কলেজে এবং কোচিং এ ফিন্যান্স সাবজেক্ট পড়ানো জায়েজ কিনা?

প্রশ্নোত্তর বিভাগCategory: ধর্মীয় জিজ্ঞাসাকলেজে এবং কোচিং এ ফিন্যান্স সাবজেক্ট পড়ানো জায়েজ কিনা?

আমাসআলা জিজ্ঞাসাআমি একটি প্রাইভেট কলেজে \"ফিন্যান্স\" সাবজেক্টের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছি। এখানে আমাকে \"ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা\" এই ৩টি বিষয় শিক্ষার্থীদেরকে পড়াতে হয়। তাছাড়া কলেজে শিক্ষকতার পাশাপাশি অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের জন্য কলেজের বাহিরে কোচিং/প্রাইভেট পড়াতে হয়।ফিন্যান্সফিন্যান্স বা অর্থায়ন সাবজেক্টে সুদের হিসাবের অংক করাতে হয়। এই অংশে সুদের হিসাব ছাড়াও অধ্যায়গুলোতে প্রাতিষ্ঠানিক/ব্যবসায় সংক্রান্ত আরো অন্যান্য বিষয়ও এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে সুদের হিসাবের অংশ প্রায় ৬৫-৭০%।ব্যাংকিংব্যাংকিং অংশের প্রায় ৯০% সাধারণ ব্যাংকিং নিয়ে আলোচনা। এই ৯০% এর মধ্যে কোন সুদের আলোচনা নাই। বাকি প্রায় ১০% এ ব্যাংক ঋণ নিয়ে আলোচনা এবং এই অংশে সুদ নিয়ে কিছুটা আলোচনা আছে।বিমাবিমা অংশে বিমা সম্পর্কে মৌলিক ধারণা এবং বিভিন্ন প্রকারের বিমা নিয়ে আলোচনা আছে।আমি শিক্ষার্থীদেরকে পড়ানোর সময় \"সুদ, ব্যাংক ও বিমা\" নিয়ে শরীয়তের বিধানগুলো সবসময় বলার চেষ্টা করি। এতে সত্যিকার অর্থেই শিক্ষার্থীরা অনেক উপকৃত হচ্ছে।আমি শিক্ষার্থীদেরকে প্রায়ই বলে থাকি যে, বাস্তব জীবনে তুমি চাও আর না চাও, \"সুদ, ব্যাংক ও বিমা\" এই বিষয়গুলো তোমার জীবনের সাথে অনেক বেশি জড়িত। জীবনে চলার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগতভাবে বা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অথবা কর্মজীবনে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তোমাকে \"সুদ, ব্যাংক ও বিমা\" এর সম্মুখীন অবশ্যই হতে হবে। তাছাড়া আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বেই এখন পুঁজিবাদী অর্থনীতিরই প্রয়োগ চলছে। তাই \"সুদ, ব্যাংক ও বিমা\" সম্পর্কে শরীয়তের সকল বিধান আমাদেরকে ভালভাবে জেনে কোন ক্ষেত্রে কোনটা গ্রহণীয় তা গ্রহণ করতে হবে এবং কোন ক্ষেত্রে কোনটা বর্জনীয় তা অবশ্যই বর্জন করতে হবে।এভাবে \"সুদ, ব্যাংক ও বিমা\" সম্পর্কে শিক্ষার্থীদেরকে বোঝানোর ফলে প্রত্যেক বছর শত শত শিক্ষার্থী \"সুদ, ব্যাংক ও বিমা\" সম্পর্কে জেনে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করার সুযোগ পাচ্ছে। শিক্ষার্থীরাও এভাবে শরীয়তের বিধানগুলো জানতে পেরে অনেক খুশি হয়।উল্লেখ্য যে, আমাদের বাংলাদেশের স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিন্যান্স সাবজেক্টটি পড়ানো হয়। যদি স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদেরকে \"সুদ, ব্যাংক ও বিমা\" এর শরীয়তের বিধানগুলো ভালো করে বুঝাতো, তাহলে প্রত্যেক বছর লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী \"সুদ, ব্যাংক ও বিমা\" সম্পর্কে শরীয়তের বিধানগুলো ভাল করে জানতে পারতো। এর ফলে নিজেও মানতে পারতো এবং তার পরিবারকে কিছুটা হলেও মানাতে পারতো। যেহেতু এক একজন শিক্ষার্থী মানে এক একটা পরিবার। তাছাড়া প্রতি বছর স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী \"ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা\" পড়ে শরিয়তের বিধান না জানার কারণে বাস্তব জীবনে এর সাথে গভীরভাবে জড়িয়ে পড়ছে এবং কঠিন গুনাহগার হচ্ছে।আমি আমার শিক্ষকতার মাধ্যমে সব সময় এই ভূমিকাটিই তীব্রভাবে পালন করে সকল শিক্ষার্থীদেরকে \"সুদ, ব্যাংক ও বিমা\" নিয়ে সচেতন করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। এর ফলে অনেক শিক্ষার্থীই জীবনে সুদের সাথে না জড়ানোর নিয়ত করছে এবং ব্যাংক ও বিমার ব্যাপারেও শরিয়তের বিধান মেনে চলার নিয়ত করছে।প্রশ্ন-কউপরে বর্ণিত অবস্থায় আমি কলেজে চাকরি করলেঃ১. সুদের সাথে জড়িত ৬ ব্যক্তির অন্তর্ভুক্ত হবো কিনা?২. আমার কলেজে চাকরি করা জায়েজ হবে কিনা?৩. আমি কোনো না কোনোভাবে গুনাহগার হবো কিনা?৪. যদি জায়েজ হয়েও থাকে, তারপরও এই বিষয় পড়ানো বাদ দিয়ে অন্য কোনভাবে কিছু করে রিজিকের জন্য হালালভাবে অর্থ উপার্জন করা উত্তম হবে কিনা?প্রশ্ন-খউপরে বর্ণিত অবস্থায় চাকরির পাশাপাশি আমি প্রাইভেট/কোচিং করিয়ে অর্থ উপার্জন করলেঃ১. সুদের সাথে জড়িত ৬ ব্যক্তির অন্তর্ভুক্ত হবো কিনা?২. জায়েজ হবে কিনা?৩. আমি কোনো না কোনোভাবে গুনাহগার হবো কিনা?৪. যদি হালাল হয়েও থাকে, তারপরও অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের জন্য কোচিং/প্রাইভেট না পড়িয়ে অন্য কিছু করে অর্থ উপার্জন করে উত্তম হবে কিনা?মোহাম্মদ ওসমান গনিosman.dic.fbi@gmail.comcomcomcomমোবাইলঃ 01912-784370