফতি আফফান বিন শরফুদ্দীন


বর্তমান পরিস্থিতিতে গণহারে মাযার ভাঙা নবী সা. এর আদর্শের সাথে সাংঘর্ষিক ও জায়েজ নেই। প্রয়োজনে পাহারা দেয়া আবশ্যক।

রাসূলুল্লাহ সা. পূর্ণ ইসলামী শাসন ও নিরংকুশ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার আগে সাহাবাদেরকে ঢালাওভাবে মক্কার মূর্তি ভাঙতে উৎসাহিত করেননি। বরং তিনি তার জীবদ্দশায় সাধারণত শুধুমাত্র সেসব অঞ্চলের মূর্তি ও শিরকের আখড়াগুলো ভাঙার নির্দেশ দিয়েছেন যেখানে তিনি বা তার অনুসারীরা পূর্ণ ক্ষমতা অর্জন করেছেন।

পূর্ণ কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা হাসিলের আগেই মূর্তি ভাঙতে গেলে সেটা আরবের মুসলমানদের জন্য আত্নঘাতী হতো। শুদ্ধির বদলে বিপর্যয় তৈরী হতো। ইসলামের জন্য তাতে লাভের চেয়ে ক্ষতি হতো বেশি।

বাংলাদেশে যারা এখন ‘শিরকের আখড়া’ হওয়ার অযুহাতে মহাসমারোহে মাজার ভেঙে পরিস্থিতি নিজেদের প্রতিকূলে এবং আন্তর্জাতিক অমুসলিম চক্রগুলোর অনুকূলে নিয়ে যাওয়ার আয়োজন করছেন তাদের জন্য নবী সা. এর এই কর্মপদ্ধতিতে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। সাধারণ অবস্থায় তামকীন প্রতিষ্ঠার আগে পেশি শক্তির লড়াইয়ে নামা যে ইসলামে কাম্য না, তা রাসূলের সুন্নাহ ও খোলাফায়ে রাশেদার কর্মপদ্ধতি থেকে স্পষ্ট। তাই ইন্তেযামী জরুরতের কারনে এখন বাংলাদেশে গনহারে মাযার ভাঙা না জায়েজ। প্রয়োজনে পাহারা দেয়া আবশ্যক। ধীরে ধীরে সুকৌশলে মাযারগুলোকে শিরকমুক্ত করার ফিকির করুন। এটাই যথেষ্ট।

এখন দলমত নির্বিশেষে এই দেশের বাসিন্দারা সবাই কৌশলগত কারনে একতাবদ্ধ হয়ে বহিঃশত্রুকে মোকাবিলা করার সময়। এখন বাঙালীরা নিজেদের মধ্যকার ধর্মীয়/বিশ্বাসগত/আদর্শিক/দলীয়/স্বার্থগত লড়াইয়ে জড়িয়ে শতধা বিভক্ত হয়ে আন্তর্জাতিক অমুসলিম শক্তিগুলোকে নাক গলানোর সুযোগ করে দেয়ার আসলেই কোন মানে নেই। একান্ত অবুঝ না হলে, আবেগের বদলে বিবেক দিয়ে ভাবার মতো নূন্যতম ম্যাচিউরিটি থাকলে এই সাধারণ বিষয়টা আপনাদের সবারই অনুভব করার কথা। আপনারা মাঠে নেমেই যেভাবে আসল শত্রুর কথা ভুলে গিয়ে নিজেদের পোস্টে গোল করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তাতে করে এদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠা আরো পঞ্চাশ বছর পেছাবে খুব শীঘ্রই। আপনারা হয়তো এই ভূমিকে পূর্ব তিমুর বানিয়ে এরপর ক্ষান্ত হবেন।

اللهم احفظنا من الجاهلين و المنافقين، و احفظنا من امارة الصبيان و حمقاء المعاصرين.

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *